লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের গবেষণাগারে অন্তত কুড়িটি টিকা তৈরি করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছেন রবিন শ্যাটক। করোনাভাইরাসের টিকা তৈরিতে জোরকদমে কাজ চলছে লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের গবেষণাগারেও। ওই কলেজের অধ্যাপক শ্যাটক সেই গবেষণা দলের প্রধান। আপাতত কয়েকশো মানুষের দেহে ওই টিকার পরীক্ষা শেষ। প্রাথমিক ভাবে যে ক’জন ওই টিকা নিয়েছেন, তাঁদের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। শ্যাটক আশাবাদী, এর পরের ধাপেও সাফল্য পাবেন তাঁরা। করোনাকে রুখতে সফল হবে ইম্পিরিয়াল কলেজের তৈরি টিকা।
ইম্পিরিয়াল কলেজের গবেষকরা জানিয়েছেন, সামান্য মাত্রায় ওই পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগের পর তাতে সমস্যা দেখা দেয়নি। প্রাথমিক ধাপের ফলাফলে উৎসাহিত শ্যাটক ও তাঁর সহযোগী গবেষকেরা। শ্যাটকের কথায়, “(টিকা প্রয়োগের পর) কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি।” শ্যাটক বলেছেন, প্রাথমিক ট্রায়ালের পর এ বার অন্তত তিনশো মানুষের দেহে করোনা ভ্যাকসিনের প্রয়োগ করা হবে। এর মধ্যে ৭৫ বছর বয়সিরাও থাকবেন। এই ফলাফল প্রাথমিক ধাপের হলেও শ্যাটকের আশা, আগামী অক্টোবরে হাজার হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্য জমা হবে তাঁর কাছে। তার পরেই শুরু করা হবে কোভিড-১৯ প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পাশাপাশি ইম্পিরিয়াল কলেজের গবেষকরাও করোনার টিকা কাজ করছেন। তবে অক্সফোর্ডের টিকার সঙ্গে এর ফারাক রয়েছে। শ্যাটকের দল জানিয়েছে, তাদের তৈরি ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের জেনেটিক কোডের সিন্থেটিক স্ট্র্যান্ড ব্যবহার করে টিকা তৈরির কাজ চালাচ্ছে। এক বার তা মাংসপেশীতে প্রবেশের পর তা করোনাভাইরাসে উপরে একটি স্পাইকি প্রোটিনের প্রতিরূপ তৈরি করতে কোষগুলিকে নির্দেশ দেয়। যা ভবিষ্যতে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সাহায্য করা উচিত বলে মনে করেন গবেষকরা।
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট ভোট পিছনোর প্রস্তাব ট্রাম্পের, জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়াই কি আসল কারণ?
চলতি সপ্তাহে বিশ্বের সবচেয়ে বড় করোনা টিকার পরীক্ষা শুরু হয়েছে আমেরিকায়। ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেল্থ এবং মডার্না ইনকর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে করোনার টিকা পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। চলতি মাসে ব্রাজিল-সহ অন্যান্য দেশেও করোনার টিকার প্রয়োগ করেছেন চিন ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইতে নানা ধরনের টিকার প্রয়োজন রয়েছে। হু-এর মতে, প্রাথমিক স্তরে টিকা তৈরির কাজে ১০ শতাংশ সাফল্য এসেছে।
আরও পড়ুন: বাদুড়ের দেহে করোনার জীবাণু, দাবি
আরও পড়ুন: ভুটানেও এলাকা দাবি চিনের, ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছে বেজিং, বলল আমেরিকা
শ্যাটক জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে অজস্র টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কাজ চলছে। তাঁদেরই গবেষণাগারে অন্তত কুড়িটি টিকা তৈরি করা হচ্ছে। শ্যাটকের কথায়, “ক্নিনিক্যাল ট্রায়ালে ২০টি ভ্যাকসিনের কাজ চলছে। আমরা আশাবাদী, এর মধ্যে অন্তত দু’টো কাজে আসবে। তবে সবটাই নির্ভর করছে, (করোনা বিরুদ্ধে) সুরক্ষা দিতে কতটা শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করা যায়, তার উপর।” শ্যাটক আশাবাদী, ইম্পিরিয়াল কলেজে টিকা করোনাকে রুখতে সক্ষম হবে। তবে তার আগে পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। শ্যাটকের কথায়, “দম বন্ধ করে অপেক্ষা করছি। দেখি কী হয়!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy