ভারত-চিন কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাবনার সঙ্গে সহমত বেজিং। মার্কিন পডকাস্টার লেক্স ফ্রিডম্যানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারত এবং চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মসৃণ করার চেষ্টার কথা বলেছেন মোদী। দুই দেশের আলোচনার উপর জোর দিয়েছেন তিনি। চিন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে মতানৈক্য থাকা স্বাভাবিক, তবে মতানৈক্য যেন বিবাদে পরিণত না-হয়। তাঁর এই মন্তব্যের প্রশংসা করেছে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের বিদেশ মন্ত্রক। সোমবার চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং জানিয়েছেন, এই একই লক্ষ্যে বেজিংও সক্রিয় ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
চিনা সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইম্স’ অনুসারে, মাও জানান, গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজ়ানে মোদী এবং জ়িনপিংয়ের মধ্যে সদর্থক বৈঠক হয়েছে। ভারত-চিন সম্পর্ককে উন্নত করার জন্য কী করণীয়, তার একটি কৌশল স্থির হয়েছে বৈঠকে। দুই দেশের রাষ্ট্রনেতার বৈঠকে যে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য নয়াদিল্লি এবং বেজিং, উভয়েই গত কয়েক মাসে আন্তরিক ভাবে কাজ করছে বলেও জানান চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। এর ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তবভিত্তিক সহযোগিতা এবং ইতিবাচক ফলাফলও মিলেছে বলে মত তাঁর। ভারত এবং চিনের মধ্যে দু’হাজার বছরেরও বেশি পুরনো ইতিহাসের কথাও তুলে ধরেন তিনি। এই দীর্ঘ সময় ধরে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং একে অন্যের অগ্রগতিতে অবদান রেখেছে বলেও দাবি মাওয়ের।
বস্তুত, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গালওয়ানে চিনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েক জন চিনা সেনাও নিহত হয়েছিলেন। সেখান থেকেই দু’দেশের সম্পর্কে কিছুটা শীতলতা তৈরি হয়েছিল। তবে গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজ়ানে ব্রিক্স সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে আলোচনায় বসেন মোদী এবং জ়িনপিং। ওই বৈঠকের পর থেকে আবার দ্বিপাক্ষিক স্তরে সম্পর্ক উন্নত হতে শুরু করে।
আরও পড়ুন:
রবিবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে মোদী জানান, গালওয়ান-কাণ্ডের আগের মতোই সম্পর্ক তৈরি করতে চায় ভারত। তাঁর বিশ্বাস, দু’দেশের তরফেই একে অন্যের প্রতি আস্থা এবং আগ্রহ আবার ফিরে আসবে। তবে মাঝে প্রায় পাঁচ বছরের ব্যবধান তৈরি হওয়ার জন্য এই প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগবে বলে মনে করছেন মোদী।