আমাজন রক্ষা করা নিয়ে উদাসীন ট্রাম্প।
জ্বলছে বৃষ্টি-বনানী। প্রতিবাদের আঁচ সর্বত্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব পরিবেশ-আন্দোলনকারীরা। এ অবস্থায় আজ আমাজনের আগুন নেভাতে ২ কোটি ২০ লক্ষ ডলার অর্থসাহায্য ঘোষণা করল জি৭-এর সদস্য দেশগুলি। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখা গেল তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই। জি৭-এ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যে বিশেষ বৈঠকে আমাজন নিয়ে আলোচনা হল, সেখানে যোগই দিলেন না ট্রাম্প। তিনি ব্যস্ত থাকলেন ‘ইরান-সমস্যা’ নিয়ে।
বৃষ্টি-বনানীর আগুন নেভাতে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন হলিউড অভিনেতা তথা পরিবেশ আন্দোলনকারী লিয়োনার্দো ডি ক্যাপ্রিয়ো। তাঁর পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘আর্থ অ্যালায়েন্স’-এর পক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ ডলার সাহায্যের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
শুরু থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাজনের দাবানল নিয়ে সরব লিয়োনার্দো। ‘পৃথিবীর জ্বলন্ত ফুসফুস’ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। এ দিন ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তাঁদের উদ্যোগের কথা জানান লিয়োনার্দো। তাঁর সঙ্গে শামিল হয়েছেন কোটিপতি লরেন পাওয়েল ডোবস এবং ব্রায়ান শেদ। ইনস্টাগ্রামে লিয়োনার্দো লিখেছেন, ‘‘আমাদের অর্থসাহায্যের মূল লক্ষ্য হল জঙ্গলের আদি বাসিন্দাদের কাছে প্রয়োজনীয় রসদ পৌঁছে দেওয়া। সেই সঙ্গে স্থানীয় যে সংস্থাগুলি আমাজনের জীববৈচিত্র বাঁচিয়ে রাখার জন্য কাজ করে চলেছে, তাদের হাতে অর্থ তুলে দেওয়া।’’ তিনি জানিয়েছেন, ব্রাজিলের আমাজন ১০ লক্ষ আদি বাসিন্দার ঘর। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পুড়ে মরছে অন্তত ৩০ লক্ষ প্রজাতির জীব। তাঁর কড়া সতকর্তা— ‘‘শুধু প্রার্থনা নয়, আরও কিছু চাই আমাজনের।’’ যেমন, ভোট দেওয়ার আগে ভেবেচিন্তে নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন লিয়োনার্দো। তাঁর কথায়, ‘‘ব্রাজিলীয় প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনেরো তো নিজেই কৃষক, কাঠুরেদের জন্য আমাজনের জঙ্গল খুলে দিয়েছেন! পরিণতিতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আমাজন।’’ মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘পরিবেশ-সচেতনতা’ নিয়ে লিখতে গিয়ে একটি দৈনিকে সম্প্রতি খবর হয়েছিল, ট্রাম্প এক সাংবাদিক বৈঠকে জানতে চেয়েছিলেন, পরমাণু বোমা ফেলে আফ্রিকার উপকূলে তৈরি হওয়া হারিকেন আটকানো যায় কি না। ট্রাম্প অবশ্য আজ ‘ভুয়ো খবর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিষয়টি। প্রসঙ্গ পাল্টে বলেছেন, পরের জি-৭ সম্মেলন নাকি তাঁর গল্ফ কোর্সে আয়োজন করা হবে! সঙ্গে বলেছেন, বাণিজ্য নিয়ে কথা বলতে চেয়েছে চিন ইত্যাদি। বেজিং যদিও জানিয়েছে এমন কোনও আলোচনার কথা তাদের জানা নেই।
ব্রাজিল সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লাগাতার জল দিয়ে দাবানল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছে যুদ্ধবিমানগুলি। তাদের দাবি, সাতটি প্রদেশে অভিযান নিয়ন্ত্রণ করছেন খোদ প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো। যদিও রনডোনিয়া ছাড়া আর কোনও জায়গার খবরই জানানো হচ্ছে না। রনডোনিয়া প্রদেশের অবস্থাই সব চেয়ে খারাপ। সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে ব্রাজিলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তাতে দেখা যাচ্ছে, অরণ্যের মাথায় ধোঁয়ার চাঁদোয়া। যুদ্ধবিমান থেকে হাজার হাজার লিটার জল ফেলা হচ্ছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও ‘সুখবর’ মেলেনি। পরিবেশ সংস্থা ‘গ্রিনপিস’-এর সদস্যা রোজ়ানা ভিলারের কথায়, ‘‘আমাজনের উপর দিয়ে বিমানে ওড়া, এক ভয়ানক অভিজ্ঞতা। হতাশার। শুধু তো আমাজনের জঙ্গলটা পুড়ছে না, যেন একটা সমাধিস্থল। চার দিকে শুধু মৃত্যু, আর মৃত্যু।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy