অগ্নিগর্ভ: প্যালেস্তাইনিদের বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে গমখেতেও। আগুন নেভানোর চেষ্টায় ইজ়রায়েলি সেনা। গাজ়া সীমান্তের কাছে সোমবার। ছবি: এএফপি
দূতাবাস উদ্বোধনের কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই উত্তাল ছিল গাজ়া সীমান্ত। তেল আভিভ থেকে সরিয়ে জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস খোলার সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় ছ’সপ্তাহ ধরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে। সোমবার উদ্বোধনের দিনে তা ভয়াল চেহারা নেয়। ১৪ মে, দিনটি ইজ়রায়েলের ৭০তম প্রতিষ্ঠা দিবসও। শুধু এক দিনে ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪১ প্যালেস্তাইনি। যার মধ্যে বেশ কয়েক জন কিশোর। সব মিলিয়ে জখম হন ১৭০০-এর বেশি মানুষ। অশান্তির মধ্যেই এ দিন নির্ধারিত সময়ে উদ্বোধন হয়েছে মার্কিন দূতাবাসের।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-কন্যা ও বিশেষ উপদেষ্টা ইভাঙ্কা এবং জামাই জ্যারেড কুশনার অন্য অফিসারদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে ছিলেন। মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। যদিও সমালোচকদের দাবি, এর ফলে অগ্নিগর্ভ হবে পরিস্থিতি।
হয়েছেও তাই। জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস খোলার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গাজ়া সীমান্তে সকাল থেকেই জড়ো হন হাজার হাজার প্যালেস্তাইনি। কারও হাতে পাথর। কারও হাতে জ্বলন্ত ঘুড়ি। কোথাও জ্বলন্ত টায়ার। সীমান্তের দিকে এগোচ্ছিলেন তাঁরা। ও পারে ইজ়রায়েলি স্নাইপার তখন জায়গা নিয়ে দাঁড়িয়ে। ইজ়রায়েলি সেনার দাবি, অন্তত ১০ হাজার সশস্ত্র প্যালেস্তাইনি গাজ়া সীমান্তের কাছে জড়ো হয়েছেন। আরও মানুষ আসছেন। সীমান্ত পেরোনোর জন্য তাঁরা এগোতেই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ইজ়রায়েলি সেনা প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। ধেয়ে আসে গুলিও। ড্রোন থেকে ভিড়ের মধ্যে অবাধে বর্ষণ হয় গোলা। সীমান্তের দিকে এগিয়ে গিয়েছে সামরিক ট্যাঙ্ক। বিক্ষোভকারীরা টেনিস র্যাকেট দিয়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল পাল্টা ঘুরিয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েলের সেনার দিকে।
এক বিবৃতিতে ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি, প্যালেস্তাইনি জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস এই বিক্ষোভের মধ্যেই অভিযান চালায়। প্রতিবাদীদের প্ররোচনা দিয়েছে। ইজ়রায়েলি বাহিনী জানায়, আগে থেকে তারা গাজ়ার নানা জায়গায় লিফলেট ছড়িয়ে জানিয়েছিল, সীমান্তের দিকে এগোবেন না। লাভ হয়নি। সংঘর্ষে প্রথম প্রাণ হারান ২১ বছরের তরুণ আনাস হামদান কেদি। প্যালেস্তাইনের শিক্ষামন্ত্রী সাব্রি সইদাম বলেন, ‘‘আজ দুঃখের দিন। আমেরিকার ক্ষমতা দেখানোর দিন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্যালেস্তাইনি জনতাকে আঘাত করলেন। যে জনতা ৭০ বছর ধরে অপেক্ষা করছে স্বাধীনতার জন্য।’’
দূতাবাসের স্থানান্তরণকে ইজ়রায়েলিরা স্বাগত জানালেও প্যালেস্তাইনিরা প্রথম থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের স্বপ্ন, জেরুসালেমের পূর্ব অংশ একদিন পৃথক প্যালেস্তাইনি রাষ্ট্রের রাজধানী হবে। মঙ্গলবার ক্ষোভ আরও বাড়বে বলে দাবি। কারণ ১৫ মে প্যালেস্তাইনিরা ‘নাকবা’ হিসেবে পালন করেন। যার অর্থ ‘বিপর্যয়।’ ইজ়রায়েল প্রতিষ্ঠার পরপরই ১৯৪৮-র যুদ্ধ চলাকালীন ১৫ মে দিনটিতে সাত লক্ষেরও বেশি প্যালেস্তাইনিকে বহিষ্কার করা হয়, কেউ আবার বাধ্য হন দেশ ছাড়তে। তাই আগামিকাল অশান্তি ভয়ঙ্কর আকার নিতে চলেছে বলে আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy