CoronaVirus Crisis: China Lifts 76 Days Lock Down On Wuhan dgtl
corna virus
তালা খুলল ৭৬ দিন পর, এত দিনে প্রিয়জনের অন্ত্যেষ্টির সুযোগ পেল উহান
উহানের প্রত্যেক বাসিন্দাকে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট ‘কিউ আর কোড’। অ্যাপের সাহায্যে এই কোড স্ক্যান করা হচ্ছে। যদি স্ক্যানিংয়ে সবুজ সঙ্কেত আসে, তবেই ওই বাসিন্দা অনুমতি পাবেন গণপরিবহণ ব্যবহার করার।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০ ১৪:০৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
অবশেষে দরজা খুলল তালাবন্দি উহান শহরের। টানা ৭৬ দিন পর চিনের এই শহর থেকে উঠল লকডাউন। যুদ্ধজয় এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তবু যেন হুবেই প্রদেশের এই ‘প্রস্তরপুরী’তে কিছুটা হলেও ফিরল প্রাণের স্পন্দন। আড়াই মাস পরে সামাজিক দূরত্ব ভুলে ফের আলিঙ্গনাবদ্ধ চেরি ব্লসমের এই শহর।
০২১৫
যে দিন থেকে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে চিন, তার পর এই প্রথম, মঙ্গলবার কোনও করোনাভাইরাস আক্রান্তের খবর নেই। মৃত্যুমিছিল বন্ধ হওয়ার পর আবার ঘরের বাইরে পা রাখল উহান। গত ২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল লকডাউন। এত দিন অবধি বাইরের পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল এই শহর।
০৩১৫
এক কোটি ১০ লক্ষ মানুষের শহর উহানেই প্রথম সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল করোনাভাইরাস আক্রান্তের। তার পর থেকেই এখানে জারি হয়েছিল কঠোর লকডাউন। বন্ধ ছিল সব রকমের পরিবহণ ব্যবস্থা।
০৪১৫
গত মাস থেকে কিছুটা শিথিল হয়েছে উহানের লকডাউন পরিস্থিতি। এক সপ্তাহ ধরে উহান থেকে কোনও সংক্রমণের আসেনি। তার পরেই খুব ধীরে ধীরে ধাপে ধাপে তোলা হয়েছে লকডাউন। খোলা হয়েছে শপিং মল। শহরের সংক্রমণ-মুক্ত এলাকার বাসিন্দাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে দিনে দু’ঘণ্টা করে ঘরের বাইরে পা রাখার।
০৫১৫
উহানের প্রত্যেক বাসিন্দাকে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট ‘কিউ আর কোড’। অ্যাপের সাহায্যে এই কোড স্ক্যান করা হচ্ছে। যদি স্ক্যানিংয়ে সবুজ সঙ্কেত আসে, তবেই ওই বাসিন্দা অনুমতি পাবেন গণপরিবহণ ব্যবহার করার।
০৬১৫
উড়ান পরিষেবা এখনও সীমিত উহানে। দশ হাজার যাত্রীকে নিয়ে দু’শোটি বিমান শহর ছাড়ার অনুমতি পেয়েছে। চলাচল শুরু করবে উচ্চগতিসম্পন্ন ১০০টি ট্রেন। খুলে দেওয়া হয়েছে সড়কপথ। তবে উহানের সব স্কুল এখনও বন্ধ পরবর্তী নির্দেশ না আসা অবধি।
০৭১৫
তবে চিনে অন্য প্রদেশে এখনও জারি চরম সতর্কতা। বেজিং-এ সোমবার ১৫ জন নতুন করে সংক্রামিত হয়েছেন করোনা ভাইরাসে। এই শহরে যাঁরা প্রবেশ করবেন, তাঁদের কোয়রান্টিনে থাকতেই হবে বাধ্যতামূলক ভাবে। করা হবে নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষাও।
০৮১৫
গত কয়েক মাসে এখনও অবধি চিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩ হাজার ৩০০ জন। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৮২ হাজার মানুষ।
০৯১৫
চিনের ৭৭ শতাংশ করোনা-মৃত্যুই ঘটেছে উহানে। ইয়ংতজে নদীর তীরে এই শহর চিনের অন্যতম শিল্পাঞ্চল। গত বছর ডিসেম্বর থেকে এখনও অবধি এখানে করোনার বলি অন্তত আড়াই হাজার মানুষ। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ৫০ হাজার।
১০১৫
বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশে ১৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ করোনা-আক্রান্ত। মৃত্যুর নিরিখে চিনকে পিছনে ফেলেছে ইতালি, স্পেন, আমেরিকা। মনে করা হচ্ছে, উহান যে ভাবে লকডাউন নীতি নিয়েছিল, সেই কঠোর শৃঙ্খলাই এই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আদর্শ। করোনা-সঙ্কট প্রতিহত করতে এ রকম কঠোর লকডাউনের কোনও বিকল্প নেই।
১১১৫
উহানের অবস্থা সবথেকে করুণ হয়েছিল ফেব্রুয়ারি মাসে। সে সময় গড়ে দৈনিক হাজার জন নতুন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। লকডাউনের ফলস্বরূপ সেই পরিসংখ্যান এক লাফে নেমে আসে মার্চের মাঝামাঝি।
১২১৫
গত ১০ মার্চ উহান সফরে যান চিনের প্রেসিডেন্ট জি জিংপিং। তিনি শহরবাসীদের কঠোর শৃঙ্খলাকে বীরোচিত আচরণের সঙ্গে তুলনা করেন।
১৩১৫
তবে এখনই সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কোনও ভাবেই শিথিল করছে না চিন। উহানে লকডাউন উঠলেও কঠোর নজরদারি চলছে সে দেশের করোনা-পরিস্থিতির উপর।
১৪১৫
আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল, এত দিনে উহানবাসীরা শেষকৃত্যের অনুমতি পেলেন। সংক্রমণ রোধ করতে গত ২৫ জানুয়ারি থেকে সেই শহরে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী বন্ধ ছিল সৎকার। ফলে করোনাভাইরাস বা অন্য কারণে, যে ভাবেই মৃত্যু হোক না কেন, সব দেহ সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।
১৫১৫
এত দিনে প্রিয়জনদের বিদায় জানানোর সুযোগটুকু পেলেন এই শহরের বাসিন্দারা। চোখের জলে তাঁদের অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন করে আবার শেষ থেকে শুরু করছে এই চিনা জনপদ। (ছবি: পিটিআই, এপি, এএফপি এবং রয়টার্স)