ছবি: সংগৃহীত।
একটানা শোনা যাচ্ছে মেশিনগানের শব্দ। মুহুর্মুহু ফাটছ গ্রেনেড। মাঝে মাঝে মর্টার সেলের জোরালো বিস্ফোরণ! মঙ্গলবার দিনভর এমনই অভিজ্ঞতা হল বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তবর্তী জনপদগুলির বাসিন্দাদের। কারণ, সীমান্তের ও পারে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংড়ু টাউনশিপ থেকে কাওয়ারবিল পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে জুন্টা সেনা এবং বিদ্রোহীদের মরণপণ সংঘর্ষ।
এই পরিস্থিতিতে গৃহযুদ্ধে দীর্ণ মায়ানমার থেকে যাতে নতুন করে অনুপ্রবেশ শুরু না হয়, তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের বিজিবি এবং উপকূলরক্ষীরা টহলদারি বাড়িয়েছে বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানাচ্ছে। সোমবার প্রায় ৪৮ ঘণ্টার তুমুল লড়াইয়ের পর মায়ানমারের জুন্টা সরকারের সেনার পশ্চিম রাখাইনের প্রধান ঘাঁটি দখল করেছিল সে দেশের বিদ্রোহীরা। তার পরেই মংড়ু টাউনশিপ থেকে ১২৮ জন মায়ানমার সেনা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে ওই খবরে দাবি। তাঁদের হেফাজতে নিয়েছে বাংলাদেশ ফৌজ।
বাংলাদেশের কক্সবাজার সীমান্তবর্তী ওই শিবির থেকে আরাকান আর্মির নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী জোট কয়েকশো সেনাকে আটক করেছে বলেও সে দেশের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ (এনইউজি)-এর একটি সূত্রের দাবি। তার পর থেকে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতেও আশ্রয় নিতে ঢুকে পড়ছেন মায়ানমারের শরণার্থীরা। মিজ়োরামে ৫০ জনেরও বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন বলে সে রাজ্যের লায়ংটেলাই জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হচ্ছে।
গত কয়েক মাসের লড়াইয়ে রাখাইনের ৯০ শতাংশের বেশি এলাকা বিদ্রোহী তিন গোষ্ঠীর জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স, গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ) এবং রাখাইন প্রদেশে সক্রিয় সশস্ত্র জনজাতি বাহিনী আরাকান আর্মি দখল করেছে বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি। রাখাইন প্রদেশই মায়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আবাসভূমি।
প্রসঙ্গত, মায়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ নভেম্বর থেকে সে দেশের সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিল। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন ১০২৭’।
পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয়, আরাকান আর্মি, ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং ‘চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স’ (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ)-এর মতো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিও। জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। মায়ানমারের গণতন্ত্রকামী নেত্রী সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র মদতপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠী পিডিএফ-ও বিদ্রোহী শিবিরে যোগ দিয়েছে। বিদ্রোহীদের হামলার জেরে ইতিমধ্যেই সে দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকা জুন্টা সেনার হাতছাড়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy