Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

জাহাজে সুস্থই নামখানার কানু, তৎপর দূতাবাস

ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁদের চট্টগ্রামের দফতর বাংলাদেশের তটরক্ষী বাহিনী এবং জাহাজের মালিক সংস্থাটির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। খারাপ আবহাওয়ার জন্য জাহাজটি কুতুবদিয়ার কাছে আটকে রয়েছে।

সেই ভারতীয় মৎস্যজীবী (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র

সেই ভারতীয় মৎস্যজীবী (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চট্টগ্রাম ও নামখানা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯ ০৫:১৫
Share: Save:

চার দিন ধরে সমুদ্রে ভেসে থাকা নামখানার মৎস্যজীবী রবীন্দ্রনাথ ওরফে কানু দাসকে উদ্ধারের পরে বাংলাদেশের পণ্যবাহী জাহাজ এম ভি জাওয়াদ এখনও চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারেনি। জাহাজের ক্যাপ্টেন এস এম নাসিরুদ্দিন জানিয়েছেন, চিকিৎসা বিশ্রাম ও খাওয়া দাওয়ার পরে কানু অনেকটাই সুস্থ আছেন। তিনি কথা বলছেন, ডেকে ঘোরাফেরাও করতে পারছেন। চার দিন ধরে জলে ভেসে থাকার পরিশ্রম, মানসিক চাপ ও খাবারের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এই মৎস্যজীবী।

ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁদের চট্টগ্রামের দফতর বাংলাদেশের তটরক্ষী বাহিনী এবং জাহাজের মালিক সংস্থাটির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। খারাপ আবহাওয়ার জন্য জাহাজটি কুতুবদিয়ার কাছে আটকে রয়েছে। দু’তিন দিনের মধ্যেই সেটি চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তার পরে মৎস্যজীবী রবীন্দ্রনাথকে দ্রুত দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।

সংবাদমাধ্যমে নিখোঁজ স্বামীর ছবি দেখেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে পরিবার। এখন তাঁর বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় মৎস্যজীবীর পরিবার। নামখানার নায়ায়ণপুর গ্রামের রবীন্দ্রনাথ দাস ৩ জুলাই বুধবার দুপুরে ট্রলারে মাছ ধরতে বেরিয়েছিলেন। ওই দিন বিকেলে বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় ট্রলার থেকে শেষ বার ফোনে স্ত্রী বন্দনাদেবীকে জানান, তাঁরা সাগরে চললেন। এফ বি নয়ন ট্রলারের মাঝি কানুর সঙ্গে ওই ছিল স্ত্রীর শেষ কথা। ৬ জুলাই শনিবার দুপুরে গভীর সমুদ্রে ট্রলারটি দুর্ঘটনায় পড়ার পরে ১৬ জন মৎস্যজীবীই নিখোঁজ হন। কানুর পরিবারে স্ত্রী, কিশোর ছেলে রুদ্রনীল ও মেয়ে অনন্যা ছাড়া রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা মধুসূধন ও অবলাদেবী। শোকে ক’দিন প্রায় উপোস করেই ছিল পরিবারটি। বৃহস্পতিবার সকালে এক প্রতিবেশী আনন্দবাজার পড়ে জানতে পারেন কানুর অবিশ্বাস্য ভাবে বেঁচে যাওয়ার খবর। তিনি খবরের কাগজটি নিয়ে হাজির হন কানুর বাড়িতে। ছবি দেখেই নিমেষে বদলে যায় বাড়ির পরিবেশ। কিছু ক্ষণ পরেই কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ইউনিয়েনের সদস্যরাও খবরের কাগজ নিয়ে যান ওই বাড়িতে। কানুর পরিবার স্বস্তি পেলেও সারা গ্রাম শোকাচ্ছন্ন। কারণ ওই গ্রামের আরও চার মৎস্যজীবী নিমাই দাস, গোপাল কয়াল, বাপি মণ্ডল ও সৌরভ সরকার ট্রলারডুবিতে এখনও নিখোঁজ।

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের চট্টগ্রাম বিভাগের কর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সাইফুল জানিয়েছেন, ভারতীয় মৎস্যজীবী রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধারকারী জাহাজ এম ভি জাওয়াদের সঙ্গে তাঁদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সাগরে ঝড়ের মুখে পড়ে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়া বেশ কয়েকটি ভারতীয় ট্রলারের মোট ৫১৬ জন মৎস্যজীবীকে তাঁরা নিরাপদে রেখেছেন। আবহাওয়া ভাল হলে তাঁদের ফিরে যেতে দেওয়া হবে। ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের তটরক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাঁরা আটকে পড়া ভারতীয় মৎস্যজীবীদের সঠিক সংখ্যা জানার চেষ্টা করছেন। তাঁদের ফিরতে যাতে অসুবিধা না হয়, সে বিষয়টি তাঁরা দেখছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Fisherman Namkhana Chittagong
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE