Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
San Jose

কলেজে আরও কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্রছাত্রী দেখতে চাই

বিভিন্ন ফোরামে দেখছি, প্রতিবাদ থেকে যে হিংসা, লুটপাটের মতো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে প্রশাসনের সুরে সুর মিলিয়ে বেশি করে তুলে ধরা হচ্ছে।

ছবি এএফপি

ছবি এএফপি

গায়ত্রী পাল
সান হোসে শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ০৩:৪৪
Share: Save:

মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যার পরবর্তী সময়ে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে দেশ ও বিশ্ব জুড়ে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’-এর মতো এমন স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন দানা বাধেনি। যা তৈরি হয়েছে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে রাস্তায় মানুষের ঢল নেমেছে। পরিবর্তন আনতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ মানুষ। অতিমারির ভয়ও তাঁদের রুখতে পারেনি। প্রশাসন মাথা নোয়াতে বাধ্য হয়েছে। ফ্লয়েডের হত্যায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মীরা আজ কারাগারে। এই অস্থির সময়ে মানুষের ঐক্যবদ্ধ রূপ দেখে আমি অভিভূত। এক নয়া আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।

বিভিন্ন ফোরামে দেখছি, প্রতিবাদ থেকে যে হিংসা, লুটপাটের মতো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে প্রশাসনের সুরে সুর মিলিয়ে বেশি করে তুলে ধরা হচ্ছে। সমালোচকেরা ভুলে যাচ্ছেন, প্রতিদিন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষেরা যে সংগঠিত হিংসার (সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয়) শিকার হচ্ছেন, তার কথা। লুটপাট, দাঙ্গা এই বিশাল আন্দোলনের মধ্যেই একটা অবাঞ্ছিত অংশ। যে কোনও আন্দোলনেই এ ধরনের ছোট ছোট সমস্যা থাকেই।

তবে এই পরিস্থিতি শুধরাতে শুধু পুলিশতন্ত্রের সংস্কারই পর্যাপ্ত নয়। বারাক ওবামার জমানায় মিনিয়াপোলিসের পুলিশ দফতরে ব্যাপক সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু এতে মিনিয়াপোলিস বা অন্যত্র পুলিশ দফতরের চিত্র বদলায়নি। তাই এর সমাধান হয়তো পুলিশ বিভাগে বরাদ্দ কমানো। ইতিমধ্যেই লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ঘোষণা করেছেন, পুলিশি বরাদ্দে কাটছাঁট করে সেই অর্থ সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের কাজে ব্যয় করা হবে। ধন্যবাদ মেয়র।

আজ মার্কিন করোনা-টিমের প্রধান তথা এপিডিমিয়োলজিস্ট অ্যান্টনি ফাউচি স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অসামঞ্জস্যের উল্লেখ করে স্পষ্ট জানিয়েছেন, করোনা অতিমারির জেরে এই বৈষম্য চোখের সামনে চলে এসেছে। নির্ভিক বক্তব্যের জন্য মিস্টার ফাউচিকে ধন্যবাদ।

মাননীয় পুলিশ, প্রশাসন, এ বার সময় এসেছে মাথা উঁচু করে শ্বাস নেওয়ার। এই উজ্জ্বল আলোয় মুছে যাক ৪০০ বছরের দমন। আমি দেখতে চাই, অদূর ভবিষ্যতে আমার কলেজে আরও বেশি কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করতে আসছে।

তবে ইচ্ছে থাকলেও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিতে পারিনি। অতিমারি পরিস্থিতিতে পারস্পরিক দূরত্ববিধির কথায় মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু ঘরে থেকে আমরা প্রত্যেকে নিজের মতো করে প্রতিবাদে শামিল হতে পারি। তা নীতি নির্ধারকদের উপর চাপ বজায় রাখতে আবেদনে স্বাক্ষর করাই হোক বা আন্দোলনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসাহায্যের মাধ্যমে। নিজেদের মধ্যে নিরপেক্ষতা সংক্রান্ত আলোচনা করে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়াসে যুক্ত থাকার মধ্যে দিয়েও আন্দোলনের শরিক হতে পারি আমরা। শুধু চুপ করে বসে থাকবেন না। কারণ, আমাদের মতো তথাকথিত উচ্চবর্গের মানুষদের নীরবতা কার্যত হিংসা, বিচ্ছিন্নতাকেই প্রশ্রয় দেয়। তাই কণ্ঠ ছাড়ুন, বিভাজনের বিরুদ্ধে সরব হন। (শেষ)

(লেখক ডি অ্যানজ়া কলেজের জীববিদ্যা বিভাগের শিক্ষক)

আরও পড়ুন: আমার আমেরিকা আসার টিকিটের জন্য বাবার এক বছরের মাইনে লেগেছিল: সুন্দর পিচাই

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy