পুড়ে যাওয়া একটি ছোট্ট বাড়ি। বেশ কিছু অংশে ভেঙে পড়েছে কাঠের ছাদ। ভিতরে ঢুকতেই দেখা গেল মেঝেয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে প্রচুর কঙ্কাল। গুনেগেঁথে দেখা গেল সংখ্যাটা প্রায় একশো ছুঁইছুঁই। উত্তর-পূর্ব চিনে পাঁচ হাজার বছরের পুরনো একটি গ্রাম হামিন মঙ্ঘা। সেখানেই খননকার্যের সময় এক বাড়িতে এতগুলি কঙ্কাল পেয়ে তাজ্জব গবেষক দল।
কঙ্কালগুলি উদ্ধার করে গবেষণার পর প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানিয়েছেন, সেগুলি হাজার পাঁচেক বছর আগের। সবই অল্পবয়সি নারী-পুরুষের। বয়স মোটামুটি ১৯ থেকে ৩৫-এর মধ্যে। কোনও বয়স্ক মানুষের কঙ্কাল পাওয়া যায়নি। যে বাড়ি থেকে কঙ্কালগুলি মিলেছে, সেটি খুবই ছোট। মাত্র ২১০ স্কোয়ার ফুট। বড় জোর একটা স্কোয়াশ কোর্টের মতো।
প্রশ্ন উঠেছে, ওই ছোট্ট বা়ড়িটির মধ্যে একসঙ্গে কেন এতগুলো কঙ্কাল? প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, সম্ভবত কোনও মহামারী ছড়িয়ে পড়েছিল সে সময়। আর তাতেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। হয়তো পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ আকার নিয়েছিল যে, মৃতদেহগুলি সৎকার করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ওই বাড়িতে এনে জড়ো করে রাখা হয়েছিল। এর পরে হয়তো আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বাড়িটিতে।
পুরাতাত্ত্বিকরা জানাচ্ছেন, এটা যে সময়ের ঘটনা, তখন লেখা আবিষ্কার হয়নি। তবে হামিন মঙ্ঘার আনাচে কানাচে খোঁড়াখুঁড়ি করে বেশ কিছু প্রাচীন নিদর্শন মিলেছে। মাটির হাঁড়ি-কলসি, মশলা পেষাই করার সরঞ্জাম ইত্যাদি। গবেষণায় ধীরে ধীরে উঠে আসছে আরও বহু তথ্য। সে সব থেকেই তখনকার জীবনযাত্রার মোটামুটি পরিষ্কার একটা ছবি পাওয়া যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, সেখানকার মানুষ ছোট্ট ছোট্ট বাড়িতে থাকত। চাষবাস বা শিকারের মাধ্যমে দিন গুজরান করত। তবে এক সঙ্গে এত মৃত্যুর নিশ্চিত কারণটা জানার চেষ্টা চলছে এখন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy