ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানির পরিস্থিতি তুলনায় ভাল।—ছবি এএফপি।
হতে পারে স্বাভাবিক-জীবনের ব্যাখ্যা এখন নতুন, তারই মধ্যে ছন্দে ফিরতে উদগ্রীব ইউরোপবাসী। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি।
গত কয়েক মাসের ঘরবন্দি দশায় ধুঁকছে শেয়ার বাজারও। এই অবস্থায় দেশের শিল্প সংস্থাগুলোকে চাঙ্গা করতে একগুচ্ছ অনুদান প্রকল্প ঘোষণা করল জার্মানি। সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে বাড়ল ইউরোপের শেয়ার-দরও।
গোটা বিশ্বেই দীর্ঘদিন ধরে থমকে রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। পর্যটন ও তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ব্যবসাগুলো প্রায় বন্ধের মুখে। পরিস্থিতি বিচার করে আজ ইউরোপের অন্যতম বড় অর্থনীতি, জার্মানি ১৯টি রিলিফ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। জানিয়েছে, যত দিন না পরিস্থিতি শুধরোচ্ছে, স্বাভাবিক কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে, সাধারণ মানুষের পাশে থাকবে সরকার। এই আশ্বাসও দিয়েছে, এ বছরের শেষ পর্যন্ত ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলিকে আর্থিক সহযোগিতা করে যাওয়া হবে। এ ছাড়া, জার্মানির বড় সংস্থাগুলি (যেমন, বিএমডব্লিউ, ফোক্সভাগেন, ডয়েশ লুফৎহান্সা) জানিয়েছে, করোনা-পরিস্থিতিতেও তারা কর্মী-ছাটাইয়ের পথে হাঁটবে না।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানির পরিস্থিতি তুলনায় ভাল। এ পর্যন্ত ৯ হাজারের থেকে সামান্য বেশি মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি সংক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউরোপের বাইরে ১৬০টি দেশে যাওয়া নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে বার্লিন।
আরও পড়ুন: হোয়াইট হাউসে নাগরিকত্ব সুধাকে
স্কটল্যান্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় দু’জন করোনা-রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ১৬ জুলাইয়ের পরে এই প্রথম মৃত্যুর খবর। স্কটল্যান্ডে মৃত্যু হয়েছে আড়াই হাজারের কাছাকাছি। সে দেশের এক মন্ত্রী বলেন, ‘‘করোনায় মৃত্যু না-হওয়াটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে এখানে। কিন্তু এ দেশে মৃত্যুর খবর না-থাকলেও, করোনা বিদায় নেয়নি।’’
জার্মানি-সহ ইউরোপের বহু দেশেই স্কুল খুলেছে। এ প্রসঙ্গে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কালম সেম্পলের মতামত— স্কুলে বাচ্চাদের মাস্ক পরার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ পারস্পরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা ও সময়বিশেষে হাত ধোয়া। কিন্তু আনলক-অধ্যায়ে ছোটদের থেকে বড়দের নিয়েই বেশি চিন্তিত তিনি। বলেন, ‘‘ক্লাসঘরে শিক্ষক থাকলে বাচ্চারা শান্তই থাকে। কিন্তু পাবে ঢুকে বিয়ার হাতে প্রাপ্তবয়স্করা যে আচরণ করে থাকেন, তা বলাই বাহুল্য।’’
মে মাসেই স্পেনের বেশ কিছু অঞ্চলে স্কুল খুলেছে। যদিও নিয়মিত পড়ুয়াদের গায়ের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। সামান্য জ্বর থাকলেই স্কুলে পাঠাতে বারণ করা হচ্ছে। ফ্রান্সে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জার্মানিতে স্কুলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। কিন্তু বেশ কিছু নিয়ম জারি করা হয়েছে— যেমন, ঘনঘন হাত ধুতে হবে। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময়ে রেলিংয়ে হাত দেওয়া যাবে না। ইটালিতে স্কুল খোলেনি। তবে ভাবনাচিন্তা চলছে। সে ক্ষেত্রে, স্কুল খুললে পড়ুয়াদের মাস্ক পরতে হবে। শিক্ষকদের মাস্ক ও ফেস শিল্ড, দুই-ই পরতে হবে। পড়ুয়াদের মধ্যে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। স্কুলে ঢোকার মুখে ভিড় করা যাবে না। ব্রিটেনেও শিক্ষক সংগঠনগুলি পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মাস্ক পরাতেই জোর দিচ্ছে।
সাবধানতার পাশাপাশি ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে, তা হাতে পাওয়ায় নিশ্চিত করে রাখছে ইউরোপ। ম্যাসাচুসেটস ও কেমব্রিজের ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থা মডার্না তৈরি সম্ভাব্য প্রতিষেধকটির ১৬ কোটি ডোজ় কেনার আগাম চুক্তি সেরে রাখল এই মহাদেশ।
নয়া প্রতিযোগী: দেশে তৈরি সম্ভাব্য করোনা প্রতিষেধকটি মানবদেহে পরীক্ষায় ভাল ফল করছে বলে দাবি করল অস্ট্রেলিয়া। কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই বলে জানা গিয়েছে। গবেষণায় যুক্ত রয়েছে কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ট্রেলীয় জৈবপ্রযুক্তি সংস্থা সিএসএল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy