গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
প্রশ্ন একটাই। শেক্সপিয়রের ভাষা ধার করে বলতে হয়, ‘টু বি অর নট টু বি’! অর্থাৎ, হাউসে ইমপিচড হলেও সেনেটে কী হতে চলেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের?
আমেরিকান সংসদের নিম্নকক্ষে নজিরবিহীন ভাবে দ্বিতীয় বার ইমপিচড হলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতা রদবদলের এক্কেবারে মুখোমুখি এসে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর ৬ দিন পরে ‘প্রাক্তন’ হয়ে যাবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সরকারি ভাবে ক্ষমতাসীন হবেন জো বাইডেন। এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে? বর্তমান পরিস্থিতিতে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া কি পুরোপুরি সম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব? সাংবিধানিক বিধিই বা কি বলছে, দেখে নেওয়া যাক।
আমেরিকান কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ বা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। সেখানে ডেমোক্র্যাটরা তো বটেই, রিপাবলিকানদের ১০ জনও ট্রাম্পের বিপক্ষে অর্থাৎ ইমপিচমেন্টের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
কী হল নিম্নকক্ষে, দেখে নেওয়া যাক এক নজরে।
গ্রাফিক: শৌভিক
এ বার উচ্চকক্ষ অর্থাৎ সেনেটে যাবে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব। সেখানেও রয়েছে দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সেনেটে উপস্থিত দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন লাগবেই। সেনেটের মোট সদস্যসংখ্যা ১০০। নিম্নকক্ষে ১০ প্রতিনিধি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বা ইমপিচমেন্টের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন পেতে গেলে ডেমোক্র্যাটদের জোগাড় করতে হবে অন্তত আরও ১৯ জন সেনেটরকে। সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
সাংবিধানিক এই প্রক্রিয়ার বাইরে ট্রাম্পও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন। ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটিই অভিযোগের পক্ষে সায় দিয়েছে নিম্নকক্ষ— ‘বিদ্রোহে প্ররোচনা দেওয়া’। ডেমোক্র্যাটরা যাকে অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। অর্থাৎ অভিযোগ এই যে, ক্যাপিটলে হামলার ঘটনায় সরাসরি উস্কানি দিয়েছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। বুধবার ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব নিম্নকক্ষে গৃহীত হওয়ার পর এক ভিডিয়ো বার্তায় ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘ক্যাপিটলে হামলার ঘটনায় তিনি দুঃখিত। কোনও ভাবেই এই ধরনের হামলা সমর্থন করা যায় না।’’
আরও পড়ুন: আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসাবে দু’বার হাউসে ইমপিচড হলেন ট্রাম্প
ট্রাম্পের আত্মপক্ষ সমর্থনের ক্ষেত্রেও যুক্তি রয়েছে। ক্যাপিটলে হামলার আগের দিন তিনি বলেছিলেন, ‘ফাইট’, অর্থাৎ যুদ্ধ কর। ‘যুদ্ধ কর’ এই শব্দ যে তিনি আক্ষরিক অর্থেই গন্ডগোল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, এটা প্রমাণ করা কঠিন।
আরও পড়ুন: দেশজ রাজনীতির সৌরমণ্ডলে কেডি হলেন আধুনিক মগনলাল মেঘরাজ
তা হলে শেষ বিচারে কী হতে পারে ট্রাম্পের?
এটা ঘটনা যে, হাউসে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। এমনটাও হতে পারে, কিছু দিন পর এই প্রস্তাব সেনেটে পাঠানো হল। তত দিনে সেনেটে ডেমক্র্যাটদের প্রয়োজনীয় প্রার্থী থাকার সম্ভাবনা বেশি। তখন সেনেটে এই প্রস্তাব পাশ হতে পারে। কিন্তু আমেরিকার ইতিহাসে এমনটা কখনও এর আগে হয়নি। অর্থাৎ, পদ থেকে সরার পর কোনও প্রেসিডেনন্টকে ইমপিচ করা হয়নি এর আগে। এখানেই প্রশ্ন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে কি ইমপিচ করা যেতে পারে? আমেরিকার সংবিধান বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ‘লেট ইমপিচমেন্ট’ বৈধ। কারণ, ইমপিচমেন্টের লক্ষ শুধু বর্তমান কোনও পদাধিকারীকে পদ থেকে সরানো নয়, ভবিষ্যতে যাতে তিনি সেই পদে ফের প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে পারেন, সে দিকটা নিশ্চিত করা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy