মহম্মদ নাশিদ। —ফাইল চিত্র।
বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর জখম মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা দেশের সংসদের বর্তমান অধ্যক্ষ মহম্মদ নাশিদ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি তিনি। গাড়ি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন মলদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এক নেতা। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহ্স্পতিবার রাজধানী ম্যালে-র একটি ব্যস্ত এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন নাশিদ। সেই সময় পাশে রাখা একটি মোটরবাইকে প্রচণ্ড জোরে বিস্ফোরণ ঘটে। তাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ৫৩ বছরের নাশিদ। সেখান থেকে তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে এডিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই মুহূর্তে হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন নাশিদ। তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, একাধিক ক্ষত রয়েছে নাশিদের শরীরে। তবে এ নিয়ে বিশদে কিছু জানানো হয়নি। বিস্ফোরণে নাশিদ আহত হওয়ার পরই জরুরি ভিত্তিতে দেশের সংসদে অধিবেশন ডাকা হয়।
এখনও পর্যন্ত যা তথ্য পাওয়া গিয়েছে সেই অনুযায়ী, যে মোটরবাইকে বিস্ফোরণ ঘটে সেটিতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক বাঁধা ছিল। নাশিদকে খুনের লক্ষ্যেই মোটরবাইকটি তাঁর গাড়ির পাশে রাখা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম মহম্মদ সোলিও তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, মোটরবাইকে আইইডি বাঁধা ছিল’।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। বিস্ফোরণের পর গোটা এলাকায় তল্লাশিও চালায় পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিস্ফোরণ এতটাই তীব্র ছিল যে, রাজধানীর শেষ প্রান্তে পর্যন্ত আওয়াজ শোনা গিয়েছে।
এমনিতেই রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য পরিচিত মলদ্বীপ। তবে করোনার প্রকোপে সম্প্রতি তেমন অশান্তির খবর সামনে আসেনি সেখান থেকে। বুধবার রাতে থেকেই সেখানে রাত্রিকালীন কার্ফু শুরু হয়েছে। তার পর দিনই নাশিদের উপর এই হামলার পিছনে কী কারণ থাকতে পারে তা খতিয়ে দেখছেন দেশের গোয়েন্দারা।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন নাশিদ। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অধীনে দীর্ঘ দিন বন্দিদশা কাটিয়েছেন তিনি। ২০০৮ সালে দেশে প্রথম বার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন নাশিদ। কিন্তু ২০১২ সালে তাঁর সরকারের উচ্ছেদ ঘটে। ২০১৫ সালে ১৩ বছরের সাজা শোনানো হয় তাঁকে। এর নেপথ্যে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল বলেই মনে করেন দেশের রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
স্বাস্থ্যজনিত কারণ সেই সময় ব্রিটেনে তাঁকে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার অনুমতি দেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। দেশ ছাড়ার পর সেখানেই নির্বাসনে ছিলেন নাশিদ। ২০১৮ সালে ফের দেশে ফেরেন। ফের সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন। চিনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়ার জন্য ইয়ামিন সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। বেজিংয়ের কাছে ইয়ামিন গোটা দেশ বন্ধক দিয়েছেন বলেও অভিযোগ তোলেন। এর পর ২০১৯ সালের নির্বাচনের পর দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদ সংসদের অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy