Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

করোনায় মৃত্যু ফ্রান্সে, এই প্রথম ইউরোপে, সংক্রমণ রুখতে নোটবন্দি চিনে

চিনের হুবেই প্রদেশ থেকে ফ্রান্সে বেড়াতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক ৮০ বছর বয়সি বৃদ্ধ।

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
প্যারিস শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪৫
Share: Save:

করোনাভাইরাস সংক্রমণে এই প্রথম মৃত্যু হল ইউরোপে।

চিনের হুবেই প্রদেশ থেকে ফ্রান্সে বেড়াতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক ৮০ বছর বয়সি বৃদ্ধ। ১৬ জানুয়ারি ফ্রান্সে পৌঁছন তিনি। ২৫ জানুয়ারি অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইন করা হয়। আজ এল দুঃসংবাদ। এর আগে চিনের বাইরে তিনটি মৃত্যুর খবর মিলেছিল। হংকং, ফিলিপিন্স ও জাপান থেকে। চিনে অবশ্য মারা গিয়েছেন দেড় হাজারের বেশি মানুষ। বেশির ভাগই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। নতুন করে ২৬৪১টি সংক্রমণের খবর মিলেছে। চিনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৬৬,৪৯২।

ফ্রান্সে মোট সংক্রমিত ১১ জন। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির মেয়েও রয়েছেন। তবে তিনি এখন অনেকটাই সুস্থ বলে জানা গিয়েছে। চিনের বাইরে ২৪টি দেশে পাঁচশোরও বেশি লোক নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। শুক্রবার মিশরের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, তাদের দেশে প্রথম কেউ আক্রান্ত হয়েছেন। তবে তিনি বিদেশি। কোন দেশের নাগরিক, সেটা অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি।

ভাইরাসটির একটি নতুন নাম রেখেছেন বিজ্ঞানীরা, ‘সিওভিআইডি-১৯’। ‘সিও’ অর্থাৎ করোনার প্রথম দু’টি অক্ষর, ‘ভিআই’ হল ভাইরাসের প্রথম দু’টি অক্ষর, ‘ডি’ হল ডিজ়িজ়। এবং ‘১৯’ কারণ ২০১৯ সালে অসুখটি জন্ম নিয়েছে। ২০১৯ সালের শেষ দিন, ৩১ ডিসেম্বর প্রথম মৃত্যুর খবর এসেছিল। অসুখটিও প্রথম চিহ্নিত হয়। সেই থেকে চিনে দেড় হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। রোগ নিয়ন্ত্রণে ‘তালাবন্ধ’ করা হয়েছে একের পর এক শহরকে। হাসপাতাল না হলে বাড়ি, পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ‘বন্দি’ করা হয়েছে লোকজনকে। এ বার শুরু হল ‘নোটবন্দি’। সংক্রমিত এলাকায় একটা বড় অঙ্কের ব্যাঙ্কনোট কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কিছু পরিমাণ নোট রাখা হয়েছে গুদামঘরে। প্রশাসনের কথায়, নোট থেকে যাতে ভাইরাসটি না ছড়ায়, তাই এই ব্যবস্থা। এ ছাড়া সামান্যতম সন্দেহ হলেই লোকজনকে ১৪ দিনের জন্য সব কিছু থেকে আলাদা করে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হচ্ছে। এ নিয়ম অবশ্য শুধু চিনের নয়, পৃথিবীর সব দেশেই। বিশেষজ্ঞদের আবেদন, দিনে বেশ কয়েক বার করে হাত-মুখ ধুয়ে নিন, মুখোশ পরুন। শুক্রবার মৃতের সংখ্যা ১৫২৩ ছুঁয়েছে। সংক্রমণের নিশ্চিত খবর মিলেছে ৬৬ হাজার।

তবে ‘নোটবন্দি’র জন্য অর্থাভাবের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পিপল’স ব্যাঙ্ক অব চায়না-র উপ-অধিকর্তা ফ্যান ওয়াইফেই অবশ্য জানান, নোটের অভাব যাতে না হয়, সেই জন্য বাজারে মোট ৪০০ কোটি ইউয়ান মূল্যের নতুন নোট ছাড়া হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক আপাতত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পুরনো নোট সংগ্রহ করে সেগুলোকে সরিয়ে রাখবে। নতুন নোট দেওয়ার আগে সেগুলো জীবাণুমুক্ত করার জন্যেও বলা হয়েছে ব্যাঙ্কগুলোকে। হাসপাতাল ও বাজার থেকে সংগৃহীত নোটগুলোকে জীবাণুমুক্ত করার উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। নোট ও কয়েন আলট্রাভায়োলেট রশ্মিতে রেখে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। ফ্যানের দাবি, গোটা প্রক্রিয়াটি যথেষ্ট পেশাদারিত্বের সঙ্গে করা হচ্ছে। ফলে কোনও সমস্যায় পড়তে হবে না সাধারণ মানুষকে।

গত কাল আমেরিকার ইকনমিক কাউন্সিলের প্রধান ল্যারি কুডলো দাবি করেছিলেন, মারণ ভাইরাসটি সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য দিচ্ছে না চিন। এ বিষয়ে চিন স্বচ্ছতাও বজায় রাখছে না বলে অভিযোগ জানান তিনি। কিন্তু আজ চিনের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিভাগের প্রধান মাইকেল রায়ান বলেন, ‘‘আমার দৃষ্টিকোণ থেকে, চিন সরকার কিন্তু আমাদের সঙ্গে যথেষ্ট সহযোগিতা করছে। কুডলো যা বলছেন, তা কিন্তু মেনে নিতে পারছি না। তবে হ্যাঁ, যে কোনও ব্যক্তির নিজস্ব মতামত প্রকাশের অধিকার রয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus France
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy