Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
UAE

UAE: প্রধানমন্ত্রী পদে প্রথম মহিলা, চমকে দিল আরব দেশ

গত ২৫ জুলাই সরকারকে বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট। যদিও এ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে পারছেন না অনেকেই। ‘রাজনীতির’ গভীর ছকই দেখতে পাচ্ছেন তাঁরা।

নাজলা বাউদেন রমধান

নাজলা বাউদেন রমধান

সংবাদ সংস্থা
তিউনিশ শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৪৪
Share: Save:

আরব দুনিয়ায় চমক! প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী পেল আরবের কোনও দেশ। উত্তর আফ্রিকার তিউনিশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হলেন নাজলা বাউদেন রমধান। প্রেসিডেন্ট কাইস সইদ প্রশাসনিক দায়িত্ব নেওয়ার দু’মাসের মধ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করে রমধানকে সেই পদে বসালেন। তিউনিশিয়াকে প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ‘উপহার’ দিয়ে দেশের মেয়েদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। যদিও এ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে পারছেন না অনেকেই। নারী-ক্ষমতায়নের থেকে ‘রাজনীতির’ গভীর ছকই দেখতে পাচ্ছেন তাঁরা।

গত ২৫ জুলাই প্রেসিডেন্ট কাইস সইদ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হিচেম মেচিচি-র সরকারকে বরখাস্ত করেন। পার্লামেন্টের কাজ স্থগিত করে দেন। সরকার ও বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে দেশের জনসাধারণ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়। কেউ তাঁকে সমর্থন করেন, কেউ বিরোধিতা। দেশজুড়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল হয়ে ওঠে। শুরু হয় গণবিক্ষোভ। ধাক্কা খায় দেশের অর্থনীতি। এ রকম অবস্থায় আচমকাই রাজনৈতিক পরিসরের সম্পূর্ণ বাইরে থাকা রমধানকে নয়া প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন কাইস। অবিলম্বে (কয়েক ঘণ্টা বা দিন) তাঁকে মন্ত্রিসভা গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, তিনি ও রমধান একযোগে দেশের উন্নয়নে কাজ করবেন। ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিউনিশিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম মন্ত্রিসভার নেতৃত্বে কোনও মহিলা। তিউনিশিয়ার জন্য, দেশের মেয়েদের জন্য গর্বের।’

এ নিয়ে দ্বিমত নেই কারও। প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সকলেই। কিন্তু সেই সঙ্গেই ঘুরপাক খাচ্ছে কিছু প্রশ্ন। রাজনীতির ময়দানে সেই অর্থে পরিচিতি বা ব্যাপ্তি, কোনওটাই ছিল না রমধানের। ৬৩ বছর বয়সি রমধান ছিলেন ‘ন্যাশনাল স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারস’-এ জিয়োলজির অধ্যাপিকা। পরবর্তী কালে উচ্চশিক্ষা ও বিজ্ঞান গবেষণা মন্ত্রকে ডিরেক্টর জেনারেল পদে নিযুক্ত ছিলেন। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সঙ্গে বহু প্রকল্পে কাজ করেছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলালেও সরাসরি কোনও মন্ত্রকের দায়িত্বে তিনি ছিলেন না। তা ছাড়া রাজনীতিতেও কোনও অভিজ্ঞতা নেই রমধানের। ফলে অনেকেরই প্রশ্ন, কী ভাবে প্রশাসন পরিচালনা করবেন তিনি! প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী যে স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতেন, রমধান তা পাবেন না বলেও মনে করছেন অনেকে। তাঁদের আশঙ্কা, রমধানের মন্ত্রিসভা আসলে কাইসের ‘পুতুল-সরকার’ প্রতিপন্ন হবে। এমনকি এ-ও বলছেন অনেকে, দেশের রাজনৈতিক টানাপড়েন সামলাতে এটা আসলে কাইসের ‘দাবার চাল’। রাজনীতি বিশেষজ্ঞ স্লাহেডিন জৌরচি যেমন বলছেন, ‘‘যদি রমধানের বায়োডেটা দেখেন, উনি অধ্যাপিকা। এ রকম স্পর্শকাতর পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা ওঁর নেই। আমি জানি না, উনি কী ভাবে এ রকম জটিল পরিস্থিতি সামলাবেন।’’ পার্লামেন্টের সদস্যরা বলছেন, এই নিয়োগ বেআইনি। তাঁদের বক্তব্য, এমপি-দের সায় ছাড়াই কী ভাবে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়!

তবে দেশবাসীর একাংশ আশাবাদী। তাঁদের কথায়, ‘‘এ বার এক মহিলা সংসারের হাল ধরছেন। অবিলম্বে সঞ্চয় শুরু করবেন। দেউলিয়া ব্যাঙ্ক, ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি, দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন, ভগ্ন চিকিৎসা ব্যবস্থায় এ বার হয়তো বদল আসবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

UAE Prime Minister
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy