Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Junglemahal

জার্মানিতে বিপন্ন জঙ্গলমহলের যুবা

জার্মানির বার্লিন থেকে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসককে ই-মেলে সমস্যা জানিয়ে সাহায্য চেয়েছেন জনা মান্ডি নামে পিতৃহীন ওই যুবক।

জনা মান্ডি

জনা মান্ডি

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০৪:২৬
Share: Save:

অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে এমবিএ পড়তে গিয়েছেন। আংশিক সময় চাকরি করেই পড়ার খরচ চালাচ্ছিলেন। কিন্তু করোনার কোপে জঙ্গলমহলের সেই আদিবাসী যুবকই এখন সঙ্কটে। কাজ খুইয়ে এক বেলা খেয়ে দিন কাটছে তাঁর।

জার্মানির বার্লিন থেকে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসককে ই-মেলে সমস্যা জানিয়ে সাহায্য চেয়েছেন জনা মান্ডি নামে পিতৃহীন ওই যুবক। জুলাইয়ে তাঁর কোর্স শেষ হওয়ার কথা। তাঁর আর্জি, আগামী তিন মাস তাঁর বিদেশে থাকার খরচের বন্দোবস্ত করা হোক। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলছেন, ‘‘কী ভাবে সাহায্য করা যায় সেটা দেখছি।’’

ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের পালোইডাঙা গ্রামে বাড়ি জনার। তাঁর বাবা, প্রয়াত ধীরেন্দ্রনাথ মান্ডি ছিলেন রেল আরক্ষা বাহিনীর কর্মী। ২০১৬-র মাঝামাঝি ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হন তিনি। তাঁর চিকিৎসায় বহু টাকা খরচ হয়। ২০১৭ সালের মে মাসে ধীরেন্দ্রনাথ প্রয়াত হন। ওই বছরেই বার্লিনে এমবিএ (ইন্টারন্যাশন্যাল মার্কেটিং) পড়ার সুযোগ আসে জনার। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বার্লিনের আইইউবিএইচ ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনির্ভাসিটিতে এমবিএ পড়তে যান জনা। অস্থায়ী চাকরি জুটিয়ে খরচ চালাতে থাকেন।

সব ঠিকই চলছিল। গত জানুয়ারির শেষে করোনার কবলে পড়ে জার্মানি। যে বেসরকারি সংস্থায় চুক্তিভিত্তিক কাজ করছিলেন জনা, কিছুদিন আগে সেটি কর্মীদের ছাঁটাই করে লক-আউট ঘোষণা করে। তারপর থেকে এক বেলা খাচ্ছেন জনা। খাবার মজুতের মতো পর্যাপ্ত ইউরো তাঁর নেই। বার্লিনে ভারতীয় দূতাবাসে যাওয়াও নিষিদ্ধ।

মোবাইলে জনা জানান, জার্মানিতে করোনা আক্রান্ত প্রায় ২২ হাজার। ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। জনার কথায়, ‘‘আমারও সর্দি হয়েছি। তবে এখনও করোনা ধরা পড়েনি। এই পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহলের আমজনতার স্বার্থে গ্রামে ফিরতে চাই না।’’ মেধাবী ছাত্র জনা বাবার ইচ্ছেতেই বিদেশে পড়তে যান। ঝাড়গ্রামের ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে দশম শ্রেণির উত্তীর্ণ হওয়ার পরে বেঙ্গালুরুর আবাসিক স্কুল থেকে বিজ্ঞান শাখায় প্রি-ইউনির্ভাসিটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন জনা। পরে দিল্লি মোনাডি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিদ্যায় স্নাতক হন। একটি বেসরকারি সংস্থার শিলিগুড়ি শাখায় চাকরিও পেয়েছিলেন। কিন্তু জনার বাবার ইচ্ছে ছিল ছেলে উচ্চশিক্ষার পাঠটা বিদেশেই নিক। প্রয়াত বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ করতে চান জনাও। তিনি বলছিলেন, ‘‘এখন দেশে ফিরে গেলে আর এমবিএ করা হবে না। তাই ঝাড়গ্রামের জেলাশাসকের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাহায্য চেয়েছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Junglemahal Germany Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE