Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার জন্যই কি বিপদে ইউরোপ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এ নিয়ে বারবার সতর্ক করে চলেছে। কিন্তু সেই কথা কানে না-তোলার অন্যতম উদাহরণ ইউরোপ।

বিক্ষোভ: সরকারের স্বাস্থ্যনীতি এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ফের সরকারি বিধিনিষেধের প্রতিবাদে জমায়েত। রবিবার জার্মানির ডুসেলডর্ফে। এএফপি

বিক্ষোভ: সরকারের স্বাস্থ্যনীতি এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ফের সরকারি বিধিনিষেধের প্রতিবাদে জমায়েত। রবিবার জার্মানির ডুসেলডর্ফে। এএফপি

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:০০
Share: Save:

‘সুস্থ’ হয়ে উঠলেই যে বিপদ কেটে গিয়েছে, এমনটা ভাবার কিছু নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এ নিয়ে বারবার সতর্ক করে চলেছে। কিন্তু সেই কথা কানে না-তোলার অন্যতম উদাহরণ ইউরোপ। সামনেই শীত। স্রেফ কথা না-শোনায় আরও বড় মাসুল দিতে হতে পারে ইউরোপকে, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

সংক্রমণ কমতেই ব্যবসা-বাণিজ্য পুরোদমে শুরু করে দিয়েছিল ইউরোপ। খুলে দেওয়া হয়েছিল স্কুল। এমনকি পর্যটনকে চাঙ্গা করতে ইউরোপের মধ্যে সফরে নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে দেওয়া হয়। বিভিন্ন ধরনের ছাড় দেওয়া শুরু করেছিল হোটেল-রেস্তরাঁগুলি। এ বিষয়ে সাহায্য করেছে সরকারও। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত প্রচারও করেছে তারা। যেমন, নির্দিষ্ট কোনও একটি হোটেলে উঠলে মাথাপিছু ৫০ ইউরো ছাড়। দীর্ঘ চার-পাঁচ মাস ঘরবন্দি থাকার পরে তাই গরমের ছুটিতে বেরিয়ে পড়েছিলেন অনেকেই। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এতেই হুড়মুড় করে বেড়েছে সংক্রমণ।

ও দিকে, স্কুল খুলতে বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রমণ বেড়ে যায়। কোয়রান্টিনে যেতে হয়েছে স্পেনের রাজকন্যাকেও। স্কুলে তার সহপাঠী করোনা-আক্রান্ত হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটেনে দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে ৫০ হাজার ছুঁয়েছে। মৃত্যুও বাড়ছে। ‘ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজ়িজ় প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল’ (ইসিডিসি)-র দেওয়া তথ্য তেমনটাই বলছে। ভারত, আমেরিকার সঙ্গে তুলনা করলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কম। কিন্তু দেশগুলোর জনসংখ্যা অনুযায়ী বিচার করলে ইউরোপে মৃত্যুহার ভারতের তুলনায় অনেক বেশি। ইউরোপের জনসংখ্যা ৭৫ কোটি। আমেরিকায় জনসংখ্যা ৩৩ কোটি। যে সময়ে ইউরোপে সংক্রমণ ঘটেছে ৪৪ লক্ষ এবং মৃত্যু ২ লক্ষ ১৭ হাজারের বেশি, সেই সময়ে আমেরিকায় সংক্রমিতের সংখ্যা ৬৭ লক্ষ আর মৃত্যু ১ লক্ষ ৯৮ হাজার।

পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ডোমিটার্স’-এর তথ্য অনুযায়ী ভারতে মৃত্যুহার ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে ৬৩ জন। স্পেনে সেখানে ১০ লাখে মারা গিয়েছেন ৬৫২ জন। ফ্রান্সে ৪৭৯ জন। ব্রিটেনে ৬১৪ জন। ইটালিতে ৫৯১ জন।

প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা লঘু করতেই সপ্তাহান্তে বিচ-পার্টি করা শুরু করে দিয়েছিল ব্রিটেনবাসী। পাবগুলোতে উপচে পড়ছিল ভিড়। এ ধরনের বেপরোয়া কাজকর্মকেই কাঠগড়ায় তুলেছে ব্রিটিশ প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে বরিস জনসনের সরকার ঘোষণা করেছে, কোনও ব্যক্তি করোনা-আক্রান্ত হলে তাঁকে ও তাঁর সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিদের নজরে রাখা হবে। এঁদের পুরোপুরি আইসোলেশনে থাকতে হবে। নিয়ম না-মানলেই এক হাজার পাউন্ড থেকে ১০ হাজার পাউন্ড জরিমানা। কোনও দরিদ্র ব্যক্তি ঘরবন্দি হয়ে পড়লে তাঁকে ৫০০ পাউন্ড অর্থসাহায্য করা হবে সরকারের পক্ষ থেকে।

ফ্রান্সেও সব পর্যটনস্থল খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেন নদীর তীরে উপচে পড়ছিল ভিড়, প্যারিসের রাস্তায় অসংখ্য মানুষ... এ ভাবেই দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। আগেও এক দিনে এত সংক্রমণ ঘটেনি। নেদারল্যান্ডস প্রশাসন বলছে, এ ভাবে চললে তাদেরও দিনে সংক্রমণ ১০ হাজার ছাড়াবে। হু-এর ইউরোপ শাখার প্রধান হান্স ক্লুগ জানাচ্ছেন, মার্চেও এই ছবি দেখেনি ইউরোপ। তাঁর কথায় এর অন্যতম কারণ, ‘‘সংক্রমণ রুখতে যে সব নিয়ম জারি করা হয়েছিল, একটু সেরে উঠতেই তা তুলে নিয়েছিল ইউরোপ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy