Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Joe Biden

বৈঠক নিয়ে উৎসাহী বরিস, কড়া অবস্থান বাইডেনের

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন-ই নন, শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ফাঁকে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা একাধিক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে।

জি-৭ বৈঠক শুরুর আগে  জো বাইডেন (বাঁ দিকে) এবং বরিস জনসন। সঙ্গে বাইডেন-পত্নী জিল এবং বরিস জনসনের স্ত্রী ক্যারি। বৃহস্পতিবার কর্নওয়ালে।

জি-৭ বৈঠক শুরুর আগে জো বাইডেন (বাঁ দিকে) এবং বরিস জনসন। সঙ্গে বাইডেন-পত্নী জিল এবং বরিস জনসনের স্ত্রী ক্যারি। বৃহস্পতিবার কর্নওয়ালে। ছবি পিটিআই।

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২১ ০৫:৩৯
Share: Save:

আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট এয়ার ফোর্স ওয়ান থেকে নেমে ব্রিটেনের মাটিতে পা দেওয়ার আগেই হাওয়া গরম হয়ে উঠল। সৌজন্যে, ব্রিটেনের ব্রেক্সিটমন্ত্রী ডেভিড ফ্রস্টকে আমেরিকার পাঠানো একটি ডিমার্শে।

জি-৭ বৈঠকে যোগ দিতে ব্রিটেনে এসেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সঙ্গে স্ত্রী জিল। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে এটাই তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। শুধু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন-ই নন, শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ফাঁকে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা একাধিক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে।

বাইডেনের বিশেষ বিমান তখন মাঝ-আকাশে। বৃহস্পতিবার সাতসকালে ব্রিটেনে আমেরিকার শীর্ষ কূটনীতিক ইয়েল ল্যামপার্ট ব্রিটেনের ব্রেক্সিটমন্ত্রী লর্ড ফ্রস্টকে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে ক্রমশ বেড়ে চলা অশান্তি সম্বন্ধে আমেরিকার অবস্থান নিয়ে একটি লিখিত বিবৃতি পড়ে শোনান। এই ধরনের লিখিত বিবৃতিকে বলা হয় ‘ডিমার্শে’। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ল্যামপার্ট আজকের ডিমার্শেটি পাঠ করেছেন খুব ধীরে ধীরে, অত্যন্ত কড়া ভাবে। ডিমার্শের মূল বিষয়বস্তু—সরকারি নির্দেশে ব্রিটিশ সংস্থাগুলির প্রসেস করা মাংস, সসেজ ইত্যাদি নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া, যাতে বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেখানকার বাণিজ্য এবং পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্রিটেন সম্পর্কে এই রাষ্ট্রখণ্ডের অসন্তোষ। পরিস্থিতি না সামলাতে পারলে ব্রিটেন রাষ্ট্রের অন্তর্গত এই নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ব্রিটেন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে বলে মত কূটনীতিকদের।

ব্রিটেন, তথা ইউরোপের ঘরোয়া রাজীনীতির এই বিষয়টি নিয়ে আমেরিকার পক্ষ থেকে এ রকম কড়া অবস্থান ও বিবৃতি জারি করায় ব্রিটিশ কূটনীতিকেরা বিস্মিত, কারণ কোনও মিত্রশক্তিকে সাধারণত ‘ডিমার্শে’ পাঠানো হয় না। অন্য দিকে, আমেরিকার কূটনীতিকেরা বলছেন, এই বিবৃতির মধ্যে দিয়ে ব্রিটেন তথা বরিস জনসনকে স্পষ্ট বার্তা পাঠাতে চাইলেন জো বাইডেন। আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বরিসের সখ্য সুবিদিত ছিল। ব্রেক্সিটের টানাপড়েনেও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়ান আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট। এখন পরিস্থিতি অনেকটা পাল্টেছে। বাইডেনের পক্ষ থেকে তাঁর এই প্রথম বিদেশ সফর তাই নিছক কূটনৈতিক বন্ধুত্ব ঝালিয়ে নেওয়াই নয়, নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়ার জন্যেও। তাতে মিত্ররাষ্ট্র যতই অস্বস্তিতে পড়ুক না কেন!

কূটনীতিকেরা বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গেও আমেরিকার টানাপড়েনের বিষয়টি উঠে আসবে জি-৭ সম্মেলনের ফাঁকে। হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গিয়েছে, বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিকে জেলে পোরা-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে মস্কোকে তাদের অসন্তোষ জানাবে ওয়াশিংটন।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী জনসন অবশ্য বাইডেনের সফর নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী। বৃহস্পতিবার এখানকার এক প্রথম সারির সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘‘ঐতিহাসিক এক বৈঠক হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন রুজ়ভেল্ট ১৯৪১ সালে যেমন বৈঠক করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে আমার বৈঠক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তখন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আমাদের দু’টি রাষ্ট্র জোট বেঁধেছিল, আর এখন অতিমারির বিরুদ্ধে আমাদের হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে।’’ জি-৭-এ দু’দেশের মধ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুক্ত বাণিজ্যনীতি ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত রয়েছে জনসনের নিবন্ধে।

ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের জনপ্রিয় পর্যটন-শহর কর্নওয়ালে এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। আজ প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে এখানকার একটি কাসলে বৈঠকে বসার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী জনসনের। খারাপ আবহাওয়ার জন্য সমুদ্রঘেরা সেই প্রাসাদ থেকে বৈঠক সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Boris Johnson Joe Biden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy