ফাইল চিত্র।
নিজেদের নীতি থেকে সরতে নারাজ চিন। ভিয়েতনাম সীমান্তের কাছে একটি শহরে গত তিন দিনে মোট ৭০ জন করোনা-আক্রান্ত ধরা পড়তেই ‘বন্দি’ করা হয়েছে শহরের ৩৫ লক্ষ বাসিন্দাকে।
বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহৎ অর্থনীতিগুলির মধ্যে চিনই একমাত্র দেশ, যারা এখনও করোনা-শূন্য নীতি থেকে সরে আসতে নারাজ। ইউরোপ-আমেরিকা আগেই ঘোষণা করেছে, কোভিডকে সঙ্গে নিয়ে বাঁচতে হবে। চিন অবশ্য কোনও শহরে হাতেগোণা কিছু মানুষের কোভিড ধরা পড়লেই গোটা শহরকে গৃহবন্দি করছে। শুধু তা-ই নয়, সম্প্রতি এই দৃশ্যও প্রকাশ্যে এসেছে যে, কোভিড-ক্যাম্প তৈরি করেছে চিন। করোনা-সংক্রমিতের সংস্পর্শে এলেই, বা তাঁর ধারেকাছে এলেও দু’তিন সপ্তাহের জন্য ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে রাখা হচ্ছে।
আজ চিনের দৈনিক সংক্রমণ মাত্র ৭৯। এর মধ্যে ৩৭ জন গুয়াংশির অঞ্চলের। দক্ষিণ গুয়াংশি অঞ্চলের বেস শহরের কথা গোড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের করোনা-শূন্য নীতি মেনে আজ থেকে এখানে লকডাউন শুরু হয়েছে। শহর-প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গৃহবন্দি তো থাকতে হবেই, আপাতত কেউ শহর ছেড়েও কোথাও যেতে পারবেন না। ট্রাফিক ব্যবস্থার উপরেও নজর রাখা হচ্ছে। বাইরে থেকে কেউ এই শহরে যাতে প্রবেশ করতে না-পারে, তার জন্য নজরদারি ব্যবস্থা। শহরের ভাইস-মেয়র গু জুনইয়ান বলেন, ‘‘কোনও রকম অপ্রয়োজনীয় গতিবিধি বরদাস্ত করা হবে না।’’
বেস শহরের ভিতরে অনেক ছোট ছোট কাউন্টি, গ্রামীণ অঞ্চল রয়েছে। কড়া নিয়মে বেঁধে ফেলা হয়েছে অঞ্চলগুলিকে। শুক্রবার বেসে প্রথম স্থানীয় সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার পর থেকেই শোরগোল পড়ে যায়। যাঁর কোভিড ধরা পড়ে, সেই ব্যক্তি সপ্তাহব্যাপী চিনা নববর্ষের ছুটি কাটিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। ফেরার পরেই সংক্রমণ ধরা পড়ে।
গত দু’বছর ধরে লকডাউন, গণহারে করোনা-পরীক্ষা, দূরত্ববিধি, মাস্ক পরার মতো নিয়মে দেশবাসীকে বেঁধে রেখেছে চিন। অল্প সংখ্যক মানুষের করোনা ধরা পড়লেই তা সমূলে নিশ্চিহ্ন করতে বদ্ধপরিকর সরকার। সম্প্রতি বেজিংয়ে এক জনের করোনা ধরা পড়তেই হইচই পড়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে সামনে অলিম্পিক্সের আসর বসছে চিনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাড়িতে বন্দি করে রেখেছে সরকার। যদিও এ প্রশ্ন থাকছেই যে, অলিম্পিক্সে যোগ দিতে যে বিপুল সংখ্যক ভিন্দেশি খেলোয়াড় ও দর্শক আসবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে করোনা-পরিস্থিতি কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে!
ও দিকে, করোনা অতিমারির শুরু থেকে কড়া কোভিড বিধি চালু রয়েছে হংকং জুড়ে। বর্তমানে বিমান পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে ৯০ শতাংশ। সন্ধে ছ’টার পরে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে রেস্তরাঁ। জিম, পার্ক বন্ধ। অধিকাংশ কর্মীই বাড়ি থেকে কাজ করছেন। তবু গত মাস থেকেই সেখানে কোভিড সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। সোমবার নতুন করে ৬১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন হংকংয়ে। এই পরিস্থিতিতে আঙুল উঠছে প্রশাসনের কড়া কোভিড বিধির দিকে। এত কড়া নিয়ম পালন সত্ত্বেও কী করে সেখানে সংক্রমণ বাড়ছে, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy