ছবি সংগৃহীত।
করোনা-তরজা চলছিলই। এ বার হুমকি! মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাফ বললেন, ‘‘চিন ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে থাকলে, তার ফল ভুগতেই হবে।’’ উহানের ল্যাব থেকেই করোনাভাইরাস গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে কি না, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো। ট্রাম্প আরও এক ধাপ এগিয়ে গত কাল তোপ দাগলেন, ‘‘ভুলবশত হয়ে থাকলে কিছু বলার নেই। তা হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতেও পারে। কিন্তু যদি প্রমাণ হয়, ওরা (বেজিং) জেনেবুঝেই কাণ্ডটা ঘটিয়েছে, তার ফল ওদের ভুগতেই হবে।’’ এ দিকে, এইচআইভি আবিষ্কারের জন্য নোবেলজয়ী ফরাসি বিজ্ঞানী লুক মন্টেনিয়ের দাবি করেছেন, উহানের ল্যাব থেকেই ছড়িয়েছে করোনা।
তবে চিনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, তা স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প। করোনা-মৃত্যু নিয়ে চিনের সরকারি পরিসংখ্যানকেও চ্যালেঞ্জ করে তিনি দাবি করেছেন— আমেরিকা নয়, মৃতের সংখ্যায় চিনই এক নম্বরে। বেজিং এখনও এর পাল্টা মুখ না-খুললেও, উহান ল্যাব থেকে ভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগ আজ সরাসরি অস্বীকার করেছেন ল্যাবের ডিরেক্টর ইউয়ান ঝিমিং। চিনে আজ নতুন করে ১৬ জন আক্রান্তের খবর মিলেছে। ১৭ মার্চ থেকে হিসেব করলে, যা সব চেয়ে কম। এ দিকে, ইউরোপে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। মৃতের সংখ্যা আজ ১ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। গোটা বিশ্বের হিসেবে যা ৬০ শতাংশেরও বেশি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, উহানের ল্যাবের এক ইন্টার্নের শরীরেই প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এই দাবিও ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে ঝিমিং জানান, তাঁদের কোনও কর্মীই করোনায় আক্রান্ত হননি। বরং কী ভাবে এই ভাইরাসের মোকাবিলা করা যায়, সেই লড়াইটাই চালিয়ে যাচ্ছে উহান ল্যাব। ট্রাম্পের আবার অভিযোগ, চিন চাইলে নিজের দেশেই করোনাকে রুখে দিতে পারত। কিন্তু তা করেনি। উল্টে তথ্য গোপন করে বিভ্রান্ত করেছে গোটা বিশ্বকে।
আরও পড়ুন: ‘হু’র ব্যর্থতাতেই এই অতিমারি, তোপ ওয়ার্ল্ড মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের
এখন সংক্রমণের ধাত বুঝে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউন ছাড়া এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো কার্যত অসম্ভব। এই মুহূর্তে করোনা-মৃত্যুর শীর্ষে আমেরিকা। সংখ্যাটা ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছে। সংক্রমিত প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ। এরই মধ্যে পেটের দায়ে লকডাউন তোলার দাবিতে প্রায় রোজই রাস্তায় নামছেন মানুষ।
গত কাল নিউ হ্যাম্পশায়ারের কনকর্ড শহরে বিক্ষোভ দেখান প্রায় ৪০০ জন। তাঁদের দাবি, এই এলাকায় যে-হেতু এখনও তেমন সংক্রমণ ধরা পড়েনি, তাই ‘গৃহবন্দি’ থাকাটা অনর্থক। টেক্সাসের অস্টিনেও লকডাউন-বিরোধী বিক্ষোভে পথে নামেন প্রায় ২৫০ মানুষ। ‘ইয়ং আমেরিকানস ফর লিবার্টি’ সংগঠনের সদস্য জাস্টিন গ্রেইস যেমন বললেন, ‘‘আর চাপিয়ে দেওয়া লকডাউন নয়, এ বার কাজে ফিরতে দেওয়া হোক টেক্সাসকে।’’ শহরের এক পার্লারের মালিক, বছর পঞ্চান্নর ডলোরেসের কথায়, ‘‘আমি ডাক্তার নই। কিন্তু সহজ অঙ্কটা বুঝি। এখানে সংক্রমণ ততটাও মারাত্মক নয় যে, সব বন্ধ করে দিতে হবে। এ বার না-খেতে পেয়ে মরব!’’
আরও পড়ুন: ভেন্টিলেটর নেই, অক্সিজেন মাস্ক অপ্রতুল, নেই জল, সাবানও, আফ্রিকা রয়েছে আফ্রিকাতেই!
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘তথ্য বাড়িয়ে দেখানোর’ অভিযোগও উঠছে। যুদ্ধকালীন ‘লিভ ফ্রি অর ডাই’ স্লোগানও তুলেছে জনতা। কিছু প্রদেশে ৪ মে পর্যন্ত লকডাউন জারি রাখার কথা বলা হয়েছে। আমজনতার একাংশ সেটাই মানতে চাইছেন না। দ্বিতীয় অংশ আবার এই বিধিভঙ্গেই অশনিসঙ্কেত দেখছেন!
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy