থাকব না আর বদ্ধ ঘরে... অতিমারি রুখতে আইনি কড়াকড়ি বজায় রেখেছে জার্মান সরকার। কিন্তু গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি চান বাসিন্দারা। শনিবার তারই প্রতিবাদ বার্লিনের রাস্তায়। এপি
করোনা-আতঙ্ককে প্রায় হেলায় উড়িয়ে দিচ্ছিলেন দু’জনেই। ক্রমে সংক্রমিত হন নিজেরা। সুস্থ হওয়ার পরে এক জন বলেছেন, ‘‘চিকিৎসকদের কৃপায় এ যাত্রা বেঁচে ফিরলাম।’’ দেশবাসীকে কী ভাবে বাঁচাবেন, তা নিয়ে এখন প্রবল চিন্তায় তিনি। নতুন স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা আইন জারি করে ফেলেছেন রাতারাতি। দ্বিতীয় জনের প্রতাপ এখনও অব্যাহত। সুস্থ হয়েই বললেন, ‘‘কত লোকই তো রোজ মারা যান কত কারণে! ভয় পেলে চলবে না।’’
প্রথম জন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। দ্বিতীয় ব্যক্তি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে ইতিমধ্যেই চুক্তি সেরে ফেলেছে বরিসের সরকার। তার আগে যত দিন না বাজারে প্রতিষেধক আসছে, সুস্বাস্থ্যের উপরে জোর দিচ্ছেন তারা। ফ্যাট বা অতিরিক্ত শর্করা-জাতীয় খাবারের বিজ্ঞাপন ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যার নিরিখে চতুর্থ স্থানে ব্রিটেন। ৪৬,১১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ব্রাজিল কিন্তু এই তালিকায় অনেক এগিয়ে। সংক্রমণ ও মৃত্যু, দুইয়েই তার দ্বিতীয় স্থান। ২৬ লাখের উপরে আক্রান্ত এ দেশে। মারা গিয়েছেন সাড়ে ৯২ হাজার। প্রেসিডেন্ট অবশ্য এখনও বেপরোয়া। তিন সপ্তাহ নিজের প্রাসাদে কোয়রান্টিন থাকার পরে ৬৫ বছর বয়সি বোলসোনারো কাল বলেন, ‘‘আমি তো হাই-রিস্কের দলে ছিলাম। তাতে কী!’’ সাংবাদিকদের কাছে ‘দুঃসাহসী’ প্রেসিডেন্ট বললেন, ‘‘আমি জানতাম, এক দিন আমিও সংক্রমিত হবো। আমার তো ধারণা, দুর্ভাগ্যজনক হলেও এমন একটা দিন আসবে, যখন সবাই আক্রান্ত হবেন। ভয় পেয়ে কী হবে! বরং জোরের সঙ্গে মুখোমুখি হোন। মৃত্যু দুঃখের, কিন্তু কত লোকই তো প্রতিদিন মারা যান কত কারণে। এটাই জীবন।’’
আরও পড়ুন: লাদাখ নিয়ে ভারতের পাশে আমেরিকা
করোনা পরিস্থিতি সামলাতে বোলসোনারোর ব্যর্থতা নিয়ে বহু সমালোচনা হয়েছে। কোভিড নিয়ে প্রথম দিকে বলেছিলেন, ‘‘সামান্য ফ্লু।’’ কখনও মাস্ক পরতেন না। নিজের কোভিড-পজ়িটিভ হওয়ার খবরও সাংবাদিক বৈঠকে মাস্ক না-পরেই ঘোষণা করেন। সুস্থ হওয়ার পরে তিনি একই মেজাজে। কোয়রান্টিন থেকে বেরোনোর পরেই, বৃহস্পতিবার একটি অনুষ্ঠানে যান মাস্ক না-পরে। ওই দিনই তাঁর স্ত্রী মিশেলের করোনা ধরা পড়ে। বোলসোনারো এখনও ঘরে-থাকার-বিধির বিরোধী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তার থেকে রোজ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন খান ও কাজে যান।’’ অথচ একাধিক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, করোনা-চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের কোনও উপকারিতা নেই।
প্রায় একই ধরনের কথা বলতে শোনা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। তিনিও লকডাউন, দূরত্ববিধি, মাস্ক পরার বিরোধী। এ দিকে, সব চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে আমেরিকায়, দেড় লাখেরও উপরে। সংক্রমিত ৪৭ লক্ষ। ট্রাম্পের দাবি, পরীক্ষা বেশি হচ্ছে, তাই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। আজও তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশে ছ’কোটি লোকের পরীক্ষা হয়েছে। অন্য দেশের তুলনায় ছ’গুণ বেশি। ভারতেই দেখুন, ওদের ১ কোটি ১০ লাখ মতো পরীক্ষা হয়েছে।’’ হোয়াইট হাউসের তরফেও আজ বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, কোভিড-পরীক্ষায় আমেরিকা সব চেয়ে এগিয়ে। দিনে গড়ে ৮ লক্ষ ১০ হাজার পরীক্ষা হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে তুলনা আগেও টেনেছেন ট্রাম্প। সে বার বলেছিলেন, ‘‘করোনা-পরীক্ষায় আমেরিকা প্রথম, ভারত দ্বিতীয়।’’ উল্লেখ্য, আইসিএমআর-এর তথ্য অনুযায়ী ভারতে ১ কোটি ৮১ লক্ষ ৯০ হাজারের সামান্য বেশি টেস্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: এ বার আমেরিকাতেও নিষিদ্ধ হতে চলেছে টিকটক, ঘোষণা ট্রাম্পের
এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, আগামী অক্টোবরে গণ-ভ্যাকসিনেশন শুরু করবে রাশিয়া। সম্প্রতি রাশিয়া দাবি করেছে, প্রথম প্রতিষেধক আনছে তারাই। মাঝ-অগস্টে সুখবর দেওয়া হবে। চিন ও রাশিয়া ভ্যাকসিন আনলে, তা হয়তো ব্যবহার করবে না আমেরিকা। তেমনটাই শোনা যাচ্ছে ট্রাম্পের অন্দরমহলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy