ছবি এএফপি
দিনের পর দিন ব্রাজিলে বেড়েই চলেছে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। কোথায় গিয়ে যে থামবে, কে জানে!
প্রায় দু’মাস ধরে চলছে লকডাউন। কিন্তু এই লকডাউনে কখনওই খুব কড়াকড়ি ছিল না। বাস-মেট্রো চলছে নিয়মিত। এক রাজ্য থেকে আর এক রাজ্যে যাতায়াতের জন্য আন্তঃরাজ্য দূরপাল্লার বাসের পরিষেবাও চালু ছিল। প্রথম থেকেই ব্রাজিলের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র সাও পাওলোয় করোনার সংক্রমণ বেশি। অপেক্ষাকৃত ভাবে রিও দি জেনেইরো বা ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়াতে করোনা রোগীর সংখ্যা অনেকটাই কম ছিল। কিন্তু যে হেতু এক রাজ্য থেকে আর এক রাজ্যে যাতায়াতের কোনও বাধা ছিল না, তাই আস্তে আস্তে সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়ল কোভিড-১৯। সাও পাওলো শহর আয়তনে অনেক বড় হলেও কর্মীর সুবাদে জনসংখ্যা অনেক বেশি। যার ফলে এখানে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাটাও বেশ কঠিন।
গত ছ’বছর ধরে আছি এই সাও পাওলো শহরে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, এখানের সরকারি ডাক্তারি পরিষেবা খুবই ভাল। সরকারি হাসপাতালে যথেষ্ট উন্নতমানের যন্ত্রপাতিও আছে। প্রত্যেক অঞ্চলভিত্তিক একটা করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকে যেখানে নিয়মিত চেক আপ বিনামূল্যেই করা হয়। তৃতীয় বিশ্বের দেশ হলেও ব্রাজিলের ডাক্তারি ব্যবস্থাপনায় খুবই আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু করোনা মোকাবিলায় সেই ব্যবস্থাও একেবারেই হিমশিম খাচ্ছে। পর্যাপ্ত টেস্ট হচ্ছে না। নিঃশ্বাসের কষ্ট না হলে হাসপাতালে ভর্তিই নিচ্ছে না। জরুরি অবস্থায় পড়ে রিও-র ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়াম এবং সাও পাওলোর দু’টো ফুটবল মাঠে অস্থায়ী হাসপাতাল বানানো হয়েছে। আমার এক নার্স বন্ধু এখানকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করেন। তিনি বলছিলেন, ‘‘ব্রাজিলে করোনার আগমন ঘটে উচ্চবিত্তদের থেকে, ধীরে ধীরে তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে গরীব মানুষদের মধ্যেও। বর্তমানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর থেকে সরকারি হাসপাতালগুলোর উপরে বেশি চাপ এসেছে।’’ রিও বা সাও পাওলোয় অস্থায়ী হাসপাতালের কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও উত্তর বা উত্তর পূর্ব ব্রাজিলের অবস্থা খুবই শোচনীয়। উত্তর ব্রাজিলের আমাজন রাজ্যে হাসপাতালগুলো এখনই ১০০ শতাংশ ভর্তি। দেশের সবচেয়ে বেশি মৃতের হার আমাজনেরই এক গ্রামে। অনেকের ধারণা করোনার কবলে পড়ে এ দেশের বেশ কিছু ভূমিপুত্র-গোষ্ঠী একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কয়েক দিন আগেই তাদের জঙ্গল পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে। ওষুধের জন্য তাদের একমাত্র ভরসা ছিল সেই জঙ্গল। (চলবে)
(লেখক সাও পাওলোয় কর্মরত শিক্ষক)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy