মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।—ছবি রয়টার্স।
অনেকেই মনে করছেন, গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গে করোনা সংক্রমণ কমে যাবে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সেই সুরেই বলেছেন, ‘‘গরমে সাধারণত এই ধরনের ভাইরাসের মৃত্যু হয়।’’ বাস্তবে কিন্তু ছবিটা আলাদা। গত ডিসেম্বরে শেষে চিনে শুরু হওয়া করোনা সংক্রমণ মার্চে মাসেও (যখন কি না গরমকাল) হু হু করে ছড়াচ্ছে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলিতে। বাড়ছে মৃত্যুর হার। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে সত্যিই কি তাপমাত্রা ওঠা-নামার সঙ্গে করোনা সংক্রমণের যোগ রয়েছে?
বিজ্ঞানীরা অবশ্য এখনও পর্যন্ত এমন প্রমাণ পাননি। তাঁরা জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ -এ আক্রান্তের লক্ষণগুলি প্রাথমিক ভাবে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সাধারণ জ্বরজারির মতোই। দু’টোই একই ভাবে সংক্রামক। মূলত শ্বাসযন্ত্রে থাবা বসায়। দু’টো ক্ষেত্রেই শ্বাসকষ্ট হতে পারে। যা থেকে প্রাণঘাতী নিউমোনিয়ায় ভুগতে পারেন রোগী। কিন্তু কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা অনেক বেশি সঙ্কটজনক হতে পারে। করোনায় সংক্রমণের হারও অনেকটা বেশি।
এমনিতে শীতকালের তুলনায় গরমে ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ বেশ খানিকটা কমে যায়। চিকিৎসকদের মতে, এর দু’টো কারণ। প্রথমত, ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসের সক্রিয়তা কমে-বাড়ে। দ্বিতীয়ত, আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বদলাতে থাকে।
সাধারণ ফ্লু জাতীয় ভাইরাসের কথাই ধরা যাক। শীতের ঠান্ডা-শুষ্ক আবহাওয়ায় এই ধরনের ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত বেশি। তা ছাড়া শীতকালে সূর্যরশ্মি ভূ-পৃষ্ঠে তির্যক ভাবে পড়ায় অতিবেগুনি রশ্মির পরিমাণও কম হয়। যা ভাইরাসের বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক। অন্য দিকে, শীতকালে রাতের তুলনায় দিন ছোট। ফলে ত্বকে ভিটামিন ডি সংশ্লেষ এবং মেলাটোনিনের পরিমাণ কমে যায়। যার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়াও, শীতকালে অনুষ্ঠান, জমায়েতে ভিড় বেশি হওয়ায় সংক্রমণের আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
কয়েক ধরনের করোনা ভাইরাস আছে যেগুলির প্রকোপ শীতে বাড়ে। কিন্তু কোভিড-১৯ সংক্রমণের ক্ষেত্রে তাপমাত্রার বাড়া-কমা আদৌ কোনও প্রভাব ফেলে কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়। ২০০২-২০০৩ সালে সার্সের সময়ে উত্তর গোলার্ধে শীতকালে ছড়িয়ে পড়া ওই সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি বেড়ে গিয়েছিল মে মাসে। ঠিক একই ভাবে মার্স সংক্রমণ ছড়িয়েছিল গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলিতে। মার্স বা সার্সও, দুয়ের জন্যই দায়ী এক ধরনের করোনা ভাইরাস। ২০০৯-১০ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জা অতিমারির ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে, গরমেই সংক্রমণ সবচেয়ে ছড়িয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy