কমলা হ্যারিস। —ফাইল চিত্র।
আকাশপাতাল বিপরীত দু’টো ছবি! সাউথ ফ্লরিডার পাম বিচ কাউন্টির কনভেনশন সেন্টারে পাগলপারা উল্লাসে ভেসে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা। জায়ান্ট স্ক্রিনে টিভির সম্প্রচারে আর ওঁদের কারও চোখ নেই। ট্রাম্পের জয়ের খবর তো এসেই গিয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসি-র হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কমলা হ্যারিসের সমর্থকদের জমায়েতেও বড় পর্দায় চলছিল ভোটগণনার খবর। এক সময়ে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হল। সকালের উত্তেজনা তখন স্তিমিত। কেউ কেউ আশায় ছিলেন, এই ‘ওয়াচ পার্টি’র মঞ্চে উঠে হয়তো ‘হাল ছেড়ো না বন্ধু’ গোছের কিছু বলবেন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি তো পত্রপাঠ পরাজয় স্বীকার করেননি। কিন্তু কমলার প্রচার বিভাগের সহ-চেয়ারম্যান জানিয়ে দিলেন, তিনি আসছেন না। শুনে অনেকেই বাড়ির পথ ধরলেন।
টিভি আর ইন্টারনেটে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখছিলাম এই দৃশ্যগুলো। ম্যাসাচুসেটস প্রদেশটা ডেমোক্র্যাট ঘাঁটি, যাকে বলে ‘ডিপ ব্লু স্টেট’। এখানে প্রায় ত্রিশ বছর আছি। রোনাল্ড রেগনের পরে আর কোনও রিপাবলিকান প্রার্থী এখান থেকে জেতেননি। এ বারও আমাদের প্রদেশে খুব তাড়াতাড়ি জয়ী ঘোষিত হয়েছিলেন কমলা। তার পরেই চোখ রেখেছিলাম জয়-পরাজয়ে প্রধান ভূমিকা নেওয়া সুইং-স্টেটগুলোর ফলাফলে। দেখলাম, একে একে নিভে যাচ্ছে কমলার আশা।
বন্ধুদের সঙ্গে টুকটাক কথা হচ্ছিল। অনেকেই হতাশ। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ, অনুপ্রবেশ নিয়ে সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলোর নাজেহাল অবস্থার কথাও বলছিল ওরা। আমার এক সহকর্মী জানালেন, গত কাল এক হিসপ্যানিক মহিলার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। স্প্যানিশ টানে কথা বলা মহিলাটি অনুপ্রবেশ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন। জো বাইডেন প্রশাসন মেক্সিকো সীমান্ত খুলে দিয়েছিল। আমার শ্বেতাঙ্গ সহকর্মী বলছিলেন, যাঁরা কষ্ট করে অভিবাসন অর্জন করেছেন, তাঁরা কিন্তু এই অনুপ্রবেশ বরদাস্ত করবেন না। ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে,সুইং-স্টেটগুলিতে লাতিনো গোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায় উল্লেখযোগ্য ভাল ফল করেছে রিপাবলিকানরা।
কমলা কি দেরি করে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাসুল দিলেন? এমন আঁচ মিলছে যে, কমলার নীতিকে, বিশেষত অর্থনৈতিক নীতিকে বাইডেনের থেকে আলাদা ভাবেননি সাধারণ মানুষ। টেক্সাসের এক বাঙালিও বলছিলেন, বাইডেন জমানার নেতিবাচক প্রভাব কমলাকে ভোগাল। অনেক সাড়া জাগিয়ে শুরু করা কমলার কথাবার্তাও অনেক সময়ে চর্বিতচর্বণের মতো শোনাচ্ছিল বলে মনে হয়েছে তাঁর।
এ দেশে ‘কাচের ছাদ’ ভেঙে শুভ্র প্রাসাদে এক অ-শ্বেতাঙ্গ নারীর ইতিহাস লেখার অপেক্ষা তাই দীর্ঘায়িতই হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy