প্রতীকী ছবি।
কোভিড-কূটনীতি বহাল রইল। কিন্তু তার অভিমুখ একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গেল, এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিবির।
গোটা বিশ্বকে ওষুধ এবং প্রতিষেধক সরবরাহ করে ‘আত্মনির্ভর’, ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ নীতির প্রচার নয় আর। বরং এই ভয়ঙ্কর সঙ্কটে গোটা বিশ্বের কাছে হাত পাতাটাই এখন অগ্রাধিকার সাউথ ব্লকের। চাহিদা, মূলত অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয় দুর্লভ ওষুধ ও তার কাঁচামালের। সঙ্গে প্রতিষেধকের বিষয়টি তো রয়েছেই। সরকারি সূত্রের খবর, প্রায় গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা, রাশিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আপতকালীন দৌত্য চালাচ্ছে ভারত। আগামী চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আমেরিকা, রাশিয়ার রসদ বোঝাই বিমান নামবে নয়াদিল্লির টারম্যাকে।
অন্য দিকে, ভারতের ছেড়ে যাওয়া প্রতিষেধক-কূটনীতির পরিসরের দখল নিয়ে আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে মাঠে নেমে পড়েছে বেজিং। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই সম্প্রতি ভিডিয়ো মাধ্যমে প্রতিষেধক নিয়ে বৈঠক করেছেন আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে। এই সবকটি দেশই ভারতের প্রতিবেশী। চিন এই দেশগুলিকে জানিয়েছে, তারা প্রতিষেধক সরবরাহের জন্য তৈরি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বাংলাদেশ, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কা ভারতের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পুরোপুরি মেড-ইন-ইন্ডিয়া প্রতিষেধকের উপরই নির্ভরশীল ছিল এত দিন এবং এই দেশের অনেক বাসিন্দারই প্রথম ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে। ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ফলে সঙ্কট বেড়ে যাওয়ায় প্রতিষেধক রফতানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সাউথ ব্লক। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ জানিয়েছিল। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশে যখন প্রবল হারে সংক্রমণ বাড়ছে তখনই ভারত থেকে প্রতিষেধক আসা বন্ধ।’’ তাঁর কথায়, “আমরা এখন চিনকে বলেছি যত দ্রুত সম্ভব আমাদের প্রতিষেধক পাঠাতে। তারা ইতিবাচক জবাব দিয়েছে।”
অন্য দিকে, আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাহায্য চেয়ে কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। পরে টুইট করে তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে খুবই ভাল কথাবার্তা হয়েছে। আমরা কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতকে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছি তাঁকে।’’ সরকারি সূত্রের খবর, আগামিকাল সকালের মধ্যে অক্সিজেন বোঝাই রাশিয়ান বিমান নয়াদিল্লি পৌঁছাবে। এ ছাড়া পৌঁছবে আমেরিকার বিমানও।
যে তালিকা আজ বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে পাওয়া গিয়েছে তাতে প্রশ্ন উঠছে, সুনামি ছাড়া এত ব্যাপক হারে আন্তর্জাতিক সহায়তা ভারতকে আর কখনও নিতে হয়েছে কি না। জানা গিয়েছে, অক্সিজেন এবং ওষুধ আসছে ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়াম, পর্তুগাল, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, পর্তুগাল, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, সুইডেনের মতো দেশগুলি থেকে। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যে এই রসদ পাঠাবে কেন্দ্র। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সূত্রের মতে, যদি কোনও রাজ্য সরাসরি বিদেশের কোনও সংস্থা বা এনজিও থেকে অক্সিজেন বা কোভিড মোকাবিলার জন্য কোনও সরঞ্জাম আনাতে বা কিনতে চায়, তা হলে তারা সেটা করতেই পারে।
তবে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে কোভিড সরঞ্জাম আনানোর ব্যবস্থা করলেও এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হয়নি ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা ভারতকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু আমাদের জানানো হয়েছে এখনই তার কোনও প্রয়োজন নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy