ফাইল চিত্র।
ছ’দিন! শাহবাজ় শরিফের সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এই সময়সীমাই বেঁধে দিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সঙ্গে জানালেন, এই সময়সীমার মধ্যেই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। এই ঘোষণার পরেই সাময়িক ভাবে ‘আজ়াদি মার্চ’-এ দাঁড়ি টানলেন। তার পরেই বানি গালার উদ্দেশে রওনা দেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চেয়ারম্যান।
গত কাল গভীর রাতেই ইসলামাবাদে পৌঁছেছিলেন ইমরান। আজ ইমরান তাঁর সমর্থকদের ইসলামাবাদে জমায়েতের ডাক দেন। নির্বাচন এগিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে শক্তি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ করেছিলেন ইমরান।
প্রসঙ্গত, শাহবাজ় শরিফের জোট সরকার ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর এই ‘আজ়াদি মার্চ’ নিষিদ্ধ করেছিল। গ্রেফতার করা হয় পিটিআইয়ের বহু কর্মী-সমর্থককে। করাচি, লাহোরের মতো শহরে দ্রুত গন্ডগোল ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, শূন্যে গুলি ছোড়ে। তবে আয়ত্তে আসেনি পরিস্থিতি।
ইমরান ইসলামাবাদ পৌঁছতে আরও উত্তেজনা বাড়ে। আজ ভোর ৫টা নাগাদ ডি চকের দিকে রওনা দেন তিনি। এই অঞ্চলের কাছেই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন। সুপ্রিম কোর্ট, আমেরিকান দূতাবাস, প্রধানমন্ত্রীর অফিস এবং পার্লামেন্টও। ইতিমধ্যেই রেড জ়োনের আওতাধীন ওই গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ঢুকে পড়েন পিটিআই কর্মী-সমর্থকেরা। কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকলেও আগুয়ান সমর্থকদের আটকানো সম্ভব হয়নি নিরাপত্তারক্ষীদের। ইসলামাবাদ পুলিশ অবশ্য শুরু থেকেই পিটিআই সমর্থকদের রেড জ়োনে প্রবেশ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল। যদিও বিক্ষোভের আঁচে সেই অনুরোধে চিঁড়ে ভেজেনি।
পরিস্থিতি আঁচ করে অবশ্য রাত ২টো নাগাদ সেনা নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় পাক প্রশাসন। সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, সংবিধানের ২৪৫ ধারা অনুসারে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা নামানো হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রানা সানাউল্লা-ও পাক সরকারের সেই বিজ্ঞপ্তি টুইট করে সেনা নামানোর বিষয়টি জানান। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজ়েব জানিয়েছেন, রেড জ়োনে নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক ছিল না।
আজ সকালে জিন্না অ্যাভিনিউয়ে বক্তব্য রাখার সময়ে ইমরান জানান, খাইবার পাখতুনখোয়া থেকে রওনা দিয়ে ৩০ ঘণ্টা বাদে ইসলামাবাদে পৌঁছতে পেরেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার আমাদের আজ়াদি মার্চ ভেস্তে দিতে সমস্ত রকম কৌশল প্রয়োগ করেছে। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদীদের উপরে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে।’’
এর পাশাপাশি ইমরানের অভিযোগ, করাচিতে পিটিআইয়ের দুই কর্মীকে রবি সেতু থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হয়েছে হাজারেরও বেশি কর্মী-সমর্থককে। ছাড় পাননি মহিলা ও শিশুরাও। বর্তমান সরকারকে বিদেশি শক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন বলে ফের দাগিয়ে দিয়েছেন পিটিআই চেয়ারম্যান। সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছেন, ‘‘অবিলম্বে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নির্বাচন ঘোষণা করা হোক। অন্যথায় ৬ দিন পরে আমি আবার ফিরে আসব।’’
গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দেশে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে শান্তিপূর্ণ ‘আজ়াদি মার্চ’-এর ডাক দিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান। সুপ্রিম কোর্টও রাজধানীতে প্রতিবাদ মিছিলের অনুমতি দিয়েছিল। এর পাশাপাশি ইমরানকে গ্রেফতার করা যাবে না বলেও নির্দেশ জারি করে। যদিও শাসক জোটের দাবি, ডি চকে মিছিলের অনুমতিছিল না। শীর্ষ আদালত এইচ-৯ সেক্টরের মাঠে প্রতিবাদের অনুমতি দিয়েছিল। সেই নির্দেশ ভঙ্গ করে আদালতের অবমাননা করেছেন পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান। পিএমএল-এন ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ় জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশকে পদদলিত করেছেন ইমরান।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy