আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে আসা পণ্যের উপর আমেরিকায় ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছেন ট্রাম্প। আমেরিকার পণ্যের উপর পাল্টা একই হারে শুল্ক চাপিয়েছে কানাডা। সেই আবহে এ বার আমেরিকার বাসিন্দাদের একটি আবেগপ্রবণ বার্তা দিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। আমেরিকার ‘অন্ধকার সময়ে’ কী ভাবে কানাডা তাদের পাশে থেকেছে সেই কথাই স্মরণ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছি। মরেওছি।’’
ট্রুডোয় কথায় উঠে এসেছে ইরানে আমেরিকানদের পণবন্দি করা কিংবা আফগানিস্তান যুদ্ধের কথা। তা ছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কানাডা কী ভাবে আমেরিকাকে সাহায্য করেছে, তা-ও উল্লেখ করেছেন ট্রুডো। আমেরিকাবাসীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘আমরা (আমেরিকা এবং কানাডা) বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সফল অর্থনৈতিক, সামরিক এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছি। আমরা সব সময় আপনাদের সঙ্গে আছি।’’ অতীতে দু’দেশের মধ্যে যে মতপার্থক্য ছিল তা মেনে নেন ট্রুডো। যদিও কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দাবি, সেই পার্থক্য মুছে ফেলতে সক্ষম হয়েছে দু’দেশের প্রশাসনই।
এখানেই না থেমে ট্রুডো আরও বলেন, ‘‘আমি আগেও বলেছি, ট্রাম্প যদি আমেরিকায় নতুন স্বর্ণযুগের সূচনা করতে চান, তবে কানাডার সঙ্গে অংশীদারিত্বই শ্রেয়। আমাদের শাস্তি দেওয়া নয়।’’ কানাডার প্রধানমন্ত্রীর আক্ষেপ, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত, সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের গৃহীত পদক্ষেপগুলি আমাদের একত্রিত করার পরিবর্তে বিভক্ত করছে।’’ আমেরিকার পণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক চাপানোর জন্য দুঃখপ্রকাশও করেছেন ট্রুডো। তাঁর ইঙ্গিত, এই পদক্ষেপ করা ছাড়া ট্রাম্প তাঁর কাছে অন্য কোনও পথ খোলা রাখেননি।
আরও পড়ুন:
ক্ষমতায় আসার পরেই ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি প্রতিবেশী কানাডা এবং মেক্সিকোর পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করবেন। সম্প্রতি তা প্রয়োগ করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার থেকে কানাডিয়ান পণ্যে আমেরিকা ২৫ শতাংশ শুল্ক বসাবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। শুধু কানাডা নয়, ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতির খাঁড়া থেকে বাদ পড়েনি মেক্সিকো এবং চিনও। কানাডার মতো আমেরিকায় মেক্সিকোর পণ্যের উপরও ২৫ শতাংশ শুল্ক জারি করেছেন ট্রাম্প। আর চিনের উপর ১০ শতাংশ হারে শুল্ক প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তার পরই ট্রুডোও পাল্টা শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেন।
- দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে প্রথম ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ভাষণে যেমন উঠে এসেছে আমেরিকার বিভিন্ন বিষয়, তেমনই জায়গা পেয়েছে বিদেশনীতিও।
- পূর্বসূরি জো বাইডেনের সরকারের সমালোচনাও শোনা গিয়েছে ট্রাম্পের কণ্ঠে। তাঁর ভাষণ জুড়ে ছিল কখনও অন্য দেশের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি, আবার কখনও শোনা গিয়েছে ধন্যবাদজ্ঞাপনও। উঠে এসেছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ প্রসঙ্গও!
-
তিন মাসের ‘যুদ্ধবিরতি’ চিন ও আমেরিকার! শুল্ক বনাম পাল্টা শুল্ক বসানোর লাগাতার লড়াই স্থগিত জেনেভা বৈঠকে
-
শুল্ক-বাণিজ্যে দর কষাকষি: মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্স আসছেন ভারতে, বৈঠক হবে মোদীর সঙ্গে
-
ট্রাম্পকে পাল্টা জবাব জিংপিঙের! বিরল খনিজ ও চুম্বক আমেরিকায় না পাঠানোর সিদ্ধান্ত চিনের
-
ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে কি বাদ যাবে না বৈদ্যুতিন পণ্য? শীঘ্রই আসছে বিশেষ মার্কিন শুল্ক!
-
মার্কিন শুল্কে ‘ভয় নেই’! ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে একজোট হওয়ার বার্তা চিনের