Advertisement
E-Paper

ট্রাম্পের নির্দেশে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত বেআইনি: কোর্ট

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরে তাঁর নির্দেশে এই ওপিএম এবং ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই)— এই দু’টি দফতর ব্যাপক হারে সরকারি কর্মী বরখাস্ত করে চলেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৫ ০৮:৩০
Share
Save

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে আমেরিকার ‘অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট’ (ওপিএম) যে ভাবে কর্মী ছাঁটাই করছে, তা বেআইনি বলে রায় দিলেন সান ফ্রান্সিস্কোর এক আদালতের বিচারক। জেলা বিচারক উইলিয়াম অ্যালসাপের কথায়, ‘‘বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কোনও আইনই ওপিএম-কে প্রতিরক্ষা-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মী ছাঁটাই করার ক্ষমতা দেয় না। ওপিএম শুধু নিজেদের দফতরের কর্মীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অন্যান্য দফতরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও এক্তিয়ার তাদের নেই।’’

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরে তাঁর নির্দেশে এই ওপিএম এবং ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই)— এই দু’টি দফতর ব্যাপক হারে সরকারি কর্মী বরখাস্ত করে চলেছে। আমেরিকার গোয়েন্দা দফতর এফবিআই থেকে শুরু করে বিভিন্ন দফতরে এক দিকে যেমন কর্মীদের স্বেচ্ছাবসরের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, তেমনই শিক্ষানবিশ কর্মীদের হাতে সরাসরি ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইস্তফাপত্র। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস হারিয়েছে প্রায় ২৮০০ কর্মী, ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচার হারিয়েছে ৪৩০০ কর্মী, যাঁদের মধ্যে ৩৪০০ জন ন্যাশনাল ফরেস্ট সার্ভিসেসের দায়িত্বে ছিলেন এবং আমেরিকার প্রায় ২০ কোটি একর জমির দেখভাল করতেন তাঁরা। এ ছাড়া, ডিপার্টমেন্ট অব হাউসিং অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্টের ৫০ শতাংশ কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টিরিয়র থেকে ২৩০০ জনের চাকরি গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে হাজার খানেক কর্মী আমেরিকার সুবিস্তৃত ন্যাশনাল পার্কগুলির তত্ত্বাবধান করতেন। ন্যাশনাল ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসেসের প্রায় সমস্ত কর্মী
চাকরি হারিয়েছেন।

এ ভাবে ছাঁটাইয়ের বৈধতা নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন সরকারি কর্মী ও বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন। সানফ্রান্সিস্কোর জেলা আদালতে তেমনই একটি মামলা করেছিল পাঁচটি শ্রমিক ইউনিয়ন ও পাঁচটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সেই মামলার রায়েই বিচারক অ্যালসাপ এই মন্তব্য করেন। এই রায়কে ‘জয়’ বলে অভিহিত করলেও শ্রমিক ইউনিয়নগুলি যদিও পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে যথেষ্ট ওকাবিহাল নয়। আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, যাঁরা ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়েছেন, তাঁদের কাজে পুনর্বহাল করার বিষয়ে কোনও রায় বিচারক দেননি। শুধু ওপিএম-এর পদক্ষেপ যে ‘বেআইনি’ সেটা উল্লেখ করেছেন। এর ফলে ভবিষ্যতে ওপিএম একই ধরনের পদক্ষেপ করার আগে পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হবে।

শিক্ষানবিশ কর্মীরা, যে হেতু চাকরির ‘প্রবেশন পিরিয়ডে’ আছেন, তাই এঁদের চাকরি গেলে সরকারের পক্ষ থেকে এঁদের কোনও ক্ষতিপূরণ দিতে হয় না। প্রসঙ্গত, একই সংস্থার অধীনে, সম্প্রতি বিভাগ পাল্টালে বা পদোন্নতি হয়ে অন্য ভূমিকা নিলে সেটাকেও ‘প্রবেশনাল’ মনে করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার সরকারি কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। আর প্রায় ৭৫ হাজার কর্মী সরকারের দেওয়া স্বেচ্ছাবসরের শর্ত মেনে নিয়ে আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিয়ে চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন। যেমন, আমেরিকান নৌবাহিনীর প্রাক্তন সেনা গ্রেগরী হাউস। এক টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, প্রবেশন পিরিয়ডের মাত্র ছ’সপ্তাহ বাকি ছিল। গত সাড়ে ১০ মাস ধরে কাজের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রচুর প্রশংসাও পাচ্ছিলেন। গত সপ্তাহে হঠাৎ হাতে পেলেন ইস্তফাপত্র।

তবে প্রতিবাদ হচ্ছে। যে সব সরকারি দফতরে বিপুল ছাঁটাই হয়েছে, সেই দফতরগুলি থেকে প্রায় আশিটি মামলা করা হয়েছে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন আদালত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যেমন রায় দিল সান ফ্রান্সিস্কোর আদালত। আপাতত, চাকরি হারানোর বিরুদ্ধে আদালতের উপরে নির্ভর করা ছাড়া আমেরিকাবাসীর আর কোনও উপায় নেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Donald Trump USA Mass Layoff

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}