Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ট্রাম্পকে কড়া জবাব আলেকজ়ান্দ্রিয়াদের

শুধু তাই নয়, হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ট্রাম্পের জাতিবিদ্বেষী মন্তব্যের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার দিকে এগোচ্ছেন।

রশিদা তালিব ও  ইলান ওমর।

রশিদা তালিব ও ইলান ওমর।

সংবাদ সংস্থা
রিচমন্ড শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯ ০২:৪৩
Share: Save:

যেখান থেকে এসেছেন, সেখানেই ফিরে যান!

রবিবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইট এই ভাষাতেই আক্রমণ শানিয়েছে। কারও নাম না করে বলেছে, ‘‘গোটা বিশ্বের নিরিখে যেখানে সরকার নিকৃষ্টতম, দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অদক্ষ... সেই সব দেশ থেকে আসা ‘প্রগতিশীল’ মহিলারা... আমেরিকার মতো সেরা এবং শক্তিশালী রাষ্ট্রের নাগরিকদের বোঝাতে এসেছেন, কী ভাবে সরকার চালাতে হবে! ওঁরা যেখান থেকে এসেছেন, সেখানেই ফিরে যাচ্ছেন না কেন! অস্থির, অপরাধপ্রবণ সেই জায়গাগুলো বরং ঠিকঠাক করে আমাদের দেখান না, কী ভাবে কাজটা করতে হবে!’’

কাকে উদ্দেশ করে এ সব বললেন ট্রাম্প? বেশির ভাগেরই অনুমান, নিউ ইয়র্কের আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো কর্তেজ়, মিনেসোটার ইলান ওমর, মিশিগানের রশিদা তালিব এবং ম্যাসাচুসেটসের আইয়ানা প্রেসলি— ট্রাম্পের নিশানা মূলত এঁরাই। মার্কিন কংগ্রেসের চার অ-শ্বেতাঙ্গ ডেমোক্র্যাট নারী। এঁদের তিন জনের জন্ম এবং বড় হয়ে ওঠা আমেরিকাতেই। শুধু ইলান শৈশবে আমেরিকায় এসেছিলেন সোমালিয়া থেকে। আজ এঁরা সকলেই পাল্টা জবাব দিয়েছেন প্রেসিডেন্টকে।

শুধু তাই নয়, হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ট্রাম্পের জাতিবিদ্বেষী মন্তব্যের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার দিকে এগোচ্ছেন। ডেমোক্র্যাট সদস্যদের তিনি এই নিয়ে চিঠি লিখেছেন। রিপাবলিকান সদস্যদের কাছেও এই প্রস্তাবটি সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন রাজনীতিতে ‘প্রতিবাদী’ চার নারীকে এখন ‘স্কোয়াড’ বলে ডাকা হচ্ছে। চার মহিলার প্রত্যেকেই অল্প বয়সে অ-শ্বেতাঙ্গ কংগ্রেস সদস্য হয়ে সাড়া ফেলেছেন এবং অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে সরব রয়েছেন। ইলান আমেরিকায় আসেন ছোটবেলায়। ১৭-য় নাগরিক হন। আলেকজ়ান্দ্রিয়ার জন্ম নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কসে— ট্রাম্পের জন্মস্থান কুইন্স হসপিটাল থেকে যা ১৯ কিলোমিটার দূরে!

আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো ও আইয়ানা প্রেসলি।

এ দিন ট্রাম্পকে পাল্টা জবাব দিয়ে আলেকজ়ান্দ্রিয়ার টুইট, ‘‘মি. প্রেসিডেন্ট আমি যে ‘দেশের’ এবং যে দেশের জন্য আমরা সবাই শপথ নিয়েছি, তার নাম আমেরিকা। কিন্তু আপনি আমাদের সীমান্তকে অমানবিক শিবির বানিয়ে ধ্বংস করেছেন, যাতে শুধু আপনার এবং সেনাবাহিনীর লাভ হয়! দুর্নীতির কথাটা এক্কেবারে ঠিক বলেছেন, আপনার পায়ের কাছেই সেটা হয়ে চলেছে।’’ একের পর এক টুইটে আলেকজ়ান্দ্রিয়ার সংযোজন, ‘‘আপনি রেগে গিয়েছেন কারণ আপনি সেই আমেরিকার কথা ভাবতেই পারেন না, যে আমেরিকা আমাদের গ্রহণ করেছে। যুদ্ধবাজ মনোভাব থেকে একটা ভয়ানক আমেরিকার উপরে নির্ভর করেন আপনি। যে আমেরিকা আমাদের জিতিয়েছে, তাকে মানতে চান না। আমরা আপনাকে ভয় পাই না, আপনি মানতে পারেন না সেটাও।’’

রশিদা ট্রাম্পকে বিঁধে বলেছেন, ‘‘বিশৃঙ্খল ও সম্পূর্ণ ব্যর্থ প্রেসিডেন্টের উদাহরণ জানতে চান? উনি নিজেই তা-ই। ওঁর ভয়ঙ্কর মতাদর্শ সেই সঙ্কট তৈরি করে। ওঁকে ইমপিচ করা উচিত।’’ ইলান লিখেছেন, ‘‘শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদে ইন্ধন জোগাচ্ছেন উনি। আমরা ক‌ংগ্রেসে এসেছি এবং আপনার ঘৃণ্য-রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছি বলে আপনার এত রাগ।’’ আইয়ানা ট্রাম্পের টুইটের স্ক্রিনশট দিয়ে লিখেছেন, ‘‘বর্ণবিদ্বেষ দেখতে অনেকটা এই রকম। আর আমাদের দেখে বুঝুন, গণতন্ত্রের চেহারাটা কেমন।’’ ট্রাম্প অবশ্য বেলা গড়াতেই ফের জানিয়েছেন, তাঁর টুইটগুলো বর্ণবিদ্বেষী নয়। তাঁর কথায়, ‘‘যদি আমাদের দেশ নিয়ে কারও সমস্যা থেকে থাকে, কেউ যদি আমাদের দেশে থাকতে না চান, তাঁরা চলে যাবেন।’’

গত সপ্তাহেই আলেকজ়ান্দ্রিয়ারা ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি নিয়ে সরব হন। ন্যান্সি পেলোসির সঙ্গেও প্রাচীর তোলার বাজেট নিয়ে মতানৈক্য হয় ওঁদের। সরকারের বরাদ্দে পেলোসি সায় দিলেও মানেননি চার তরুণী। এখন পেলোসি কিন্তু স্কোয়াডের পাশেই। লিখেছেন, ‘‘যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কংগ্রেস-সদস্যাদের দেশ ছাড়তে বলছেন, তখন ওঁর ‘আমেরিকাকে ফের মহান করার স্বপ্ন’ই জোরদার হচ্ছে, যেখানে তিনি শুধু শ্বেতাঙ্গদের আমেরিকা তৈরি করতে চান। আমাদের বৈচিত্রই আমাদের শক্তি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump Alexandrian Democratic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy