Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Donald Trump

বিক্ষোভ থামাতে সেনা নামানোর হুমকি, তীব্র সমালোচনার মুখে ট্রাম্প

দেশ জুড়ে চলা বিক্ষোভকে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদীদের কাজ বলেও উল্লেখ করেন ট্রাম্প।

সেনা নামানোর হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের।—ফাইল ছবি।

সেনা নামানোর হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের।—ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২০ ২০:৪৬
Share: Save:

হোয়াইট হাউসের দিকে বিক্ষোভ এগিয়ে আসতে দেখে বাঙ্কারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে। শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদে গোটা আমেরিকা যখন উত্তাল, তখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে এমন খবরে ছেয়ে গিয়েছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম। তা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছিল চিনও। বিষয়টিতে আমল না দিয়ে এ বার ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন, তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট। দেশের আইনশৃঙ্খলার ভার তাঁর হাতে। বিক্ষোভ থামাতে প্রয়োজনে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করে দেশে সেনা নামাবেন তিনি।

গত কয়েক দিনের মতো সোমবারও দিনভর বিক্ষোভ চলেছে আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশে। হোয়াইট হাউসের কাছের এক পার্কে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের হটাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। ছোড়া হয় ফ্ল্যাশ গ্রেনেডও। তার কিছু ক্ষণ পরেই হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেন থেকে সেনা নামানোর হুঁশিয়ারি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘‘আমি আপনাদের প্রেসিডেন্ট। দেশের আইনশৃঙ্খলার ভার আমার হাতে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের পাশে রয়েছি আমি। কিন্তু একদল নৈরাজ্যবাদী, হিংস্র অপরাধী যে ভাবে দাঙ্গা চালিয়ে যাচ্ছে তা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’’

দেশ জুড়ে চলা বিক্ষোভকে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদীদের কাজ বলেও উল্লেখ করেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, ‘‘বেশ কিছু প্রদেশ এবং সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন বিক্ষোভ থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় কোনও পদক্ষেপ করতে পারেনি তারা। দুর্বৃত্তদের আক্রমণে বেশ কয়েক কিছু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এটা কোনও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ নয়। এটা অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদীদের কাজ।’’

আরও পড়ুন: খুনই করা হয়েছে জর্জ ফ্লয়েডকে, দাবি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে​

এর পরেই সেনা নামানোর হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘‘বিক্ষোভ রুখতে সমস্ত প্রদেশ, সেখানকার গভর্নর ও মেয়রদের কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। রাস্তার প্রতিটি মোড়ে মোতায়েন করতে হবে জাতীয় নিরাপত্তারক্ষীদের (এনএসজি)। এর পরেও নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় কোনও প্রদেশ বা শহর যদি তা না করে, তা হলে আমি সেনাবাহিনী নামাব। তাতে চটজলদি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’’ রাস্তায় সশস্ত্র বাহিনী নামলেই সব দাঙ্গা-হাঙ্গামা বন্ধ হয়ে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প।

দেশ জুড়ে বিক্ষোভ থামাতে ট্রাম্প কী পদক্ষেপ করেন সোমবার সে দিকেই তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় না গিয়ে এ ভাবে সেনা নামানোর হুঁশিয়ারি দেওয়ায় ট্রাম্পের সমালোচনায় সরব হয়েছেন সে দেশের রাজনীতিকরা। এ নিয়ে টুইটারে তাঁকে এক হাত নেন প্রাক্তন মার্কিন বিদেশ সচিব তথা একদা ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টন। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে ছররা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার তীব্র সমালোচনা করে তিনি লেখেন, ‘‘নিজের দেশের নাগরিকদের উপর ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন প্রেসিডেন্ট। বিশ্বের কোথাও এই ধরনের আচরণের কোনও জায়গা নেই।’’

চেক জালিয়াতির অভিযোগে গত সপ্তাহে মিলিয়াপোলিসে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে হত্যা করে পুলিশ। দম আটকে আসছে বলে কাকুতি মিনতি করতে থাকলেও, তাঁকে মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে তার গলা চেপে ধরে থাকেন এক পুলিশকর্মী। সেই অবস্থাতেই মৃত্যু হয় জর্জ ফ্লয়েডের। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে পুলিশের সেই নৃশংস আচরণের দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। তার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা আমেরিকা। বহু জায়গায় বিক্ষোভ হিংসাত্মক আকার ধারণ করেছে।

আরও পড়ুন: শ্বাস নিতে পারছি না আমরাও, এই নতুন আমেরিকাকে চিনি না​

হিংসা, ভাঙচুর এবং লুঠতরাজে শামিল না হলেও সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিক্ষোভে নেমেছেন আমেরিকার বিশিষ্টজনেরাও। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য তাঁদের একটা বড় অংশই ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর সরকারকে দুষছেন। তাঁদের অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার ঢের আগে থেকেই বিদ্বেষমূলক ভাষণ দিয়ে আসছেন ট্রাম্প। লাগাতার ধর্মীয় ও বর্ণ বৈষম্যমূলক মন্তব্য করে এসেছেন তিনি। যে কারণে সংখ্যালঘু কৃষ্ণাঙ্গদের সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। আসন্ন নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পকে সরাতে কোনও কসুর করবেন না বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump George Floyd US US Army Protest Black Lives Matter Police Brutality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy