Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পরমাণু প্রকল্প নিয়ে বিতর্কে ট্রাম্পের বন্ধু

সম্প্রতি বল্টিমোরের এই আফ্রো-মার্কিন সেনেটরের বিরুদ্ধেই আক্রমণ শানিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁকে বিঁধতে গিয়ে তিনি বল্টিমোরকে তুলনা করেছেন ‘বিরক্তিকর, ইঁদুরভরা আবর্জনার স্তূপ’-এর সঙ্গে।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০১:৩৯
Share: Save:

তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোটিপতি বন্ধু। আর সেই সুবাদেই সৌদি আরবে নিজের পরমাণু বিদ্যুতের ব্যবসায় মুনাফা করতে চেয়েছিলেন ব্যবসায়ী টম বারাক। বস্তুত ট্রাম্পের উপরে প্রভাব খাটিয়ে তিনি ‘ওয়েস্টিংহাউস ইলেকট্রিক কর্প’ নামে একটি সংস্থা কিনে নিতে চেয়েছিলেন। ট্রাম্পকে সংস্থার বিশেষ দূত বানিয়ে সংস্থার প্রচারেও এগোবেন বলে ভেবেছিলেন। গত সোমবার বল্টিমোরের সেনেটর অ্যালাইজ়া কামিংসের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের রিপোর্ট এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে।

সম্প্রতি বল্টিমোরের এই আফ্রো-মার্কিন সেনেটরের বিরুদ্ধেই আক্রমণ শানিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁকে বিঁধতে গিয়ে তিনি বল্টিমোরকে তুলনা করেছেন ‘বিরক্তিকর, ইঁদুরভরা আবর্জনার স্তূপ’-এর সঙ্গে। কংগ্রেসের মার্কিন অশ্বেতাঙ্গ চার মহিলা সদস্যকে বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণের পরে কৃষ্ণাঙ্গ-প্রধান শহর বল্টিমোরকে নিয়ে ট্রাম্পের এই মন্তব্যে ফের সমালোচনা শুরু হয়েছে।

যদিও ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ টম বারাক যা যা পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছিলেন, তার কোনওটাতেই সফল হননি। তবে সেনেটরের রিপোর্ট থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট— সাধারণ কর্পোরেট বা
বিদেশি স্বার্থ নিয়ে কেউ এলে খুব সহজেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বা তাঁর প্রশাসনের প্রবীণ সদস্যদের কাছাকাছি চলে যাওয়া এখন আর কোনও বড় ব্যাপার নয়।

ডেমোক্র্যাট-প্রধান হাউসের কমিটি ওই সব তথ্য থেকে প্রশ্ন তুলেছে, ‘‘হোয়াইট হাউস কি এ বার প্রেসিডেন্টের বন্ধুদের লাভের জন্য মার্কিন নাগরিকদের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি লাটে তুলে দিতে চাইছে? পরমাণু অস্ত্র প্রসার রুখতে যে বিশ্বজনীন প্রচেষ্টা চলছে, লাভের জন্য সেটাও কি গুরুত্ব হারাবে?’’ রিপোর্ট থেকে উঠে এসেছে, সৌদি আরব এবং পশ্চিম এশিয়ার কিছু জায়গা মিলে মোট ৪০টি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা ছিল, যাতে সায় দিয়েছিলেন ট্রাম্পের প্রথম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন এবং ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ বন্ধু টম। এঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিল কিছু শিল্পগোষ্ঠী যার পুরোভাগে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন সেনা কমান্ডারেরা এবং হোয়াইট হাউসের বেশ কিছু প্রাক্তন অফিসার।

কামিংস তাঁর রিপোর্টে ব্যবহার করেছেন, ট্রাম্প-কন্যা ইভাঙ্কা, তাঁর স্বামী এবং ট্রাম্পের উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারের ব্যবসা সংক্রান্ত মেসেজ এবং ইমেলও। রিপোর্টটি তিনি তৈরি করেছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। হোয়াইট হাউসের থেকে এ বার এই সংক্রান্ত রিপোর্ট চাইতে পারে কামিংসের কমিটি। রিপোর্টের তথ্য থেকে স্পষ্ট, ট্রাম্প-সহ হোয়াইট হাউসের বেশ কিছু অফিসারের সঙ্গে ওঠাবসা করেছেন টম বারাক, তাঁর পরমাণু প্রকল্প থেকে লাভ সুনিশ্চিত করতে। এর আগের একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছিল, টমের এই প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু ২০১৬ সালে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই। রিপোর্টে রয়েছে, হোয়াইট হাউসের আইনজীবীরা ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকেই ওই প্রকল্পটির কাজ বন্ধ করতে বলেছিলেন কারণ তদানীন্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন স্বার্থের সংঘাত সংক্রান্ত আইন ভাঙছিলেন। সে বছরের পরের মাসেই তাঁকে সরিয়ে দেন ট্রাম্প।

গোটা ঘটনায় টম বারাকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, কমিটির সঙ্গে সহযোগিতা করা হচ্ছে তাঁদের তরফে। টম যেটা করতে চেয়েছিলেন, তাতে পশ্চিম এশিয়ারই উন্নতি হত, এটা রাজনৈতিক বিষয় নয়। হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে এখনও মন্তব্য করেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump Tom Barrack Nuclear Deal Middle East
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy