রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ। ছবি: সংগৃহীত।
জঙ্গি কার্যকলাপের পিছনে উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসের শ্রেণিভেদ করার বিরুদ্ধে সরব হল ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের দাবি, এই প্রবণতা বিপজ্জনক। মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ বা হিন্দু, কোনও সম্প্রদায়ের উপরেই জঙ্গি হামলা সমর্থনযোগ্য নয়। ‘আমার জঙ্গি, তোমার জঙ্গি’ বিচার করলে বিশ্ব আবার ৯/১১-এর আগের চেহারায় ফিরে যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস-বিরোধী কৌশলের অষ্টম পর্যালোচনায় রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ বলেন, ‘‘জঙ্গি কার্যকলাপের পিছনের উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে শ্রেণিভেদ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল নীতির বিরোধী। সেই নীতি অনুযায়ী, কোনও সন্ত্রাসই গ্রহণযোগ্য নয়।’’
রুচিরার কথায়, ‘‘ভাল জঙ্গি, খারাপ জঙ্গি বলে তকমা দেওয়া হলে বিশ্ব ৯/১১-এর আগের চেহারায় ফিরে যাবে। তখন জঙ্গিদের ‘তোমার জঙ্গি’, ‘আমার জঙ্গি’ তকমা দেওয়া হত। সে ক্ষেত্রে গত দু’দশকে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার আর মূল্য থাকবে না।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘দক্ষিণপন্থী বা চরম দক্ষিণপন্থী উগ্রপন্থা বা চরম বামপন্থী উগ্রপন্থার মতো শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। কারণ কিছু কায়েমি স্বার্থ এই শব্দগুলির অপব্যবহার করতে পারে। সন্ত্রাসকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হলে তা গণতন্ত্রের মূল ধারণার বিরোধী হয়ে দাঁড়াতে পারে।’’
রুচিরার মতে, ২০০৬ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জে গৃহীত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস-বিরোধী কৌশলে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল কোনও সন্ত্রাসই গ্রহণযোগ্য নয়। সন্ত্রাস দমনে বিভিন্ন দেশ আলাদা আলাদা ভাবে ও যৌথ ভাবে কী কী পদক্ষেপ করবে তাও জানানো হয়েছিল। ওই নথির গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখতে দু’বছর অন্তর পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভা। রুচিরার মতে, ‘‘ওই কৌশলের সপ্তম পর্যালোচনায় মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে জঙ্গি হামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। বর্তমান পর্যালোচনায় এই কৌশলের ভিত্তি আরও প্রসারিত করা যেতে পারে।’’
সরকারি সূত্রের মতে, সম্প্রতি দেশ-বিদেশে খলিস্তানি কার্যকলাপ বেড়েছে। অস্ট্রেলিয়াতেও ভারতীয় দূতাবাস, হিন্দু মন্দিরকে নিশানা করেছে খলিস্তানিরা। ফলে হিন্দু-বিরোধী, শিখ-বিরোধী হামলাকেও আন্তর্জাতিক কৌশলের অন্তর্ভুক্ত করতে উদ্যোগী হয়েছে দিল্লি।
সাইবার দুনিয়ায় জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়েও সরব হন রুচিরা। পাকিস্তানের নাম না করে তাঁর দাবি, ‘‘যে সব দেশ জঙ্গিদের আশ্রয় দেয় তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে মনে রাখা উচিত ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) মতো সংস্থার অবদান। এই সংস্থার চাপেই অনেক দেশ সন্ত্রাসে আর্থিক মদতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy