কিংস কলেজের শিক্ষক ড. প্রিয়ংবদা গোপাল।
বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ তুলে ক্লাস নেওয়া বন্ধ করলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভারতীয় কলেজ শিক্ষক।
প্রিয়ংবদা গোপাল নামে ওই কলেজ শিক্ষকের অভিযোগ, শুধুমাত্র গায়ের রঙের কারণেই তিনি হেনস্তার শিকার হচ্ছেন নিয়মিত। আর এতেও কোনও হেলদোল নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন লন্ডনের কিংস কলেজে ইংরাজির কলেজ শিক্ষক প্রিয়ংবদা। তাঁর অভিযোগ, কলেজে প্রবেশ করার সময় নিয়মিত তাঁকে অসম্মান করছেন কয়েকজন অশিক্ষক কর্মচারী। ঠিকমতো সম্বোধন করছেন না। কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত ক্লাস নিতে অস্বীকার করেছেন জেনএনইউয়ের প্রাক্তন ছাত্রী প্রিয়ংবদা।
বছর পঞ্চাশের প্রিয়ংবদা একটি টুইটে জানান, তিনি বর্ণবিদ্বেষের শিকার। কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কথাও উল্লেখ করেন ঔপনিবেশিক ও প্রাক-ঔপনিবেশিক সাহিত্যের এই বিশেষজ্ঞ।
টুইটবার্তায় প্রিয়ংবদা লেখেন, প্রতিদিন কলেজে প্রবেশের সময়ই ড.গোপাল সম্বোধন করতে অনুরোধ করলে তাঁকে শুনতে হয়, ‘আই ডোন্ট কেয়ার হু ইউ আর।’ এর আগেও কিংস কলেজের মতো অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাঁকে বিভিন্নভাবে বর্ণবিদ্বেষের শিকার হতে হয়েছে। বারবার শুধুমাত্র গায়ের রঙের জন্য তিনি ‘হেট মেইলস’ পর্যন্ত পেয়েছেন। নিয়মিত এই হেনস্তার কারণেই তিনি ক্লাস না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল। তাঁর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে অসংখ্য পোস্ট ও মন্তব্যে ছেয়ে যায় টুইটার। কিংস কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের ব্যবহার একেবারেই অপ্রত্যাশিত বলে উল্লেখ করেন নেটিজেনরা।
আরও খবর: জাপানের সমর্থকরা মন জিতলেন এই ভাবে!
দাম বাড়তে পারে অনলাইন শপিংয়ে, কারণটা জানেন তো?
গোপাল বলেন, ১৭ বছর ধরে লন্ডনের বিভিন্ন জায়গায় শুধুমাত্র ত্বকের রঙের জন্য বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়েছেন তিনি। এত বছর ধরে সহ্য করার পর এই কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। অনুশোচনা হলেও কিছু করার নেই তাঁর।
কলেজ কর্তৃপক্ষ বারবারই জানিয়েছে, ড. গোপালের সঙ্গে কোনওরকম অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়নি। কোনও অশিক্ষক কর্মচারীও তাঁকে অসম্মান করেননি। গোপালের অভিযোগ পেয়ে কলেজের তরফে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুই মেলেনি। সোমবার কলেজের গেটে কার্ড দেখাতে বলায় তা নিয়ে প্রিয়ংবদার বচসাও হয় ‘হেড-পোর্টার’-এর। কিছুতেই তাঁকে ড. গোপাল বলতে রাজি হননি ওই হেড পোর্টার। বারবার তাঁকে অনুরোধ করেও কাজ হয়নি। এর পাল্টা কেউ কেউ বলেছেন, ড. গোপাল না বলে কেউ যদি শুধু ‘ম্যাডাম’ ডাকে তাঁকে,তাতে ক্ষতি কীসের।
আরও খবর: রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদ থেকে সরল আমেরিকা
মার্কিন মুলুকে অন্য ছবি বানাচ্ছেন ঋত্বিকের নাতনি
কলেজের তরফে বলা হয়েছে, ড. গোপাল কিংস কলেজের সরাসরি সদস্য নন বলেই তাঁকে হয়তো অন্য রাস্তা ব্যবহার করতে বলা হয়েছিল।কিন্তু কোনওরকম বর্ণবৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়নি তাঁর সঙ্গে। এই ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি।
প্রিয়ংবদার স্পষ্ট দাবি, তিনি ছাড়া আরও অনেকেই বর্ণবিদ্বেষের শিকার কিংস কলেজে। তাঁরাও এই হেনস্তার কারণে বিভিন্ন সময়ে তাঁর কাছে এসে কান্নাকাটি করেছেন। কিংস কলেজের তরফে যেহেতু এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে,বাধ্য হয়েই তিনি প্রতিবাদের এই রাস্তা বেছে নিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy