কমলা হ্যারিস। ছবি: এপি
তাঁকে বলা হচ্ছিল ‘লেডি ওবামা’। ২০২০ সালের নির্বাচনে জিতলে তিনিই হতেন আমেরিকার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট। ভারতীয় বংশোদ্ভূত সেই কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট দৌড় থেকে নিজের নাম সরিয়ে নিয়েছেন গত কাল। আর সেই খবর জানার পরই ‘আপনাকে মিস করব’ বলে টুইট করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ক্যালিফর্নিয়ার এই ডেমোক্র্যাট সেনেটরও টুইটের জবাব দিলেন ঝটপট। লিখলেন, ‘‘চিন্তা করবেন না মিস্টার প্রেসিডেন্ট। বিচারে আপনার সঙ্গে দেখা হবে।’’ ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের পক্ষে এত দিন ধরে জোর সওয়াল করে এসেছেন কমলা। প্রেসিডেন্টের টুইটের জবাবে তাই সেই প্রসঙ্গই টেনে এনেছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট দৌড় থেকে আচমকা নাম তুলে নেওয়ায় হতাশ কমলার সমর্থকেরা। অনেকেই ভেবেছিলেন, বারাক ওবামার পরে হয়তো আরও এক কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকার প্রেসিডেন্টের গদিতে বসতে চলেছেন। কিন্তু প্রচার চালানোর মতো যথেষ্ট অর্থের অভাবেই যে মূলত তাঁকে দৌড় থেকে সরে আসতে হল, তা সমর্থকদের একটি ই-মেলে জানিয়েছেন ৫৫ বছরের কমলা। লিখেছেন, ‘‘অনেক ভেবে-চিন্তে জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তটি নিতে হল। অর্থের প্রবল সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এই অবস্থায় প্রচার চালানো আমার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। কারণ আমি তো আর কোনও ধনকুবের নই।’’
এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে কমলা মূলত নিউ ইয়র্কের ধনকুবের তথা প্রাক্তন মেয়র মাইক ব্লুমবার্গকে ইঙ্গিত করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই ডেমোক্র্যাট নেতার জনপ্রিয়তা বাড়ছে হু হু করে। প্রচার চালানোর অঢেল অর্থ নিজেই জোগাতে পারছেন ব্লুমবার্গ। তার জন্য বাকি প্রার্থীদের মতো ‘ফান্ড রেজিং’-এর ব্যবস্থা করতে হচ্ছে না তাঁকে। কমলার বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন ম্যাসাচুসেটসের সেনেটর এলিজ়াবেথ ওয়ারেন। তাঁর সাফ কথা, ‘‘আমাদের দেশের নির্বাচনী নীতিটাই এমন। ধনকুবেররা সহজেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার সুযোগ পেয়ে যান।’’
কমলা নিজে অর্থ সঙ্কটের কথা বললেও প্রথম দিকে তাঁর প্রচারের জন্য বেশ ভালই অর্থ উঠছিল। সমীক্ষাগুলিতে দেখা গিয়েছে, মাঝ পথে হঠাৎই তাঁর জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করেন। প্রচার বিশেষজ্ঞেরা অনেকেই জানাচ্ছেন, এর জন্য কমলা নিজেও কিছুটা দায়ী। জাতীয় স্বাস্থ্য প্রকল্প নিয়ে ভোটরদের বিশেষ আশার আলো দেখাতে পারেননি তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর মধ্যে নতুন কী দেখতে পাওয়া যাবে, সেই প্রশ্নের জবাবও ঠিক মতো দিতে পারেননি কমলা। গত কয়েক মাসে দুই থেকে তাঁর রেটিং তাই নেমে গিয়েছিল ছয়ে।
কমলা সরে দাঁড়ানোর পরে রিপাবলিকানদের প্রার্থী তথা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কে দাঁড়াবেন, তার জন্য এখন লড়াই চলবে ১৫ জন ডেমোক্র্যাট নেতার বিরুদ্ধে। যাঁদের মধ্যে পাল্লা ভারী প্রাক্তন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। কমলার সরে যাওয়াকে দুর্ভাগ্যজনক বলে ব্যাখ্যা করেছেন বাইডেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁর মধ্যে অনেকেই ওবামার ছায়া দেখতে পাচ্ছিলেন। অত্যন্ত বুদ্ধিমতী মহিলা। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেও দারুণ ছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy