চিনের আপত্তি উড়িয়ে সুনামি-বিধ্বস্ত ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘তেজস্ক্রিয় জল’ প্রশান্ত মহাসাগরে নিষ্কাশন শুরু করল জাপান। ফুকুশিমা পরমাণুকেন্দ্রের পরিচালন সংস্থা ‘টেপকো’ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে পরিস্রুত করা ওই জলের একাংশ সমুদ্রে ফেলা হয়েছে। পাম্পের সাহায্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হয় বলে জানিয়েছে জাপান। প্রায় ২০ মিনিট পরে প্রথম পর্যায় সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে অন্য একটি পাম্পকেও সক্রিয় করা হয়।
রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু নজরদারি সংস্থা, আইএইএ (‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ বা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা) জুলাই মাসে জানিয়েছিল, ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় জল জাপান যতখানি পরিস্রুত করতে পেরেছে, তার মান সন্তোষজনক। এ সংক্রান্ত রিপোর্ট জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিশিদার হাতে তুলে দিয়ে ‘তেজস্ক্রিয় জল’ প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলার ছাড়পত্রও দিয়েছিল। যদিও সে সময়ই চিনের তরফে তীব্র আপত্তি জানিয়ে বলা হয়েছিল, ‘‘আইএইএ রিপোর্ট সাগরে বর্জ্য জল ফেলার ছাড়পত্র হতে পারে না।’’
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে ভূমিকম্প এবং সুনামির জেরে বিধ্বস্ত হয়েছিল ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। তার পরে সেখানকার সিল করা যে ধাতব টিউবে জ্বালানি ইউরেনিয়াম থাকে, সেই টিউব বা রডগুলিকে ঠান্ডা করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল জল। তার পরিমাণ প্রায় ৫০০টি অলিম্পিক মাপের সাঁতার পুলে যত জল ধরে, প্রায় ততখানি! প্রায় ১,০০০টি বিশেষ ধাতব কন্টেনারে ভরে রাখা সেই জলই ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে ধাপে ধাপে সাগরে ফেলতে চায় জাপান। তার আগে জল পরিস্রুত করে যথাসম্ভব তেজস্ক্রিয়তামুক্ত করা হয়েছে বলে আইএইএ-র কাছে দাবি জানানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
আইএইএ-র প্রতিনিধিদল রিপোর্টে বলছে, তারা পরীক্ষা করে দেখেছে, এখন যতটুকু তেজস্ক্রিয়তা রয়েছে ওই বর্জ্য জলে, তা পরিবেশের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয়। আইএইএ-র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি গত মাসে জানিয়েছিলেন, জল ছাড়ার সময় ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রে তাঁদের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। চিনের পাশাপাশি জাপানের ‘বন্ধু’ দক্ষিণ কোরিয়াও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এমনকি, বিরোধিতা এসেছে জাপানের মৎস্যজীবীদের একাংশের তরফেও।