Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Bangladesh Election

বাংলাদেশের নির্বাচন কি তদারকি সরকারের অধীনে? সম্ভাবনা উড়িয়ে হাসিনার মন্ত্রীর মুখে এই বাংলার কথা

পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই।

(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। (ডান দিকে) কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ রাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস।

(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। (ডান দিকে) কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ রাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ ১৬:৪৮
Share: Save:

বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের নিয়ন্ত্রণে দেশে সাধারণ নির্বাচন হলে তারা ভোটে অংশ নেবে না। বেগম খালেদা জিয়ার দলের দাবি, নিরপেক্ষ ভোট করতে হলে কোনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তা করা প্রয়োজন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী তথা আওয়ামি লিগের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক হাছান মাহমুদ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সে সবের কোনও সম্ভাবনাই নেই। বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে মাহমুদ জানিয়ে দিলেন, হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই ভোটে যাবে। সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা করবে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রীর দাবি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত নয়। তিনি বলেন, ‘সংবিধান স্বীকৃত নয় বলে তা করার সুযোগ নেই। সংবিধান অনুযায়ী যা হওয়ার তা-ই হবে।’’ এই প্রসঙ্গেই উদাহরণ দিয়ে মাহমুদ বোঝাতে চান, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন কতটা কঠোর! সেই সঙ্গে নাম না-করে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটের প্রসঙ্গও টানেন হাসিনার দলের ওই শীর্ষ সারির নেতা। মাহমুদ বলেন, ‘‘সম্প্রতি বাংলাদেশে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছে। বরিশালে এক জনকে ঘুষি মারা হয়েছিল। সেই ঘটনায় আশপাশের সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের এখানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কী হয়েছে দেখেছেন!’’ ঢাকার একটি উপনির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে হাসিনার মন্ত্রী বলেন, ‘‘এক জনকে হেনস্থা করা হয়েছিল। সেখানেও কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে।’’

এর পর নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় বাংলাদেশের শাসক দলের অসন্তোষের কথাও জানান মাহমুদ। তাঁর কথায়, ‘‘গাইবান্ধার ভোটে কয়েকটি জায়গায় জাল ভোটের অভিযোগ উঠেছিল। তার পর গোটা নির্বাচনটাই বাতিল করে দিয়েছিল কমিশন। সেই সময়ে আমি মন্ত্রী হিসাবে এবং দলের তরফে প্রতিবাদ করেছিলাম।’’ মাহমুদ বোঝাতে চান, আইন করে নির্বাচন কমিশনকে অনেকটাই স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এবং তারা যে ভাবে ভোট পরিচালনা করছে তা নজিরবিহীন। সেখানে তত্বাবধায়ক সরকারের কথা মানতেই চাইছেন না তাঁরা। বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, বিএনপি নেতাদের একটি বড় অংশ ভোট বয়কটের দলীয় লাইনের সঙ্গে একমত নন। বাংলাদেশের রাজনীতিকদের একাংশের মতে, প্রধান বিরোধী দলের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করতে কৌশলে ওই মন্তব্য করেছেন মাহমুদ।

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে পশ্চিমি দেশগুলি, বিশেষত, আমেরিকা যে সমালোচনা করছে, বৃহস্পতিবার তারও জবাব দিতে চেয়েছেন মাহমুদ। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক দেশের থেকে বাংলাদেশে মানবাধিকার ভাল জায়গায় রয়েছে।’’ এই প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে মাহমুদ বলেন, ‘‘আমেরিকায় যে ভাবে জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যা করা হয়েছিল, হেরে যাওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা ক্যাপিটলে যা করেছিল, বাংলাদেশে সে সব কিছুই হয়নি।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমি দেশগুলি যে ভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে তা সমীচীন নয়।’’ তিনি পড়শি দেশগুলির মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার বার্তাও দিয়েছেন।

নেটমাধ্যমে যে ভাবে কুৎসা ছড়ানো হচ্ছে তা নিয়েও বৃহস্পতিবার সরব হন মাহমুদ। তাঁর কথায়, ‘‘নেটমাধ্যমকে স্থানীয় আইনে নথিভুক্ত করেছে ভারত। পশ্চিমের একাধিক দেশও তাই করেছে।’’ বাংলাদেশ সরকারও সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE