Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
China

করোনায় মৃত প্রায় ১৭০০, চিন বলছে ক্রমশ ‘কমছে’ আক্রান্ত

ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে গিয়ে চিনে ১৭০০-র বেশি চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৭
Share: Save:

দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা কমছে বলে আজ ফের আশ্বস্ত করল চিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে রবিবারও গোটা দেশ জুড়ে ২০০৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১৪২ জনের। সব মিলিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছুঁল ১৬৬৫। আক্রান্ত ৬৮ হাজার। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৯ হাজার জন। চিনের বাইরে অন্তত ৩০টি দেশে ৫০০ জন এই ভাইরাসের কবলে পড়েছেন। ফ্রান্স, হংকং, ফিলিপিন্স ও জাপানে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।

ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে গিয়ে চিনে ১৭০০-র বেশি চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের মুখপাত্র মি ফেং আজ জানিয়েছেন, সরকারের তরফে সংক্রমণ রোখার প্রচেষ্টা অনেকাংশে সফল হচ্ছে। মারণ ভাইরাস রুখতে পারে এমন বেশ কিছু ওষুধ পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করে দেখা গিয়েছে সেগুলি যথেষ্ট কার্যকরী। আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বেজিংয়ে বৈঠকে বসেন চিনের স্বাস্থ্য অধিকর্তারা। এই মহামারী রোখার প্রক্রিয়া কতটা কার্যকর হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে দেশের তিনটি অঞ্চলে যৌথ ভাবে অভিযান চালাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও চিনের স্বাস্থ্য কমিশন। এই পরিস্থিতিতে চাহিদা সামাল দিতে চিনে চিকিৎসার সরঞ্জাম রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা আংশিক ভাবে তুলে নিল ভারত। চিন জানিয়েছে, আক্রান্তদের চিকিৎসার সময়ে চিকিৎসাকর্মীদের ব্যবহারের জন্য প্রচুর পরিমাণে মাস্ক, দস্তানা ও পোশাক প্রয়োজন তাদের। গত তিন সপ্তাহ ধরে দেশ জুড়ে প্রবল চাহিদার কারণে মাস্ক দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছিল। আজ ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরি জানিয়েছেন, বেজিংকে সাহায্য করতে শীঘ্রই চিকিৎসা সামগ্রী পাঠাবেন তাঁরা। এ দিকে আবার অ্যাসপিরিন, পেনসিলিনের মতো ওষুধ মূলত চিন থেকে আমদানি করায় বিপদে পড়েছে আমেরিকা।

এরই মধ্যে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের একটি বক্তৃতা ঘিরে শুরু হয়েছে চর্চা। যেখানে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, দেশের মানুষকে সচেতন করার ঢের আগেই করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত ছিলেন প্রেসিডেন্ট। করোনা নিয়ে শুরুতেই মুখ না খোলায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয় চিনফিংকে। ৩ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, শনিবার তা প্রকাশিত হয়েছে কমিউনিস্ট পার্টির জার্নালে। যেখানে তিনি বলেছেন, ৭ জানুয়ারিই তিনি করোনাভাইরাস ‘প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের’ নির্দেশ দেন। অথচ এই ভাইরাস নিয়ে দেশের মানুষকে সচেতন করা হয় জানুয়ারির শেষে। সমালোচকদের বক্তব্য, চিনফিংয়ের বক্তৃতার এই অংশ প্রকাশ করে সরকার প্রমাণ করতে চাইছে শুরু থেকেই করোনা রুখতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি তারা। এমনিতেই করোনা নিয়ে দীর্ঘ সময়ে মুখ না খোলায় প্রেসিডেন্টের আচরণ নিয়ে জনরোষ বাড়ছিল। তা চরমে পৌঁছয় এই মাসের গোড়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে লি ওয়েনলিয়াংয়ের মৃত্যুর পরে। তাতে প্রলেপ দিতেই এই দাবি, মনে করছেন সমালোচকরা।

রবিবার হুবেই প্রদেশের ছ’টি শহর থেকে বিশেষ বিমানে তাদের মোট ১৭৫ জন নাগরিককে উদ্ধার করল নেপাল। তাঁদের অধিকাংশই পড়ুয়া। সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ওই চিন-ফেরত নাগরিকদের আগামী দু’সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। জানুয়ারির শুরু থেকেই ‘তালাবন্দি’ হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান। আজ বিদেশমন্ত্রী ওয়াং উই জানিয়েছেন, হুবেইয়ে নতুন করে সংক্রমণের ঘটনা যেমন কমছে, তেমন সংক্রমণ মুক্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। এই আতঙ্কের মধ্যেই শুরু হয়েছে টোকিয়ো অলিম্পিকের প্রস্তুতি। টর্চ হাতে দৌড়ের মহড়া ছিল গত কাল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE