Dolly Oesterreich, The woman who kept her secret lover in the attic for years dgtl
Love Story
Love story: স্বামীকে লুকিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে একই বাড়িতে ১০ বছর! ডলি-ওট্টোর গল্প নিয়ে ফিল্মও হয়েছে
ওয়ালবুর্গা ওয়েসটেরেইচ। ডাকনাম ডলি। তিনি ছিলেন একজন জার্মান। বিয়ে করেছিলেন আমেরিকার ধনী কাপড় ব্যবসায়ীকে। তাঁর নাম ছিল উইলিয়াম।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২১ ১০:০৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
ওয়ালবুর্গা ওয়েসটেরেইচ। ডাকনাম ডলি। তিনি ছিলেন একজন জার্মান। বিয়ে করেছিলেন আমেরিকার ধনী কাপড় ব্যবসায়ীকে। তাঁর নাম ছিল উইলিয়াম।
০২১৯
ডলি, তাঁর স্বামী উইলিয়াম এবং তাঁর প্রেমিক ওট্টো। এই ত্রিকোণ প্রেম ঘিরে এক সময় এক অদ্ভুত ঘটনা সামনে এসেছিল।
০৩১৯
স্বামী এবং প্রেমিক ওট্টোর সঙ্গে ১০ বছর একই ঘরে থাকতেন ডলি। তবে মজার বিষয় ছিল ১০ বছরের একটি দিনও তাঁর স্বামী সে সত্য জানতে পারেননি। ঘরের মধ্যে ওট্টোকে এমন একটি জায়গায় লুকিয়ে রেখেছিলেন ডলি যে কোনওদিন তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতির আঁচটুকুও পাননি তিনি।
০৪১৯
তাঁদের বাড়ির চিলেকোঠায় এই ১০ বছর লুকিয়ে ছিলেন ওট্টো। স্বামী উইলিয়াম কাজে বেরিয়ে গেলেই ডলির কাছে নেমে আসতেন তিনি। উইলিয়াম আসামাত্রই আবার নিজের জায়গায় চলে যেতেন।
০৫১৯
ডলির পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। ১২ বছর বয়সে তিনি উইলিয়ামের কাপড়ের কারখানায় কাজে যোগ দেন। সুন্দরী এবং বুদ্ধিমতী ডলির প্রতি খুব সহজেই কারখানার পুরুষ কর্মীরা আকৃষ্ট হতেন। উইলিয়ামও ব্যতিক্রম ছিলেন না।
০৬১৯
১৭ বছর বয়সে উইলিয়ামকে বিয়ে করেন তিনি। ১৯১৩ সালে ডলির বয়স যখন ৩৩ বছর, স্বামী উইলিয়ামই তখন তাঁর সঙ্গে ১৭ বছরের ওট্টো সানহুবারের পরিচয় করিয়ে দেন।
০৭১৯
ওট্টোও ছিলেন উইলিয়ামেরই কারখানার এক কর্মচারী। তিনি জামাকাপড় সেলাই করতেন। একবার ডলির সেলাই মেশিন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তখনই ওট্টোকে বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন উইলিয়াম।
০৮১৯
প্রথম পরিচয় থেকেই একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। মাঝে মধ্যেই সেলাইয়ের অজুহাতে ওট্টোকে বাড়িতে ডেকে পাঠাতে শুরু করলেন ডলি। উইলিয়াম বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেই ডলির কাছে আসতে শুরু করলেন ওট্টো।
০৯১৯
প্রতিবেশীদের কাছে তিনি ওট্টোকে নিজের দূর সম্পর্কের ভাই বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও বিষয়টি প্রতিবেশীরা ভাল ভাবে নিচ্ছিলেন না। সে কারণে ওট্টোকে বাড়িতে লুকিয়ে রাখাই শ্রেয় মনে করেন ডলি।
১০১৯
ডলির প্রেমে এতটাই পাগল ছিলেন ওট্টো যে কারখানার কাজ ছেড়ে তিনি প্রেমিকার বাড়িতে পাকাপাকি ভাবে থাকতে চলে আসেন। বাড়ির ছোট্ট চিলেকোঠায় ঠাঁই হয় তাঁর।
১১১৯
সারা রাত চিলেকোঠায় থাকা আর উইলিয়াম বেরিয়ে গেলেই নীচে নেমে আসা। এই ছিল তাঁর জীবন। পুরো বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ছিলেন উইলিয়াম। ১৯১৮ সালে স্ত্রী ডলিকে নিয়ে লস অ্যাঞ্জেলস চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি।
১২১৯
ওট্টো এবং ডলি পড়েন মহা সমস্যায়। কিন্তু বুদ্ধিমতী ডলি ঠিক একটি উপায় বার করে নেন। লস অ্যাঞ্জেলসেও এমন একটি ঘর তিনি বাছেন যার চিলেকোঠা রয়েছে। ডলি এবং উইলিয়াম নতুন বাড়িতে চলে যাওয়ার কিছু দিন পর ওট্টোও সেখানে গিয়ে আগের মতোই থাকতে শুরু করেন।
১৩১৯
এ ভাবে ১০ বছর কেটে যায়। ওট্টোর উপস্থিতি বিন্দুমাত্র টের পাননি উইলিয়াম। এক রাতে স্ত্রী ডলির সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি শুনে পিস্তল হাতে নীচে নেমে আসেন ওট্টো। উইলিয়ামকে গুলি করে খুন করেন তিনি। পুলিশের কাছে ঘটনাটিকে ডাকাতির রূপ দিয়েছিলেন ডলি।
১৪১৯
এর পরেও ওই বাড়িতে দু’জনে আগের মতোই একসঙ্গে থাকতেন। কিন্তু এর কয়েক বছর পর ডলির জীবনে নতুন পুরুষের আগমণ ঘটে। এক আইনজীবীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
১৫১৯
স্বামীর মৃত্যুর পর ওই আইনজীবীই তাঁর হয়ে মামলা লড়েছিলেন। পরে ডলির কিছু আচরণ তাঁর সন্দেহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আইনজীবীর সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন রয় ক্লাম্ব নামে আরও এক প্রেমিক জুটে গিয়েছিল তাঁর। রয়কে তিনি স্বামীকে খুন করা ওই পিস্তল লুকিয়ে রাখতে বলেছিলেন। অজুহাত দিয়েছিলেন, ওই পিস্তলটি নাকি খুনে ব্যবহার করা পিস্তলের মতোই দেখতে। পুলিশ তাঁকে তাই অহেতুক সন্দেহ করতে পারে।
১৬১৯
পরবর্তীকালে রয়ের সঙ্গে পরিচয় হলে তাঁর থেকে সবটা শুনে এবং ডলির কথাবর্তার মধ্যে অসঙ্গতি লক্ষ করে পুলিশের কাছে যান ওই আইনজীবী। পুলিশ পিস্তল উদ্ধার করে। স্বামীকে খুনের অভিযোগে ডলি গ্রেফতার হন। জেলবন্দি ডলি আইনজীবী প্রেমিকের কাছে সে সময় বাড়ির চিলেকোঠায় থাকা ‘ভাই’ ওট্টোর দেখভালের অনুরোধ করেছিলেন।
১৭১৯
কিন্তু চিলেকোঠার দরজা খুলে ওট্টোর সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর আইনজীবী পুরো ঘটনাটি জানতে পারেন। ওট্টো আসলে তাঁর প্রেমিক এবং কী ভাবে তাঁরা দু’জনে উইলিয়ামকে খুন করেছিলেন, সবটা জেনে ফেলেছিলেন তিনি।
১৮১৯
ওট্টো এবং ডলি দু’জনের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণও হয়। পরবর্তীকালে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ওট্টো নিজের নাম বদলে কানাডায় চলে যান। সেখানে অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করেন তিনি। অন্য দিকে ডলি লস অ্যাঞ্জেলসেই থাকতেন। ১৯৬১ সালে ৮০ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।
১৯১৯
তাঁদের নিয়ে একাধিক ছবি হয়েছে। ‘দ্য ব্লিস অব মিসেস ব্লসম’, ‘দ্য ম্যান ইন দ্য অ্যাটিক’। ২০১৭ সালে ইনভেস্টিগেশন ডিসকভারির ‘এ ক্রাইম টু রিমেম্বার’ সিরিজে ডলি এবং ওট্টোর কাহিনি সম্প্রচারিত হয়েছে।