Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পড়শির সঙ্গে ‘ঝগড়া’ মিটিয়ে শান্তির নোবেল

গত বছর ২ এপ্রিল ক্ষমতায় আসেন আহমেদ। এসেই এক গুচ্ছ ‘সাহসী এবং বৈপ্লবিক’ সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
অসলো শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩৭
Share: Save:

প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে দু’দশকের যুদ্ধ মিটিয়ে ২০১৯-এর নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতে নিলেন ইথিয়োপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ আলি।

শুক্রবার অসলোয় নরওয়েজীয় নোবেল কমিটির চেয়ারপার্সন বেরিট-রাইট অ্যান্ডারসন এ বছরের পুরস্কার প্রাপকের নাম ঘোষণা করে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আলি বেশি দিন ক্ষমতায় আসেননি। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি ফেরাতে তিনি যে পদক্ষেপ করেছেন, তাকে স্বীকৃতি এবং উৎসাহ দেওয়া দরকার।’’ শুধু তাঁর নিজের দেশ ইথিয়োপিয়াতেই নয়, গোটা উত্তর-পূর্ব আফ্রিকায় শান্তি ফেরাতে আবির যে পদক্ষেপ, তার উল্লেখও করা হয়েছে নোবেল বিবৃতিতে।

গত বছর ২ এপ্রিল ক্ষমতায় আসেন আহমেদ। এসেই এক গুচ্ছ ‘সাহসী এবং বৈপ্লবিক’ সিদ্ধান্ত নেন তিনি। দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেন, বন্দি সাংবাদিকদেরও ছেড়ে দেওয়া হয়। কারাগারে বন্দিদের উপর অত্যাচারের কড়া নিন্দা করে রাজধানী আদিস আবাবার কুখ্যাত মেকেলয়াওয়ি সংশোধনাগার বন্ধ করে দেন প্রধানমন্ত্রী। তা ছাড়া, গত কয়েক বছরে ইথিয়োপিয়া ছেড়ে পালিয়েছিলেন যে সব রাজনৈতিক নেতারা, তাঁদের দেশে ফেরার আমন্ত্রণ জানান আবি। সেই ডাকে বিপুল সাড়াও মেলে। দেশের নিরাপত্তা ও বিচারব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পদে বহু মহিলাকে নিয়ে এসে এক ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ও করে ফেলেছেন তিনি।

তবে এই দেড় বছরে আহমেদের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ— প্রতিবেশী রাষ্ট্র এরিট্রিয়ার সঙ্গে ইথিয়োপিয়ার কুড়ি বছরেরও বেশি পুরনো যুদ্ধে ইতি টানা। এখন দু’টি দেশ প্রতিবেশী রাষ্ট্রে দূতাবাস খুলেছে। কূটনৈতিক সংযোগ স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের মধ্যে যোগাযোগও বেড়েছে। চালু হয়েছে উড়ান। এত কম সময়ে এ ভাবে যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি ফেরানোর ঘটনা আধুনিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।

আজ সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নোবেল কমিটির চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘কোনও একটি পক্ষ শান্তি প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ আলি এরিট্রিয়ার দিকে শান্তির হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট ইসাইয়াস আফওয়েরকি সেই হাত সাদরে গ্রহণ করেন। আশা করব এই শান্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে।’’

শুধু ইথিয়োপিয়া-এরিট্রিয়াতেই নয়, প্রতিবেশী সুদানেও শান্তি ফেরাতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন আহমেদ। সুদানের তিন দশকের শাসক ওমর আল-বশিরকে গ্রেফতারের পরে সে দেশে যে রাজনৈতিক টালমাটাল হয়েছিল, তা মেটাতে তৎপর হন আহমেদ। সাফল্যও মেলে। আফ্রিকা মহাদশের উত্তর-পূর্বের উপদ্বীপ ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ অঞ্চলে শান্তি, স্থিতাবস্থা ও অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব ফেরাতে গত দেড় বছরে প্রধানমন্ত্রী আহমেদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বলে নোবেল বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

৪৩ বছর বয়সি প্রধানমন্ত্রীর এই নোবেল স্বীকৃতি কি ‘একটু তাড়াতাড়ি’ এসে গেল না, আজ অসলোয় প্রশ্ন করেছিলেন এক সাংবাদিক। কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আবি যে কাজ করছেন, এই পুরস্কার শুধু তার জন্য নয়। তিনি যাতে এই কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, সেই উৎসাহ দিতেই তাঁকে সম্মান জানানো হল।

অন্য বিষয়গুলি:

Abiy Ahmed Ethiopia Nobel Peace Prize
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy