ফাইল চিত্র।
দলের অন্দর থেকেই চাপ ক্রমশ বাড়ছে বরিস জনসনের উপরে। এ বার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করলেন আরও এক টোরি এমপি। হাউস অব কমন্সের ডিফেন্স কমিটির চেয়ারম্যান টোবায়াস এলউড আজ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বরিসের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনতে চিঠি দিয়েছেন তিনিও।
বরিসের পূর্বসূরি, টেরেসা মে-র মন্ত্রিসভায় ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন টোবায়াস। তাঁর আগে গত কাল আরও দুই স্কটিশ টোরি এমপি— পিটার অ্যালডোস এবং ডগলাস রস-ও বরিসের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার চিঠি দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে গেলে তাঁর দলেরই অন্তত ৫৪ জন এমপি-কে চিঠি দিতে হবে। টোবায়াসকে নিয়ে মোট কত জন এমপি বরিসের বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছেন, তা স্পষ্ট নয় অবশ্য। প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী যদিও বলেছেন, ‘‘ওই সংখ্যায় পৌঁছনো অনিবার্য।’’
লকডাউন চলাকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে কোভিড বিধি ভেঙে একাধিক পার্টির আয়োজন ও তাতে খোদ প্রধানমন্ত্রীর যোগদানকে কেন্দ্র করে আপাতত উত্তাল ব্রিটিশ রাজনীতি। সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে হইচই শুরু হতেই বরিস নিজে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিলেন, পার্টির বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। অথচ একাধিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বরিস নিজে ওই সব পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন। বিরোধী লেবার পার্টি তো বটেই, বরিসের নিজের দল কনজ়ারভেটিভ পার্টির বহু নেতা-মন্ত্রীও এই মিথ্যাভাযণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন।
ব্রিটিশ প্রশাসন সূত্রে খবর, গত সোমবার হাউস অব কমন্সে বরিসের সঙ্গে দেখা হয়েছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র। টেরেসাও নাকি চাইছেন বরিস ইস্তফা দিন। টেরেসা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন, তিনি কি কোভিড বিধি-নিষেধ নিয়ে অবহিত ছিলেন না, নাকি ভেবেছিলেন সেই বিধি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়! কনজ়ারভেটিভদের আর এক নেতা, প্রাক্তন মন্ত্রী ডেভিড ডেভিসও হাউস অব কমন্সে দাঁড়িয়ে বরিসের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘দোহাই আপনার, এ বার দয়া করে পদ ছাড়ুন!’’
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, টোরি এমপি-রা ইস্তফা প্রসঙ্গে বরিসের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। বাস্তবে ছবিটা কিন্তু একেবারেই তা নয়। বহু কনজ়ারভেটিভ নেতা-মন্ত্রী এখনও সংশয়ে যে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁরা আদৌ সমর্থন করবেন কি না। অনেকে তো এ-ও জানিয়েছেন, যে এ ভাবে প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়াতে দাঁড়াতে তাঁরা ক্লান্ত। টোবায়াস এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কি আদৌ জানেন যে, গোটা বিষয়টি নিয়ে তাঁর সতীর্থেরা কতটা উদ্বিগ্ন।’’
সাম্প্রতিক তদন্তে জানা গিয়েছে, আপাতত লকডাউন চলাকালীন পুলিশ ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের মোট ১২টি পার্টি নিয়ে খোঁজখবর করছে। যার মধ্যে চারটিতে প্রধানমন্ত্রী নিজে উপস্থিত ছিলেন। একটি প্রথম সারির ব্রিটিশ দৈনিক দাবি করেছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এবং ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দু’টি পার্টিতে বরিসকে দেখা গিয়েছিল। ওই দুই পার্টি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ১০ ডাউনিং স্ট্রিট। তবে তারা জানিয়েছ, এ বিষয়ে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়লে তারা তা জনসমক্ষে প্রকাশ করবে। এমনকি নিয়ম ভাঙার জন্য প্রধানমন্ত্রীর জরিমানা হয়েছে কি না, তা-ও তারা জানাবে। আপাতত পুলিশের কাছে এ বিষয়ে ৩০০টি ছবি ও প্রচুর ভিডিয়ো রয়েছে, যেগুলি তারা খতিয়ে দেখছে। বহু টোরি এমপি নাকি সেই রিপোর্টেরই অপেক্ষা করছেন। চূড়ান্ত রিপোর্ট দেখেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন, আদৌ বরিসের প্রধানমন্ত্রীর গদি ছাড়া উচিত, কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy