প্রতীকী ছবি।
ফিরে পাওয়ার আশাটুকু ছিল এত দিন। তবে শনিবার ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর বিবৃতি মুছে দিল সেই সম্ভাবনা।
কমপক্ষে ৫৩ জন নাবিককে নিয়ে গত বুধবার থেকে নিখোঁজ ডুবোজাহাজটি তলিয়ে গিয়েছে বলেই ঘোষণা করা হল নৌবাহিনীর তরফে। মনে করা হচ্ছে, বালির উত্তর উপকূল থেকে যাত্রা শুরু করা ‘কেআরআই নাঙ্গালা ৪০২’ নামে ওই ডুবোজাহাজটি তলিয়ে যাওয়ার আগে সেটিতে চিড় ধরে। যার জেরে দু’ভাগ হয়ে যায় সেটি।
যে জায়গা থেকে ডুবোজাহাজটি সমুদ্রের গভীরে নেমেছিল সেই অঞ্চলটিতে জলের উপরে তেলের পাতলা স্তর ভাসতে দেখা যায়। ডুবোজাহাজটি থেকেই সেটি বেরিয়েছে বলে দাবি নৌবাহিনীর। পাশাপাশি ওই অঞ্চলের আশপাশ থেকেই সম্প্রতি বেশ কয়েকটি জিনিস উদ্ধার হয় যা ডুবোজাহাজটির ধ্বংসাবশেষ বলে দাবি নৌ-আধিকারিকদের। এই সূত্রেই ডুবোজাহাজটির ভেঙে তলিয়ে যাওয়া নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত তাঁরা।
এখনও পর্যন্ত ডুবোজাহাজটির নিখোঁজ ৫৩ জন নাবিকের মধ্যে কারও দেহ উদ্ধার করা যায়নি। তবে আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, শনিবারের মধ্যেই নাবিকদের অক্সিজেনের জোগান ফুরিয়ে যাওয়ার কথা। ফলে তাঁদের কারও বেঁচে থাকার আশা
খুবই ক্ষীণ।
জলের নীচে নামার পরে কোনও কারণে ওই ডুবোজাহাজটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছিল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও এই তত্ত্ব উড়িয়ে দিচ্ছে নৌবাহিনী। এক নৌ-আধিকারিকের কথায়, ‘‘৩০০ মিটার থেকে ৫০০ মিটার জলের নীচে তলিয়ে যাওয়ার সময়ে আস্তে আস্তে চিড় ধরে জাহাজটির কয়েকটি অংশে। বিস্ফোরণ হলে সেই শব্দ সোনার তরঙ্গের মাধ্যমে আমাদের কাছে পৌঁছে যেত।’’
ডুবোজাহাজটি কমপক্ষে ৬০০ থেকে ৭০০ মিটার (২০০০-২৩০০ ফুট) গভীরে তলিয়ে গিয়েছে বলে ধারণা নৌবাহিনীর। সেটির ক্ষমতা ছিল মাত্র ২০০ মিটার (৬৫৫ ফুট) গভীরে যাওয়ার। এর বেশি নীচে নামলে জলের চাপ সামলানোর ক্ষমতা ছিল না এই ডুবোজাহাজের।
তবে কী করে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে এখনও ধন্দে নৌ-আধিকারিকেরা। তাঁদের ধারণা, বৈদুতিক গোলযোগের কারণেই হয়তো বিপদ বোঝার পরে ডুবোজাহাজটিকে উপরে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন চালকেরা।
নৌ-আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, গত দু’দিনে বাহিনীর উদ্ধারকারীদের হাতে একটি টর্পেডো স্ট্রেটনার, ডুবোজাহাজটির পেরিস্কোপ সচল রাখতে ব্যবহৃত গ্রিসের একটি বোতল এবং নাবিকদের ব্যবহৃত প্রার্থনার আসনের টুকরো মিলেছে। পাশাপাশি একটি কুল্যান্ট পাইপের অংশও পাওয়া গিয়েছে, যেটি ২০১২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এই ডুবো- জাহাজটিতে বসানো হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া ধ্বংসাবশেষ বিশ্লেষণ করে দেখবে ইন্দোনেশিয়া-সহ একাধিক দেশ থেকে আসা উদ্ধারকারী দল।
১৯৮১ সাল থেকে জার্মানির তৈরি এই ডুবোজাহাজটি ব্যবহার করছে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী। নিখোঁজ হওয়ার পরে সেটির তল্লাশি অভিযানে নামে ইন্দোনেশিয়ার ২০টি জাহাজ এবং চারটি বিমান-সহ অস্ট্রেলিয়ার একটি যুদ্ধজাহাজও। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় ভারতীয় নৌবাহিনীও। শনিবারই উদ্ধারকাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল সিঙ্গাপুরের উদ্ধারকারী জাহাজগুলির এবং আমেরিকার বিশেষ উদ্ধারকারী বিমান ‘পি-৮ পোসাইডনের’। তবে এখন সেই প্রয়োজন ফুরিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy