Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

শেষ লগ্নে বাজিমাতের আশা, হিলারির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ট্রাম্পের

কয়েক দিন আগেই মনে হচ্ছিল দূর অস্ত্। কিন্তু এখন হাই প্রোফাইল প্রতিপক্ষের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ লগ্নে এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন, তিনি লম্বা দৌড়ের ঘোড়া।

লাস ভেগাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

লাস ভেগাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২৫
Share: Save:

কয়েক দিন আগেই মনে হচ্ছিল দূর অস্ত্। কিন্তু এখন হাই প্রোফাইল প্রতিপক্ষের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ লগ্নে এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন, তিনি লম্বা দৌড়ের ঘোড়া। এবং দৌড়তে দৌড়তে শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউসেও পৌঁছে যেতে পারেন!

একটি সাম্প্রতিক জনসমীক্ষা বলছে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের সঙ্গে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার ফারাক মাত্র এক শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহে সেই ফারাকটা ছিল বারো শতাংশ। কী ভাবে এমন হাঁসফাঁস দশা হলো হিলারি শিবিরের?

ডেমোক্র্যাট সূত্রের খবর, ট্রাম্প শিবিরের আগ্রাসী প্রচার তো ছিলই। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে এফবিআই ডিরেক্টর জেমস কোমির তদন্ত। হিলারির ই-মেল নিয়ে নতুন করে তদন্তে নেমেছেন কোমি। ভোটে না থেকেও আপাতত তিনিই হিলারির দ্বিতীয় প্রতিপক্ষ। আর এই জোড়া প্রতিপক্ষকে সামাল দিতে দিতেই জেরবার হয়ে যাচ্ছেন প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি। ডেমোক্র্যাটদের দাবি, হিলারির সমর্থনের ঝুলিতে এই হঠাৎ-টান কোমির কারণেই। যা থেকে বাড়তি রসদ নিতে তৎপর ট্রাম্পও। হিলারিকে সরাসরি ‘অপরাধী’ বলেও বিঁধছেন তিনি। প্রায় প্রতিটি জনসভাতেই।

এফবিআই প্রধানের দাবি, সম্প্রতি বেশ কিছু নতুন ই-মেলের হদিস মিলেছে। বিদেশসচিব থাকাকালীন ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার নিয়ে হিলারির বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরুর ঘোষণা করেছেন তিনি। কয়েক দিন আগেই তদন্ত চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সার্চ ওয়ারেন্ট পেয়েছে এফবিআই। নতুন পাওয়া ই-মেলে গোপনীয় কিছু আছে কি না, সেটাই খতিয়ে দেখবে তদন্তকারী সংস্থাটি।

অথচ এই জেমস কোমি-ই গত জুলাইয়ে মার্কিন কংগ্রেসকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, টানা এক বছরের তদন্তে হিলারির বিরুদ্ধে তাঁরা অপরাধমূলক কিছুই পাননি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আট দিন বাকি থাকতে তা হলে এই নতুন তদন্তের ঘোষণা কেন? ‘ষড়যন্ত্র এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’— বলছে হিলারি শিবির। প্রথমে নির্বিকার থাকলেও, শনিবার ফ্লোরিডার সভায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন হিলারি নিজেও। এফবিআই-এর এই পদক্ষেপের ব্যাখ্যা চেয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ভোটের মুখে বিপক্ষ শিবিরের হাতে অস্ত্র তুলে দিতেই কোমির এই ‘নীতিবিরুদ্ধ’ পদক্ষেপ।

তিনটি প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে ট্রাম্পকে ধরাশায়ী করে দিয়েছিলেন হিলারি। একের পর এক যৌন হেনস্থার অভিযোগে ধনকুবের নিজেও যথেষ্ট বিপাকে ছিলেন। কিন্তু হিলারির বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরুর ইঙ্গিতে ট্রাম্প শিবিরের পালেও হাওয়া লেগেছে। গত দু’দিনের জনসভায় এফবিআই ডিরেক্টরের হয়ে গলা ফাটাতেও শোনা গিয়েছে ট্রাম্পকে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘অসামান্য সাহসের পরিচয় দিয়েছেন কোমি।’’

এফবিআই ডিরেক্টরের এই সিদ্ধান্ত যে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, তা প্রমাণে মরিয়া হিলারি শিবিরও। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে একটি চিঠির কথাও তুলে ধরেছেন তারা। ২০১২ সালে চিঠিটি লিখেছিলেন তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার। তাতে বলা হয়েছিল, ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে, প্রশাসন কিংবা তদন্তকারী সংস্থার তরফে এমন কোনও পদক্ষেপই কাম্য নয়। এমনটা চাননি বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেলও। ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ, কোমির ঘোষণায় ঠিক সেটাই হয়েছে। ভোটের ঠিক আগে ধস নেমেছে হিলারির জনপ্রিয়তায়।

এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মার্কিন কূটনীতিকদেরও একাংশ। তাঁদের দাবি, তদন্ত জারি থাকলে অথবা তাতে বিন্দুমাত্র বিচ্যুতির লক্ষণ দেখা দিলেই হিলারির পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। দেশের প্রাক্তন বিদেশসচিব হিসেবে নেওয়া বেশ কিছু সিদ্ধান্তের জন্য হিলারি এমনিতেই বিতর্কিত। নিজের দলের মধ্যেও শতকরা ৩০ শতাংশ তাঁকে হোয়াইট হাউসে দেখতে চায় না।

তবে এমনটা নয় যে, হিলারির সমর্থন কমছে মানেই ট্রাম্পের ঝুলি উপচে পড়ছে। একটি জনমত সমীক্ষা সমানে-সমানে টক্করের কথা বললেও, অনেকেই বলছেন, দলের বাইরে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বেশ কম। তাঁর ভরসা হিলারির কেলেঙ্কারি ফাঁসেই।

ট্রাম্প তাই চাইছেন, হোক সর্বনাশ। ভোটের আগেই!

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump Hillary president election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE