Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

মার্কিন দূতাবাসে হামলা, ভুগতেই হবে তেহরানকে, হুমকি ট্রাম্পের

মার্কিন দূতাবাসে আগুন ও ভাঙচুরের পরে চুপ নেই আমেরিকা। পশ্চিম এশিয়ায় এ বার শয়ে শয়ে সেনা পাঠাচ্ছে তারা।

দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে বুধবারও। এএফপি

দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে বুধবারও। এএফপি

সংবাদ সংস্থা 
বাগদাদ শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৫০
Share: Save:

মার্কিন দূতাবাসে আগুন ও ভাঙচুরের পরে চুপ নেই আমেরিকা। পশ্চিম এশিয়ায় এ বার শয়ে শয়ে সেনা পাঠাচ্ছে তারা। সেই সূত্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি, বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে হামলার বড়সড় মূল্য দিতে হবে তেহরানকে। ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতোল্লা খামেনেইও আজ মার্কিন বিমানহামলার কড়া নিন্দা করেছেন।

গত কাল কড়া নিরাপত্তায় মোড়া বাগদাদের গ্রিন জ়োন এলাকায় ঢুকে মার্কিন দূতাবাসে সরাসরি হামলা চালায় এক দল বিক্ষোভকারী। ইরাকি হলেও ওই দলটিকে মদত দিয়েছে ইরানই— অভিযোগ আমেরিকার। দূতাবাসের জানলা ভেঙে দেওয়ালে মার্কিন প্রশাসন-বিরোধী স্লোগান লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা। ইরাকের মাটি থেকে মার্কিন সেনা হটানোর দাবি তুলেছিল তারা। প্রতিবাদ হয়েছে বুধবারও। ইরানি সেনা রেভোলিউশন গার্ড কোরের জেনারেল কাসেম সোলেমানির সমর্থনে গতকাল স্লোগান দেয় বিক্ষোভকারীরা। মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োর দাবি, কালকের হামলায় জঙ্গিদেরই হাত ছিল। তাদের মধ্যে আবু মেহদি আল-মুহানদিস নামে এক জঙ্গির নামও করেছেন তিনি।

তেহরান সমর্থিত আধাসামরিক বাহিনী হাশেদ আল-শাবির সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হচ্ছে আবু মেহদি আল-মুহানদিস। এই গোষ্ঠীর মধ্যেই রয়েছে কাতায়েব হিজবুল্লা গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর ২৫ জন মার্কিন হানায় নিহত হওয়ার পরেই রবিবারে দূতাবাসের হামলার ঘটেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপার জানিয়েছেন, ৭৫০ জন সেনা তৈরি রয়েছে। ওই এলাকায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের মোতায়েন করা হবে। এসপারের মন্তব্য, ‘‘বাগদাদে কাল যে ঘটনার সাক্ষী হয়েছি আমরা, তার প্রেক্ষিতে মার্কিন আধিকারিক এবং দফতর ঘিরে আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ায় বিপুল পরিমাণ সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে আগাম সতর্কতা হিসেবে।’’ এসপারের মন্তব্যের আগে আবার মার্কিন প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছিলেন, অন্তত ৪ হাজার সেনা মোতায়েন করা হবে।

২০১৮ সালের মে মাসে ট্রাম্প আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান এবং ইরানের উপরে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেন। বাগদাদে দূতাবাসের হামলার পরে ফের মুখ খুলেছেন ট্রাম্প। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘কোনও প্রাণহানি অথবা যা ক্ষতি হয়েছে দূতাবাসের, তার জন্যই পুরোপুরি দায়ী ইরান। ওদের বড়সড় মূল্য দিতে হবে। এটা কোনও সতর্কতা নয়। এটা সরাসরি হুমকি। হ্যাপি নিউ ইয়ার।’’ তবে পরে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে এখনই লড়াইয়ে নামার কথা ভাবছেন না তাঁরা।

গত কাল হামলার সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিক ভাবে ইরাকের নেতাদের উপরে দায়িত্ব দিয়েছিল মার্কিন বিদেশ দফতর এবং পেন্টাগন। তবে ইরাকি সেনাকে স্রেফ হটিয়ে দিয়ে বিক্ষোভকারীরা দূতাবাস একেবারে তছনছ করে ফেলে। যত ক্ষণে মার্কিন নৌসেনা উড়ে আসে, দূতাবাসের তখন থমথমে দশা। কোথাও আগুন জ্বলছে, কোথাও ধোঁয়ার রেশ। ভাঙচুর হওয়া জিনিসপত্র পড়ে রয়েছে আশপাশে। অধিকাংশ বিক্ষোভকারী বেপাত্তা। কিছু লোক বাইরে তাঁবুতে তখনও রয়ে গিয়েছে। তাদের পরিকল্পনা ছিল, সন্ধের পরেও প্রতিবাদ চালানোর।

তেহরান জানিয়েছে, দায় নিতে হবে আমেরিকাকেই। তাদের বিমানহানাতেই ২৫ জন কাতায়েব হিজবুল্লা জঙ্গি প্রাণ হারায়। যার জবাব পেয়েছে আমেরিকা। শীর্ষ নেতা খামেনেই নাম না করে ট্রাম্পকে বিঁধে টুইটারে লেখেন, ‘‘ওই লোকটা টুইটে বলেছে, ‘বাগদাদের ঘটনার জন্য আমরা (আমেরিকা) ইরানকেই দায়ী বলে মনে করছি। ইরানকে এর জবাব দেওয়া হবে।’ প্রথমত, তুমি কিছুই করতে পারো না। দ্বিতীয়ত, যদি তুমি যুক্তিসঙ্গত ভাবে চিন্তা করো, যেটা তুমি পারো না, তা হলে তুমি ইরাক, আফগানিস্তানে ঘটে চলা অপরাধ নিজের চোখেই দেখতে। দেশগুলো কেন তোমায় ঘৃণা করে, বুঝতে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE