স্বজন হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন। ছবি: রয়টার্স।
ঘুমের মধ্যেই একটা জোর ঝটকা অনুভব করেছিলেন ফরহাদ। চোখ খুলতেই জানলার কাচ ভাঙার আওয়াজ কানে আসে তার। মনে হচ্ছিল, বাইরে থেকে কেউ যেন জানলা লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে মারছিল। চট করে বিছানা ছাড়েন ফরহাদ। মেঝেতে পা রাখতেই বেসামাল হয়ে পড়েন। তখনই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন কী ভয়ানক বিপদের মুখে পড়েছেন তাঁরা।
সিএনএন-কে ফরহাদ বলেন, “ছেলে, স্ত্রী এবং বয়স্ক বাবা-মা তখন ঘুমে আচ্ছন্ন। ওরা পাশাপাশি দুটো ঘরে শুয়ে ছিল। দৌড়ে যাই স্ত্রীর ঘরে। ওকে ডেকে তুলে বলি শিগ্গিরি ছেলেকে নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরোও। আমি বাবাকে নিয়ে আসছি।” ফরহাদের কথা শুনে তাঁর স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে সোজা বাড়ির বাইরে রাস্তায় এসে দাঁড়ান। ফরহাদ বাবা-মাকে নিয়ে বেরোনোর চেষ্টা করেন। প্রায় বেরিয়েও এসেছিলেন। কিন্তু গ্যারাজের ছাদটা আচমকাই ধসে পড়ল তাঁর বাবা-মায়ের উপর। তার নীচেই চাপা পড়ে গেল বয়স্ক মানুষ দু’জন। চোখের সামনে বাবা-মাকে মারা যেতে দেখে দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন ফরহাদ।
নিজেকে কোনও রকমে বাঁচিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন ফরহাদ। তখন চার পাশে চিৎকার, হাহাকার চলছিল। একের পর এক বাড়ি তাসের ঘরের মতো ধসে পড়ছিল। কোন দিকে পালাবেন ঠাওর করতে পারছিলেন না। আবার আরও একটা জোর ঝটকা এল। আর সঙ্গে সঙ্গে সামনের বহুতলটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল রাস্তায়। আর সেই বহুতলের ইট-কাঠ-পাথরের ধ্বংসস্তূপের তলায় চোখের সামনে চাপা পড়ে যায় ফরহাদের স্ত্রী এবং ছেলে।
তুরস্কের অজমারিন শহরে পরিবার নিয়ে থাকতেন ফরহাদ। কিন্তু এক নিমেষে গোটা শহরটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। চার দিকে শুধু হাহাকার, আর স্বজন হারানোর কান্নার আওয়াজ। ফরহাদ বলেন, “আমার চোখের সামনে বাবা-মা, স্ত্রী-ছেলেকে মরতে দেখলাম। এখন আমি কোথায় যাব। কাদের জন্য বাঁচব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy