ছবি রয়টার্স।
প্রত্যাশা মতোই গত কাল মাঝ রাত থেকে সংঘর্ষবিরতির পথে হাঁটল প্যালেস্তাইন আর ইজ়রায়েল। আর তার পরেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে বাঁচার অধিকার দু’দেশের মানুষেরই রয়েছে। সেই সঙ্গে গোটা শান্তি প্রক্রিয়ায় ইজ়রায়েলের অন্তর্বর্তিকালীন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বাইডেন।
গাজ়া ভূখণ্ডে আপাতত শান্তি ফেরায় স্বস্তিতে গোটা বিশ্ব। কাল মাঝ রাত থেকেই গাজ়ায় উৎসবের চেহারা। গাড়ির হর্ন বাজিয়ে এই সংঘর্ষবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। কেউ আবার মেতেছেন গান-বাজনায়। প্যালেস্তাইনের পতাকা হাতেও উল্লাস করতে দেখা গিয়েছে অনেককে।
গত কাল স্থানীয় সময় রাত দু’টো থেকে গাজ়ায় সংঘর্ষবিরতি শুরু হয়। গত ১১ মে থেকে হামাস ও ইজ়রায়েলি সেনার দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত ছিল গোটা ভূখণ্ড। এক সেনা-সহ ইজ়রায়েলে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। উল্টো দিকে, ইজ়রায়েলি সেনার প্রত্যাঘাতে গাজ়ায় মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ২৪৩ জন সাধারণ মানুষ। যার মধ্যে ৬৬টি শিশু। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় দু’হাজার প্যালেস্তাইনি। ইজ়রায়েলের রকেট হামলায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে প্রায় ১৬ হাজার বাড়ি। তবে সেগুলি পুনর্নির্মাণে রাষ্ট্রপুঞ্জকে তাঁর প্রশাসন সব রকম ভাবে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট।
হোয়াইট হাউস থেকে গত কালই এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি সুরক্ষিত ও শান্তিপূর্ণ ভাবে থাকার অধিকার ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্তাইন দু’দেশের নাগরিকদেরই রয়েছে। আমরা গাজ়ায় শান্তি ফেরাতে নীরবে কূটনীতি চালিয়ে যাব।’’ কাল নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভায় সংঘর্ষবিরতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেই তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বাইডেন। ফোন করেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফতাহ আল-সিসিকেও। হামাসের সঙ্গে সদর্থক চুক্তি করতে মিশরের সরকারের অবদানও ভোলার নয় বলে জানিয়েছেন বাইডেন। তবে সেই সঙ্গেই জুড়েছেন, হামাস জঙ্গিগোষ্ঠী যত বার ইজ়রায়েলকে আক্রমণ করবে, তত বারই নিজেদের রক্ষা করতে প্রত্যাঘাত করবে ইজ়রায়েলি সেনা। গাজ়ায় শান্তি ফেরার পক্ষে সওয়াল করেছে ভারতও। দু’দেশই যাতে ফের আলোচনার রাস্তায় হাঁটতে পারে, সেই প্রক্রিয়া শুরু করতে কাল আর্জি জানিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী দূত টি এস তিরুমূর্তি। এ দিকে, রকেট হামলায় বিধ্বস্ত গাজ়ার মানুষকে অর্থ এবং করোনার প্রতিষেধক দিয়ে সাহায্য করতে তারা রাজি বলে আজ জানিয়েছে চিনের বিদেশ মন্ত্রকও।
এই সংঘর্ষবিরতি আসলে তাদের জয় বলে আজ দাবি করেছে দু’পক্ষই। নেতানিয়াহু আজও বলেছেন, ‘‘লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছি আমরা। এটা এক বিরাট সাফল্য।’’ ইজ়রায়েলি সেনাও জানাচ্ছে, হামাস জঙ্গি গোষ্ঠীর সুবিশাল অস্ত্র ভাণ্ডার ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে তারা। উল্টো দিকে, হামাস আধিকারিকদেরও দাবি, ইজ়রায়েল চুক্তি লঙ্ঘন করলে তারাও চুপচাপ বসে থাকবে না।
তবে আপাতত গোটা বিশ্ব স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও ইজ়রায়েল বা প্যালেস্তাইনের কিছু মানুষ এখনও খুশি নন। ইজ়রায়েলি হামলায় সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে সামিরা আবদল্লা নাসিরের বাড়ি। ১১ সন্তানের মা বললেন, ‘‘কিসের শান্তি চুক্তি? বাড়িটা পুরো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। না আছে, জল না বিদ্যুৎ। একটা ম্যাট্রেস পর্যন্ত অক্ষত নেই, যেটা পেতে শুতে পারব।’’ উল্টো দিকে, হামাস জঙ্গি গোষ্ঠীর উপরে গোটা অশান্তির দায় ঠেলছেন ইজ়রায়েলের বাসিন্দারা। বন্দর শহর আশদদের এক কাফেতে বসে ২৫ বছরের দান কিরি বলেছেন, ‘‘হামাসকে শেষ না করা পর্যন্ত ইজ়রায়েলের বসে থাকা উচিত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy