ডাস্টবিনের গায়ে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি! সেই ডাস্টবিনের সঙ্গে আবার ছবি তুলছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এই ছবি বাংলাদেশের অমর একুশে বইমেলার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাজমাধ্যমের পাতা থেকে সেই ছবি পোস্টও করা হয়েছে। যদিও এই ডাস্টবিন প্রসঙ্গকে মানুষের ‘অভিব্যক্তি প্রকাশের স্বাধীনতা’ বলে ব্যাখ্যা করছে আয়োজক সংস্থা।
এ বছরের অমর একুশে বইমেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্টল বসেছে। তাদের তরফেই স্টলের পাশে বসানো হয়েছে ডাস্টবিনটি। ডাস্টবিনের গায়ে সাঁটানো রয়েছে হাসিনার একটি বিকৃত মুখের ছবি। অমর একুশে বইমেলা পরিদর্শনে ইউনূসের সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্টলেও যান তাঁরা। সেখানে হাসিনার ছবি-সহ ডাস্টবিনটির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব। সঙ্গে ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও।
শনিবার থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের অমর একুশে বইমেলা। বইমেলা প্রাঙ্গণে হাসিনার ছবি-সহ ডাস্টবিনটির ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা লিখেছেন, “বইমেলায় আসলে আপনার হাতের অপ্রয়োজনীয় ময়লা-আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলতে ভুলবেন না।” পরে আরও একটি পোস্ট করে তারা। সেখানে লেখা হয়, “ফ্যাসিস্ট, গণহত্যাকারী হাসিনার ছবি শুধু বইমেলার ডাস্টবিনে নয়, সারা দেশের ডাস্টবিনে ছড়িয়ে দিন।”
একটি ছবিতে বইমেলার ওই ডাস্টবিনে ময়লা ফেলতেও দেখা গিয়েছে শফিকুলকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সেই ছবি-সহ প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনগুলিতে জানানো হয়েছে, শফিকুল সেই ছবি নিজের সমাজমাধ্যম হ্যান্ডলে পোস্ট করে লেখেন, “শনিবার বাংলা একাডেমিতে একুশে বইমেলার প্রথম দিন ডাস্টবিনে জঞ্জাল নিক্ষেপ।” যদিও পরে তাঁর সমাজমাধ্যম পাতায় ওই ছবিটি পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:
বইমেলায় ডাস্টবিনে হাসিনার ছবি ঘিরে সমাজমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। হাসিনার বিরুদ্ধে ক্ষোভও যেমন দেখা গিয়েছে, তেমনই বইমেলায় এ ধরনের ঘটনা হিংসায় উসকানি দিতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। বইমেলায় ‘পরিশীলিত আচরণ’ কাঙ্ক্ষিত বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিনও সমাজমাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। হাসিনার বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভপ্রকাশ করেও তসলিমা লিখেছেন, “আমি মনে করি ঢাকার অমর একুশে বইমেলায় শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে ডাস্টবিন বানানো উচিত হয়নি। এ সব করে বইমেলা কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছেন।”
বইমেলা কমিটির সদস্য সচিব সরকার আমিন এ বিষয়ে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘সাম্প্রতিক দেশকাল’কে বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। মানুষের অভিব্যক্তি প্রকাশের স্বাধীনতায় বাংলা একাডেমি হস্তক্ষেপ করতে পারে না।”