দু’দিনের বেজিং সফরে শাহবাজ় শরিফ। ছবি: সংগৃহীত।
কাকস্য পরিবেদনা!
চিনের মহা-যোগাযোগ প্রকল্প ওবর-এর অন্তর্গত চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন মঞ্চে আপত্তি জানিয়েছে ভারত। তার নিট ফল, আজ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের দু’দিনের বেজিং সফরের পরে যে যৌথ বিবৃতি (চিন-পাকিস্তান) প্রকাশিত হয়েছে, তার অর্ধেক জুড়েই রয়েছে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের কাজ দ্রুত শুরু করে দেওয়ার খুঁটিনাটি। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, এই ক্ষেত্রটি নিয়ে দু’দেশের সঙ্গেই ভারতের কূটনৈতিক সংঘাত অনিবার্য।
গত কালই এ বিষয়ে পূর্বাভাস ছিল সাউথ ব্লকের কাছে। এসসিও গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলির (যেখানে চিন এবং পাকিস্তান, উভয় দেশই রয়েছে) বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরে এই মর্মে আগাম স্বর চড়িয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছিলেন, “যে কোনও পরিকাঠামো গড়ার ক্ষেত্রে এসসিও-র সদস্য রাষ্ট্রগুলির মনে রাখা উচিত, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বে যেন আঘাত না লাগে।” এই মন্তব্যের নিশানা স্পষ্ট। চিন-পাকিস্তান প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক করিডর যাওয়ার কথা পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে, যা নিয়ে প্রবল আপত্তি রয়েছে মোদী সরকারের। চিনকে বার বার বলা হয়েছে, ওই ভূখণ্ড জোর করে দখল করে রেখেছে ইসলামাবাদ। বিষয়টি বিতর্কিত, সেখানে কোনও পরিকাঠামো নির্মাণ বরদাস্ত করা হবে না।
কিন্তু আজ প্রকাশিত চিন-পাকিস্তান যৌথ বিবৃতিতে স্পষ্ট, নয়াদিল্লির অনুরোধকে আমলই দিচ্ছে না শি জিনপিং সরকার। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর ওবর প্রকল্পের মুখ বিশেষ। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে তা যুক্ত। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এই প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে উচ্চ মান বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গত ২৭ অক্টোবর এই করিডর সংক্রান্ত যুগ্ম কমিটি গোটা প্রকল্পটি পর্যালোচনা করেছে এবং কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে।’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ভারতের নাম না করে ওই যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর এবং উভয় দেশের বন্ধুত্বের বিরুদ্ধে যাবতীয় হুমকি এবং ছককে প্রতিহত করতে দুই পক্ষই ঐক্যবদ্ধ। পাকিস্তানে এই প্রকল্পে নিযুক্ত সব চিনা কর্মীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার প্রশ্নে দায়বদ্ধ ইসলামাবাদ। এ ব্যাপারে পাকিস্তানের কঠোর উদ্যমের প্রশংসা করেছে চিন।’ এর পরেই বলা হয়েছে, ‘দু’পক্ষই কোনও উৎসাহী তৃতীয় রাষ্ট্রকে এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করার জন্য স্বাগত জানাচ্ছে।’ আফগানিস্তান এবং তুরস্ককে এই প্রকল্পে শামিল করার জন্য ইতিমধ্যেই চেষ্টা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy