Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Cocos Island

ঘন বনে ঢাকা রহস্যময় এই দ্বীপেই নাকি লুকিয়ে হাজার হাজার কোটির গুপ্তধন!

স্পেনীয় শাসকরা তখন ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন উইলিয়াম থম্পসনের শরণাপন্ন হন। তাঁর জাহাজ ‘মেরি ডিয়ার’-এ সওয়ার হয়ে গুপ্তধন পাড়ি দিল। সোনা-রুপোর মুদ্রা, রাশি রাশি হিরে এবং প্রমাণ আকারের ভার্জিন মেরির মূর্তি নিয়ে সে জাহাজ চলল অজানা গন্তব্যে। শোনা যায়, ক্যাপ্টেন থম্পসন ও তাঁর সঙ্গীরা জাহাজের বাকি সবাইকে হত্যা করে নিয়ে জাহাজ নিয়ে চলে যান কোকোজ দ্বীপে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১০:১৭
Share: Save:
০১ ১২
বইয়ের পাতার বাইরেও আছে ট্রেজার আইল্যান্ড। যেখানে‌ রয়েছে অমূল্য বিপুল গুপ্তধন। প্রশান্ত মহাসাগরের কোলে কোকোজ আইল্যান্ড ১৮৩২ সাল থেকে কোস্টারিকার অংশ। কোস্টারিকার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে বাস্তবের এই গুপ্তধন-দ্বীপকে ঢেকে আছে ঘন সবুজ ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্যে।

বইয়ের পাতার বাইরেও আছে ট্রেজার আইল্যান্ড। যেখানে‌ রয়েছে অমূল্য বিপুল গুপ্তধন। প্রশান্ত মহাসাগরের কোলে কোকোজ আইল্যান্ড ১৮৩২ সাল থেকে কোস্টারিকার অংশ। কোস্টারিকার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে বাস্তবের এই গুপ্তধন-দ্বীপকে ঢেকে আছে ঘন সবুজ ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্যে।

০২ ১২
৩০০ ফিটের খাড়াই পাহাড়, কালো বালির সৈকত, অসংখ্য নদী আর ঝরনায় সাজানো এই রহস্যময় দ্বীপ দেখেই নাকি মাইকেল ক্রিকটনের মনে ‘জুরাসিক পার্ক’-এর প্লট এসেছিল। প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী অবশ্য নেই। দ্বীপের বাসিন্দা ৪০০ রকমের কীটপতঙ্গ এবং ৯০ রকমের পাখির প্রজাতি। আর আছে বাঘ এবং সমুদ্রে হাতুড়ি-মাথা হাঙর।

৩০০ ফিটের খাড়াই পাহাড়, কালো বালির সৈকত, অসংখ্য নদী আর ঝরনায় সাজানো এই রহস্যময় দ্বীপ দেখেই নাকি মাইকেল ক্রিকটনের মনে ‘জুরাসিক পার্ক’-এর প্লট এসেছিল। প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী অবশ্য নেই। দ্বীপের বাসিন্দা ৪০০ রকমের কীটপতঙ্গ এবং ৯০ রকমের পাখির প্রজাতি। আর আছে বাঘ এবং সমুদ্রে হাতুড়ি-মাথা হাঙর।

০৩ ১২
তবে গুপ্তধন-শিকারিদের কিন্তু এই বিপুল প্রাণী বৈচিত্র নিয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। বরং, তাঁদের বিশ্বাস, রহস্যময় এই দ্বীপে লুকনো আছে ১ বিলিয়ন ডলার বা ৭১,৫০,২৫,০০,০০০ টাকার সম্পদ। রটনার সূত্রপাত ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে। লাতিন আমেরিকা দখলকারী স্প্যানিশ শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে পেরুর স্থানীয় বাসিন্দারা।

তবে গুপ্তধন-শিকারিদের কিন্তু এই বিপুল প্রাণী বৈচিত্র নিয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। বরং, তাঁদের বিশ্বাস, রহস্যময় এই দ্বীপে লুকনো আছে ১ বিলিয়ন ডলার বা ৭১,৫০,২৫,০০,০০০ টাকার সম্পদ। রটনার সূত্রপাত ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে। লাতিন আমেরিকা দখলকারী স্প্যানিশ শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে পেরুর স্থানীয় বাসিন্দারা।

০৪ ১২
স্পেন অধিকৃত লিমা আক্রমণের পরিকল্পনা করেন আর্জেন্তিনীয় জেনারেল জোসে সান দে মার্টিন। যুদ্ধের আশঙ্কায় তৎকালীন স্প্যানিশ গভর্নর ঠিক করেন সমস্ত সম্পদ লুকিয়ে ফেলা হবে। যাতে যুদ্ধে কোনও সম্পদহানি না হয়।

স্পেন অধিকৃত লিমা আক্রমণের পরিকল্পনা করেন আর্জেন্তিনীয় জেনারেল জোসে সান দে মার্টিন। যুদ্ধের আশঙ্কায় তৎকালীন স্প্যানিশ গভর্নর ঠিক করেন সমস্ত সম্পদ লুকিয়ে ফেলা হবে। যাতে যুদ্ধে কোনও সম্পদহানি না হয়।

০৫ ১২
স্পেনীয় শাসকরা তখন ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন উইলিয়াম থম্পসনের শরণাপন্ন হন। তাঁর জাহাজ ‘মেরি ডিয়ার’-এ সওয়ার হয়ে গুপ্তধন পাড়ি দিল। সোনা-রুপোর মুদ্রা, রাশি রাশি হিরে এবং প্রমাণ আকারের ভার্জিন মেরির মূর্তি নিয়ে সে জাহাজ চলল অজানা গন্তব্যে। শোনা যায়, ক্যাপ্টেন থম্পসন ও তাঁর সঙ্গীরা জাহাজের বাকি সবাইকে হত্যা করে নিয়ে জাহাজ নিয়ে চলে যান কোকোজ দ্বীপে।

স্পেনীয় শাসকরা তখন ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন উইলিয়াম থম্পসনের শরণাপন্ন হন। তাঁর জাহাজ ‘মেরি ডিয়ার’-এ সওয়ার হয়ে গুপ্তধন পাড়ি দিল। সোনা-রুপোর মুদ্রা, রাশি রাশি হিরে এবং প্রমাণ আকারের ভার্জিন মেরির মূর্তি নিয়ে সে জাহাজ চলল অজানা গন্তব্যে। শোনা যায়, ক্যাপ্টেন থম্পসন ও তাঁর সঙ্গীরা জাহাজের বাকি সবাইকে হত্যা করে নিয়ে জাহাজ নিয়ে চলে যান কোকোজ দ্বীপে।

০৬ ১২
তাঁদের ধাওয়া করে আসা স্পেনীয় যুদ্ধজাহাজ পাল্টা আক্রমণ চালায়। বন্দি করা জাহাজের প্রায় সব ষড়যন্ত্রীকেই। কিন্তু সন্ধান মেলেনি বিপুল গুপ্তধনের। সেই সঙ্গে নিরুদ্দেশ হয়ে যান ক্যাপ্টেন থম্পসন এবং তাঁর এক সঙ্গী। দ্বীপের কোথায় তাঁরা সেই সম্পত্তি লুকিয়ে রাখেন, জানা যায়নি। তাঁদের রেখে যাওয়া সম্পদের নাম হয় লোকমুখে ‘ট্রেজার অব লিমা’।

তাঁদের ধাওয়া করে আসা স্পেনীয় যুদ্ধজাহাজ পাল্টা আক্রমণ চালায়। বন্দি করা জাহাজের প্রায় সব ষড়যন্ত্রীকেই। কিন্তু সন্ধান মেলেনি বিপুল গুপ্তধনের। সেই সঙ্গে নিরুদ্দেশ হয়ে যান ক্যাপ্টেন থম্পসন এবং তাঁর এক সঙ্গী। দ্বীপের কোথায় তাঁরা সেই সম্পত্তি লুকিয়ে রাখেন, জানা যায়নি। তাঁদের রেখে যাওয়া সম্পদের নাম হয় লোকমুখে ‘ট্রেজার অব লিমা’।

০৭ ১২
এরপর থেকে দ্বীপে অভিযান চালিয়েছেন অসংখ্য অভিযাত্রী। কখনও শোনা গিয়েছে, উদ্ধার হয়েছে গুপ্তধন। কিন্তু তার পরে কোনও প্রামাণ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। সব থেকে গিয়েছে গুজবের আকারেই। জনশ্রুতি, জন কিটিং নামে এক ব্যক্তি নাকি গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা কোনও দিন দেখাতে পারেননি।

এরপর থেকে দ্বীপে অভিযান চালিয়েছেন অসংখ্য অভিযাত্রী। কখনও শোনা গিয়েছে, উদ্ধার হয়েছে গুপ্তধন। কিন্তু তার পরে কোনও প্রামাণ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। সব থেকে গিয়েছে গুজবের আকারেই। জনশ্রুতি, জন কিটিং নামে এক ব্যক্তি নাকি গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা কোনও দিন দেখাতে পারেননি।

০৮ ১২
জার্মান অভিযাত্রী অগস্ট গিজলার উনিশ শতকের শেষে কোকোজ দ্বীপের গভর্নর হয়েছিলেন। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে দ্বীপে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেন। সুড়ঙ্গ কাটেন দ্বীপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কিন্তু তাঁর হাতে কয়েকটি মুদ্রা ছাড়া আর কিছুই আসেনি। ১৯০৮ সালে দ্বীপ ছেড়ে চলে যান হতাশ গিজলার।

জার্মান অভিযাত্রী অগস্ট গিজলার উনিশ শতকের শেষে কোকোজ দ্বীপের গভর্নর হয়েছিলেন। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে দ্বীপে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেন। সুড়ঙ্গ কাটেন দ্বীপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কিন্তু তাঁর হাতে কয়েকটি মুদ্রা ছাড়া আর কিছুই আসেনি। ১৯০৮ সালে দ্বীপ ছেড়ে চলে যান হতাশ গিজলার।

০৯ ১২
তবে ট্রেজার অব লিমা-র আগে থেকেই কোকোজ দ্বীপ বিখ্যাত গুপ্তধনের জন্য। অনেক দিন ধরেই এখানে লুঠের জিনিস লুকিয়ে রাখত জলদস্যুরা। প্রথম জীবনে ব্রিটিশ নৌসেনা ক্যাপ্টেন বেনেট গ্রাহাম পরে হয়েছিল কুখ্যাত জলদস্যু। সে নাকি দস্যুজীবনে লুঠ করেছিল মোট ৩৫০ টন সোনা। সে সবই লুকিয়ে রেখেছিল কোকোজ দ্বীপে।

তবে ট্রেজার অব লিমা-র আগে থেকেই কোকোজ দ্বীপ বিখ্যাত গুপ্তধনের জন্য। অনেক দিন ধরেই এখানে লুঠের জিনিস লুকিয়ে রাখত জলদস্যুরা। প্রথম জীবনে ব্রিটিশ নৌসেনা ক্যাপ্টেন বেনেট গ্রাহাম পরে হয়েছিল কুখ্যাত জলদস্যু। সে নাকি দস্যুজীবনে লুঠ করেছিল মোট ৩৫০ টন সোনা। সে সবই লুকিয়ে রেখেছিল কোকোজ দ্বীপে।

১০ ১২
আর এক নৃশংস জলদস্যু বেনিটো‌ বোনিটোও নাকি তাঁর লুঠের বিপুল সম্পদ লুকিয়েছিল এই নির্জন দ্বীপেই।

আর এক নৃশংস জলদস্যু বেনিটো‌ বোনিটোও নাকি তাঁর লুঠের বিপুল সম্পদ লুকিয়েছিল এই নির্জন দ্বীপেই।

১১ ১২
কোকোজ আইল্যান্ডে ৫০০-র বেশি অভিযান হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোস্টারিকা সরকার এই দ্বীপে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়। অভিযাত্রী বা পর্যটকদের কাছে এই দ্বীপ এখন অগম্য। স্কুবা ডাইভিং, জাহাজে পাড়ি বা আকাশপথে চক্কর দিয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো যায়।

কোকোজ আইল্যান্ডে ৫০০-র বেশি অভিযান হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোস্টারিকা সরকার এই দ্বীপে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়। অভিযাত্রী বা পর্যটকদের কাছে এই দ্বীপ এখন অগম্য। স্কুবা ডাইভিং, জাহাজে পাড়ি বা আকাশপথে চক্কর দিয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো যায়।

১২ ১২
জনশ্রুতি ও কিংবদন্তিতে অবিশ্বাসী লোকজনের দাবি, জলদস্যুদের গল্প মনগড়া। আদতে কোকোজ দ্বীপে কোনও গুপ্তধনই নেই। যা আছে, তা হল অপূর্ব প্রাকৃতিক সম্পদ। ক্রান্তীয় অরণ্যের বিরল জীববৈচিত্রে ভরা এই দ্বীপের সেই অমূল্য সম্পদকে রক্ষা করতে পাহারা দেয় কোস্টারিকা সরকারের বনকর্মীরা।   (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)

জনশ্রুতি ও কিংবদন্তিতে অবিশ্বাসী লোকজনের দাবি, জলদস্যুদের গল্প মনগড়া। আদতে কোকোজ দ্বীপে কোনও গুপ্তধনই নেই। যা আছে, তা হল অপূর্ব প্রাকৃতিক সম্পদ। ক্রান্তীয় অরণ্যের বিরল জীববৈচিত্রে ভরা এই দ্বীপের সেই অমূল্য সম্পদকে রক্ষা করতে পাহারা দেয় কোস্টারিকা সরকারের বনকর্মীরা। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE