হংকংয়ে গণতন্ত্রকামীদের আন্দোলন।—ছবি এএফপি।
স্থানীয় ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের ভোটে গণতন্ত্রকামী প্রতিনিধিদের জয়জয়কার। কিন্তু চিনের সংবাদমাধ্যম বিষয়টি নিয়ে নীরব। বরং বহিরাগত শক্তির হাত ধরে গণতন্ত্রকামী নেতারা হংকংয়ের স্থানীয় ভোটে সাফল্য পেয়েছেন বলে ব্যাখ্যা করেছে তারা। গত কালের ফল নিয়ে প্রথম সারির বেশির ভাগ চিনা দৈনিকে তাই কোনও খবর প্রকাশিত হয়নি। গ্লোবাল টাইমসে শুধু লেখা হয়েছে, ভোট রবিবার রাতে শেষ হয়েছে। এই খবরটুকু ছাড়া, ভোটের ফলাফল নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেইনি ওই দৈনিক।
চিনা সরকারি সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া অবশ্য স্থানীয় এই ভোটের ফল ব্যাখ্যা করেছে। এবং সেখানে বলা হয়েছে, বেজিং-ঘনিষ্ঠ নেতারা আসলে বহিরাগত কিছু শক্তির হাতে পরাজিত হয়েছেন। টানা পাঁচ মাস ধরে চলা গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকে তারা দাঙ্গারই নামান্তর বলে দাবি করেছে।
আজ চিনে মার্কিন দূত টেরি ব্র্যানস্টাডকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন চিনা উপবিদেশমন্ত্রী ঝেং জেগুয়াং। সম্প্রতি মার্কিন সেনেটে ‘হংকং মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র আইন, ২০১৯’ পাশ হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই বিলে সই করার কথা। কিন্তু ওই বিল আন্তর্জাতিক আইনের মূল ধারাকে লঙ্ঘন করছে বলে দাবি করেছে বেজিং। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানাতেই মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে আজ ডেকে পাঠানো হয় বলে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র জানাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আজ ফের মুখ খুলেছেন হংকংয়ের প্রশাসনিক প্রধান ক্যারি ল্যাম। এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকের আগে সাংবাদিক বৈঠক করেন ল্যাম। সেখানে হংকংবাসীদের একটা বড় অংশের সঙ্গে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দিয়েছেন ল্যাম। তবে প্রত্যর্পণ বিল প্রত্যাহারের পর থেকে আরও যে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, সেই দাবিগুলি নিয়ে এ বারও নীরবই থেকেছেন ল্যাম। এর আগেও হংকং সমস্যার সমাধানসূত্র বার করার জন্য বৈঠকে বসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ল্যাম। কিন্তু গণতন্ত্রকামী নেতারা সেই প্রস্তাবে সাড়া দেননি। তাঁদের বক্তব্য, আদৌ তাঁদের দাবি মানা হবে না সেখানে। উল্টে চিনের আধিপত্যই আরও বেশি করে কায়েম করার চেষ্টা চলবে হংকংবাসীদের উপরে। স্থানীয় ভোটের ফল বেরোনোর পরে বিক্ষোভ তো থামবেই না, বরং আগামী কয়েক দিনে সেই বিক্ষোভ আরও জোরদার হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন গণতন্ত্রকামী নেতারা। তবে ল্যাম আজ ফের সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে হংকংয়ে শান্তি আর স্থিতিশীলতা ফেরাটা খুবই জরুরি। হংকংবাসী নিশ্চয়ই চাইবেন না, পাঁচ মাস ধরে চলা অশান্তির আবহই বজায় থাক এখানে। তাই আলোচনা শুরু করাটা খুবই জরুরি।’’
এরই মধ্যে পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা জটিলতা অবশেষে কেটেছে। আজ ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের ঘেরাও মুক্ত বলে ঘোষণা করলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয় ঘেরাও করে রেখেছিলেন শ’খানেকেরও বেশি পড়ুয়া। পুলিশ ওই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর খালি করতে গেলে তাদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে বিক্ষোভকারীদের। গত কালও পড়ুয়াদের সঙ্গে পুলিশি বিরোধে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর।
কিন্তু আজ সকালে এক জন ছাত্রী ছাড়া গোটা ক্যাম্পাসে আর কোনও ছাত্রছাত্রীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী ও পুলিশের একটি দল গোটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ঘুরে দেখে। যে ছাত্রীটিকে উদ্ধার করা হয়েছে, তিনি শারীরিক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ বলে জানিয়েছে পুলিশ। একটি সোফায় শুয়েছিলেন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সব প্রতিবাদী ছাত্রছাত্রীরা চলে গেলেও এই ছাত্রী একা বিশ্ববিদ্যালয়ে কী করছিলেন, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy