প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার সাক্ষাৎকার নিজের সমাজমাধ্যম হ্যান্ডলে পোস্ট করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি মার্কিন পডকাস্টার লেক্স ফ্রিডম্যানকে একটি সাক্ষাৎকার দেন মোদী। রবিবার সেটি প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক থেকে শুরু করে রুশ-ইউক্রেন, পাকিস্তান, চিন এবং ভারতীয় রাজনীতির বিবিধ বিষয় উঠে এসেছে। ওই সাক্ষাৎকারটি ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ নিজের সমাজমাধ্যমের পাতায় পোস্ট করেছেন ট্রাম্প। এই সমাজমাধ্যম সংস্থাটি ট্রাম্পেরই মালিকানাধীন।
মোদী এবং ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সখ্য সর্বজনবিদিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের প্রথম জমানায় হিউস্টনে ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল। আবার ভারতেও গুজরাতের অহমদাবাদে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ কর্মসূচি আয়োজিত হয়। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের সেই সখ্যের কথাও তুলে ধরেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী জানান, হিউস্টনের ওই অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তৃতার সময়ে ট্রাম্প দর্শকাসনে বসে গোটা বক্তৃতা শুনেছিলেন। বক্তৃতার শেষে স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করার কথাও স্মরণ করান মোদী। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে ট্রাম্পের বিভিন্ন নীতিতে আভাস মিলেছে যে, আমেরিকার প্রয়োজনকে সবার আগে গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি, তার পরে অন্য দেশ। সাক্ষাৎকারে মোদী জানান, ট্রাম্প যেমন ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতিতে বিশ্বাস করেন, তেমন তিনিও ‘ভারত প্রথম’ নীতিতে বিশ্বাসী। সেই কারণেই তাঁদের সম্পর্ক মধুর।
আরও পড়ুন:
ওই সাক্ষাৎকারে মোদী জানিয়েছেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রথম দফার তুলনায় দ্বিতীয় দফায় ট্রাম্প দৃশ্যত অনেক বেশি প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রীর মতে, দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ট্রাম্পকে দেখে মনে হচ্ছে, তাঁর কাছে একটি স্থির লক্ষ্য রয়েছে, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতিটি পদক্ষেপ সুনির্দিষ্ট। প্রতিটি পদক্ষেপ যেন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্যই। এমনকি আমেরিকার নির্বাচনী প্রচারের সময়েও ট্রাম্পকে যথেষ্ট প্রত্যয়ী দেখিয়েছে বলে মনে করেন মোদী। গত বছরের নির্বাচনী প্রচারের সময়ে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। ট্রাম্পের কান ঘেঁষে সেই গুলি বেরিয়ে গিয়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেন, “গুলি চলার পরেও তিনি (ট্রাম্প) আমেরিকার প্রতি একই রকম নিবেদিত ছিলেন। দেশের জন্য নিজের জীবনকে সঁপে দিয়েছেন তিনি।”
মার্কিন পডকাস্টারকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হওয়ার পরে অবশ্য দেশীয় রাজনীতিতে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে মোদীকে। প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধে কংগ্রেস শিবিরের দাবি, যিনি সাংবাদিক বৈঠকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে ভয় পান, তিনি বিদেশের পডকাস্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।