Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Omicron

Corona across the world: আমেরিকায় আক্রান্তের রেকর্ড, ফ্রান্সে হাসপাতাল উপচানো রোগী, বিশ্ব জুড়ে ওমিক্রনের দাপট

আমেরিকায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বলে দেওয়া হয়েছে, উপসর্গ যদি মৃদু থাকে, তা হলে কাজ চালিয়ে যান। সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে এ খবর।

বিশ্বের কোন দেশ কী ভাবে লড়ছে এ যাবৎ বৃহত্তম করোনা-স্ফীতির সঙ্গে?

বিশ্বের কোন দেশ কী ভাবে লড়ছে এ যাবৎ বৃহত্তম করোনা-স্ফীতির সঙ্গে? ছবি— রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২২ ১৪:১৭
Share: Save:

করোনা-স্ফীতির জেরে নতুন করে তোলপাড় হচ্ছে বিশ্ব। ভারতে প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যার রেকর্ড ভাঙছে। তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন রেকর্ড। একই অবস্থা বিশ্ব জুড়ে। আমেরিকায় যেমন আক্রান্তের সংখ্যা ভেঙে দিচ্ছে সর্বকালীন রেকর্ড, তেমনই ফ্রান্সের হাসপাতালে উপচে পড়ছে করোনা রোগী। গোটা বিশ্ব জুড়েই প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে হাসপাতালে অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কাজ। সব মিলিয়ে ওমিক্রন আতঙ্কে থরহরি কম্প বিশ্ব।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, বিশ্বের কোন দেশ কী ভাবে লড়ছে এ যাবৎ বৃহত্তম করোনা-স্ফীতির সঙ্গে।

আমেরিকা:
গত সোমবার, আমেরিকায় ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ১০ লক্ষের বেশি করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। গত সোমবার অর্থাৎ, ৩ জানুয়ারি আমেরিকায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০ লক্ষের সামান্য বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, বাইডেনের দেশে গত সাত দিনে লাফিয়ে বেড়েছে সংক্রমণ।
শুধু সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধিই নয়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার নিরিখেও আমেরিকায় নিত্য তৈরি হচ্ছে আর ভাঙছে রেকর্ড। সংবাদ সংস্থার দাবি, এই মুহূর্তে আমেরিকায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫০০ জন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গত বছর জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৫১ জন। সেই রেকর্ড ভাঙল সম্প্রতি।
ভারতের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে পর পর আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। ব্যতিক্রম নয় আমেরিকাও। কিন্তু এরই মধ্যে পরিষেবা জারি রাখতে নতুন এক পথ নিয়েছে তারা। সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বলে দেওয়া হয়েছে, উপসর্গ যদি মৃদু থাকে, তা হলে কাজ চালিয়ে যেতে। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে এই খবর।

ফ্রান্স:
আমেরিকায় যদি নতুন সংক্রমণ লাগাম ছাড়া হয়, তা হলে ফ্রান্সের সমস্যা হাসপাতালের ফাঁকা বিছানা না থাকা। ওমিক্রন সংক্রমণের সঙ্গেই সে দেশে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা। সংবাদ সংস্থা এপি-র প্রতিবেদনে প্রকাশ, করোনা রোগী ছাড়া ফ্রান্সের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আর কিছুরই চিকিৎসা করার মতো পরিস্থিতি নেই। রবিবার যেখানে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৭৬৭ জন, সোমবার সেই সংখ্যা পৌঁছেছে ২২ হাজার ৭৪৯-এ। ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওলিভার ভেরান বলছেন, ‘‘ওমিক্রনের মারণ শক্তি কম হতে পারে, কিন্তু যে হারে মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাতে অন্য আশঙ্কা দেখছেন চিকিৎসকেরা।’’

ইংল্যান্ড:
আমেরিকা বা ফ্রান্সের মতো না হলেও ব্রিটেনের পরিস্থিতি খুব একটা সুখকর নয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা মাথাচাড়া দেওয়া এবং পর পর চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার জেরে, সে দেশেও করোনা বিনা অন্য চিকিৎসা পরিষেবা (ক্যান্সার, অস্ত্রোপচার ও অন্যান্য) প্রদান প্রায় থমকে যাওয়ার মুখে।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার ইংল্যান্ডের জনসন সরকার ঘোষণা করেছে, সমস্ত বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা যেন সরকারি কাঠামোর অন্তর্গত হাসপাতালগুলোয় অন্যান্য জরুরি পরিষেবা প্রদানের কাজ চালিয়ে যেতে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোকে প্রত্যক্ষ সহায়তা দেয়। এ নিয়ে সরকার ও বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে তিন মাসের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ইতালি:
করোনা-স্ফীতি রুখতে টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের পথে ইতালি। সোমবার টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের উপর একগুচ্ছ নতুন এবং কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সে দেশের সরকার। সোমবার থেকে ইতালিতে নিয়ম জারি করে বলা হয়েছে, রেস্তরাঁ, পানশালা, বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদিতে প্রবেশ করতে হলে বাধ্যতামূলক ভাবে দেখাতে হবে টিকাকরণের শংসাপত্র। কিংবা প্রমাণ দিতে হবে, তিনি সদ্য করোনা থেকে সেরে উঠেছেন। ট্রেন, বাস, ট্রাম পরিষেবা নিতে গেলেও এই নিয়ম পালন বাধ্যতামূলক।
ইতালিতে পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে করোনার টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। টিকা না নিলে ১০০ ইউরো (প্রায় সাড়ে ৮ হাজার টাকা) জরিমানা দিতে হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়া:
সোমবারই অস্ট্রেলিয়ায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে ১০ লক্ষের গণ্ডি। যার অর্ধেকের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন গত সপ্তাহে! এমনই দাবি করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। এই পরিস্থিতিতে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, ‘‘ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে সবচেয়ে জরুরি আমাদের সচেতনতা। তা হলে লকডাউনের পথে হাঁটতে হবে না। আশা করি দেশবাসী বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবেন।’’ সে দেশেও প্রবল চাপের মুখে পড়েছে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো।

চিন:
সোমবার ওমিক্রন আক্রমণের কথা জানা গিয়েছে বেজিং থেকেও। চিনের জি’জিয়ান ও তিয়ানজিং-এ ওমিক্রন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। ফলে ওই শহর/প্রদেশে ঢোকা-বেরোনোর উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে গিয়েছে। চিনে ওমিক্রন সংক্রমণের সন্ধান মেলা জায়গায় বিপুল আকারে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু করে দেওয়া হয়েছে।
সব মিলিয়ে গোটা বিশ্ব জুড়ে ত্রাহি রব ফেলে দিয়েছে করোনার নয়া রূপ ওমিক্রন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মারণ ক্ষমতা কম হলেও যে হারে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তার চাপেই ভেঙে পড়ার দশা চিকিৎসা পরিকাঠামোর। যার পরিণাম হতে পারে ভয়ঙ্কর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy